ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ॥ মাথা ফাটল একজনের

গুলশানে বিএনপির দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ২২:৩০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

গুলশানে বিএনপির দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে দলের দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়াসহ ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় সংসদের শূন্য চার আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাতকার নেয়ার সময় কার্যালয়ের বাইরে যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীর ও বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। করোনা পরিস্থিতিতে অভিজাত কূটনৈতিক এলাকায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুইপক্ষের সংঘর্ষে উভয় প্রার্থীর পক্ষের কয়েক নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে একজনের মাথা ফেটে যায়। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন ও কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনের মাথা ফেটে যায়। উল্লেখ্য, ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে শুক্রবার নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দেন দলের বাহাউদ্দিন সাদী, এম কফিল উদ্দিন, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসমাইল হোসেন, মোস্তফা জামান সেগুন ও মোঃ আখতার হোসেন। একইদিনে ঢাকা-৫, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্যও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। পূর্বনির্ধারিত সময় বিকেল পাঁচটায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় সংসদের শূন্য হওয়া চারটি আসনের উপনির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের সাক্ষাতকার শুরু হয়। মনোনয়ন বোর্ড আগেরদিন মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে সাক্ষাতকার নেয়া শুরু করে। এতে বিএনপি মহাসচিবসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া লন্ডন থেকে স্কাইপিতে মনোনয়ন বোর্ডে সংযুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে প্রার্থীদের সাক্ষাতকার শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দীনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রথমে উভয় প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান করতালি দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা দখলে নিতে চাইলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এর আগে শুক্রবার নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে দলের হাইকমান্ডের বরাবরে লিখিত আবেদন করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি সমর্র্থিত আট কাউন্সিলর প্রার্থী। আবেদনটি তারা বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে হস্তান্তর করেন। তারা হলেন- ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, ৫০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী দেওয়ান মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন, ৪৪নং ওয়ার্ডের মোঃ আনোয়ার হোসেন আয়নাল, ৪৭নং ওয়ার্ডের মোতালেব হোসেন রতন, ৪৬নং ওয়ার্ডের আরিফুর রহমান আরিফ, ৪৩নং ওয়ার্ডের মোঃ আক্তার হোসেন এবং সংরক্ষিত ৫২, ৫৩ ও ৫৪ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সোহেলী পারভীন শিখা ও সংরক্ষিত ৪৯, ৫০ ও ৫১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী লুৎফা খানম চৌধুরী। আগেরদিন ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে দলের হাইকমান্ডের কাছে আট কাউন্সিলর প্রার্থীর লিখিত আবেদনের পরই শুরু হয় দুইপক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। শনিবার বিকেলে দুই প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর ও কফিল উদ্দিন নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শোডাউন করে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে আসেন মনোনয়ন বোর্ডের কাছে সাক্ষাতকার দিতে। নিজ নিজ পক্ষের শক্তি জানান দিতে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকরাই স্লোগান দিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করে। এরপরই শুরু হয় দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। এসএম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৮ কাউন্সিলর প্রার্থীর আবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে এসএম জাহাঙ্গীর বিএনপির রাজনীতিতে গ্রুপিং কোন্দল সৃষ্টি করছেন। এছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সমন্বয় নেই। তবে এসএম জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা জানিয়েছেন, কফিল উদ্দিনের পক্ষ হয়ে আট কাউন্সিলর প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। এসএম জাহাঙ্গীরের পরিবর্তে কফিল উদ্দিন যাতে মনোনয়ন পান সে জন্যই এই মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন ৮ কাউন্সিলর প্রার্থী।
×