ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথ সীমিত চালু ॥ রো রো ও ডাম্প ফেরি বন্ধ

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথ সীমিত চালু ॥ রো রো ও ডাম্প ফেরি বন্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১২ সেপ্টেম্বর ॥ শনিবার সকাল থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে সীমিত আকারে ফেরি চালু হয়েছে। এদিকে শুক্রবার রাতে শিমুলিয়ার ৩ নম্বর ফেরি ঘাটের অদূরে কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ৩ নম্বর ঘাট (মাদার ঘাট) ভাঙ্গন ঝুঁকিতে পড়েছে। শনিবার সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ক্যামেলিয়া ও কাকলী শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছাতে পারলেও নাব্য সঙ্কটের কারণে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি কুমিল্লা ও ফেরি কিশোরী নদী পার হতে না পেরে পুনরায় শিমুলিয়া ঘাটে ফিরে আসে। এরপর কিছু সময় ফেরি বন্ধ রেখে ড্রেজিং করে চ্যানেলের মুখ খোলা হয়। সকাল ১০টার দিকে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে হাল্কা ও মাঝারি ধরনের ৫টি ফেরি সীমিত আকারে চলছে। রো রো এবং ডাম্প ফেরি বন্ধ রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আটদিন বন্ধ থাকার পর ৯ দিনের মাথায় শুক্রবার বিকেলে পদ্মা সেতু ২৫ ও ২৬নং পিলারের কাছে ড্রেজিং সম্পন্ন করে সেতু কর্তৃৃপক্ষের চায়না ড্রেজার। এর আগে মূল চ্যানেল লৌহজং টার্নিং চ্যানেল ড্রেজিং করে প্রস্তুত করে বিআইডব্লিউটিএ। এরপর বিকেল চারটার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, কে-টাইপ ফেরি ক্যামেলিয়া ও কুমিল্লা যানবাহন বোঝাই করে কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। লৌহজং টার্নিং এর মুখ থেকে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগ টাগ বোট ও ট্রলারে চড়ে পানি মেপে মেপে প্রথমে ফেরি ক্যামেলিয়াকে পার করে। কিন্তু রো রো ফেরিটি লৌহজং টার্নিং মুখে এসে মার্কিং এর পাশে ডুবোচরে আটকে যায়। এ সময় সরু চ্যানেল হওয়ায় কে-টাইপ ফেরি কুমিল্লা মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে রাখে। পরে দুটি টাগ বোট আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে রো রো ফেরিটি উদ্ধার করলে দুটি ফেরিই কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পৌঁছায়। তবে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় পদ্মা সেতুর নিরাপত্তার স্বার্থে ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়। শনিবার সকালে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ফেরি ক্যামেলিয়া ও কাকলী শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছাতে পারলেও শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি কুমিল্লা ও ফেরি কিশোরী নদী পার হতে না পেরে শিমুলিয়া ঘাটে ফিরে আসে। এরপর ফেরি বন্ধ রেখে ড্রেজিং করে চ্যানেলের মুখ খোলা হয়। সকাল ১০টার দিকে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়। এ রুটে নাব্য পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে এ পর্যন্ত ছয় লাখ ৭০ হাজার ঘনমিটার পলি অপসারণ করা হয়েছে। ৩৩ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত ১৩টি ড্রেজার এ রুটে অবস্থান করছে। উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর ২৫ ও ২৬নং পিলারের কাছে তিনটি ফেরি আটকে গেলে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার রাতে ৩ নম্বর ফেরি ঘাটের পাশে কিছু এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যার কারণে ৩ নম্বর ফেরি ঘাট ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এখন ঘাটে দুই শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি (শিমুলিয়া) মেরিন অফিসার আহমেদ আলী বলেন, সীমিত আকারে হাল্কা ও মাঝারি ধরনের ৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঘাটে কোন সমস্যা নেই। তবে রো রো এবং ডাম্প ফেরি বন্ধ রয়েছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দুর্ভোগ কিছুটা কমেছে ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা মানিকগঞ্জ থেকে জানান, শুক্রবার সকাল থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের মূল চ্যানেলে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় এবং সীমিত আকারে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি পারাপারে দুর্ভোগ কিছুটা কমে এসেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দুই একদিনের মধ্যে ফেরি পারাপার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত উভয় ঘাটে পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পারের অপেক্ষায় আটকে ছিল। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম (মেরিন) আব্দুস সাত্তার জানান, ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে নাব্য সঙ্কট ও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকায় এই নৌরুটের অবস্থা বেশকিছু দিন ধরে খারাপ চলছিল। ১২ দিন ড্রেজিং করার ফলে বৃহস্পতিবার রাতেই মূল চ্যানেলের নাব্য ফিরে এলে শুক্রবার সকাল থেকে ফেরিগুলো মূল চ্যানেল দিয়ে চলাচল করছে। অপরদিকে শনিবার থেকে সীমিত আকারে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় এই ঘাটের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এই ঘাট দিয়ে পারাপার স্বাবাভিক থাকবে বলে আশা করি।
×