ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাদারীপুরের শিবচরে ভাঙ্গনের মুখে ইউপি কমপ্লেক্স ভবন

প্রকাশিত: ১২:৩১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

মাদারীপুরের শিবচরে ভাঙ্গনের মুখে ইউপি কমপ্লেক্স ভবন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ বন্যার পানি কমতে থাকায় ফের পদ্মা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স। এখন যে কোনো মূহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায়। নদীর আগ্রাসী রূপ ভবনটিকে ঘিরে ফেলেছে। সোমবার বিকেলের দিকের ভাঙ্গন ভবনটিকে ছুঁয়ে ফেলেছে। পিলার নদীর মধ্যে চলে গেছে। দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়েছে সকল মালামাল। শুধু বন্দরখোলা ইউপি কমপ্লেক্সই নয়। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাজিরসূরা বাজার ও হাটের একাংশ। কয়েক বছর আগেও ভবনটি নদী থেকে প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে ছিল। নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এখন বন্দরখোলার মানচিত্র বদলে গেছে। প্রতি বছর পদ্মা ও আড়িয়ালখাঁর ভাঙ্গনে শিবচরে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পদ্মার ভাঙ্গনরোধে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর এমপির নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিগত বছরগুলো ধরেই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু জিও ব্যাগ ফেলে সম্পদ রক্ষার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিচ্ছে পদ্মা নদী। এ বছর বন্যার পানি দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মার ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চলতি বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে শিবচরের চরাঞ্চলের ৪টি বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, ব্রিজ, কালভার্ড, রাস্তাঘাট, শত শত বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। চলতি বন্যায় চরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ তলা ভবন, চরজানাজাত ইউনিয়নের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক স্থাপনা ও ইউনিয়ন পরিষদ, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭ নং কাঁঠালবাড়ি সরকারী বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের ৩তলা ভবনটি বিলীন হয়। সোমবার সন্ধায় বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন বেপারী বলেন, “আমাদের ইউনিয়ন কমপ্লেক্স পদ্মায় বিলীন হওয়ার আগে বন্দরখোলার একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজিরসূরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনও ভাঙ্গনের মুখে। এখন যে কোনো সময় নদীতে তলিয়ে যাবে। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাজিরসূরা হাট-বাজার হুমকির মুখে রয়েছে। হাজার হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেও ভাঙনরোধ করা যাচ্ছে না।” আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, “ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি এখনো ভেঙ্গে পড়েনি। তবে যে কোনো সময় ভবনটি ভেঙ্গে যাবে। এখন আর এটাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। ওখানে বর্তমানে আমোদের কোনো কার্যক্রম নেই।” উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান বলেন, “দু‘টি উচ্চ বিদ্যালয়, দু‘টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা ভেঙ্গে গেছে। শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা নেই। পানি শুকালেই আমরা বিকল্প ব্যবস্থায় ঘর নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারবো। বন্দরখোলা ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙ্গনরোধে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর এমপির নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘদিন যাবৎ জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এ বছর বন্যার পানি বেশি বেড়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন থামছেই না।”
×