ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সিলগালার পরও থেমে নেই ভারগন টোব্যাকোর অবৈধ উৎপাদন

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

সিলগালার পরও থেমে নেই ভারগন টোব্যাকোর অবৈধ উৎপাদন

অনলাইন রিপোর্টার ॥ অবৈধ সিগারেট উৎপাদনের দায়ে কারখানাকে বারবার সিলগালা করা হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না কুষ্টিয়ার ভারগন টোব্যাকোর কার্যক্রম। ওপরের মহলের যোগসাজশে কারখানা সিলগালার পরও ভারগন টোব্যাকো চুপিসারে চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের অবৈধ সিগারেট উৎপাদন। অবৈধ সিগারেট উৎপাদনের দায়ে ভারগন টোব্যাকো কারখানায় আবারও অভিযান চালিয়েছে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এসএসআই এবং র‌্যাব ১২’র একটি দল। এসময় নকল সিগারেট এবং ব্যান্ডরোল তৈরীর অভিযোগে কোম্পানীর ম্যানেজার কাজী রাসেল আজাদ রিপনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সম্প্রতি র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে শাহরতলীর কদমতলায় অবস্থিত এই কম্পানিতে প্রায় ৪ ঘন্টা ব্যাপী এই অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় কারখানা থেকে ৩,৫০,০০০ শলাকা অবৈধ সিগারেট, ১,৯৫,০০০ জাল ট্যাক্স স্ট্যাম্প ও ১,০৭,০০০ জাল ব্যান্ডরোল জব্দ করে। অভিযানে প্রতিষ্টানের মালিক রাইছুল হককের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ২৫’র ‘ক’ ধারায় মামলা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দীর্ঘদিন যাবত আইন লংঙ্ঘন করে সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহৃত সরকারী রাজস্ব ব্যান্ডরোল জালিয়াতি করে আসছিলো ভারগন টোব্যাকো। পুর্বানি, সিজার ও ভারগন নামে নিজেদের তিনটি ব্র্যান্ডসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির নকল ব্র্যান্ডের সিগারেট উৎপাদন করে আসছিলো কোম্পানিটি। ফলে প্রতিবছর সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, “ভারগন টোব্যাকো দীর্ঘদিন যাবৎ নকল ব্যান্ডরোল দিয়ে সিগারেট তৈরী করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করছে। এতে করে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে।” ভারগন টোব্যাকোর বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, অবৈধ ভারগন টোব্যাকো শুধু নিজেদের ব্যান্ড ভারগন নাম দিয়ে দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট অবৈধভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে। এলাকাবাসী আরো জানায়, ভারগন টোব্যাকোর মালিক ক্ষমতাধর হওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ ভুয়া নিম্নমানের সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারগন টোব্যাকো নিজেদের ব্যান্ড ছাড়াও বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেটের ব্যান্ডরোল নকল করে অবৈধভাবে সিগারেট উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলাতে বাজারজাত করে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে যশোর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ ভারগন টোবাকো কোম্পানির ৩টি গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের জাল ব্যান্ডরোল, অবৈধভাবে উৎপাদনকৃত সিগারেট, সিগারেট তৈরীর কাঁচামাল ও অবৈধভাবে আমদানিকৃত সিগারেট উৎপাদনে সহায়ক যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৩ দফায় অভিযান চালায় ভারগন টোব্যাকোর কারখানা ও পৃথক ৪টি গুদামে। এই সময় নকল ব্যান্ডরোল, সিগারেট, সিগারেট তৈরী মেশিন, কাঁচামালসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক উপকরণ-সরঞ্জাম (আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮কোটি টাকা) উদ্ধার ও জব্দ করেন কুষ্টিয়া কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ। এঘটনায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধায় বিভাগীয় কর্মকর্তা মো: আব্দুল আলীম কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী মামলা করেন। এর দুইদিন পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারগন টোব্যাকো কারখানাকে সিলগালা করে দেওয়া হয়।
×