ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ রেহানা ৬৫ বছরে পা রাখছেন আজ

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

শেখ রেহানা ৬৫ বছরে পা রাখছেন আজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রথম হাঁটতে শেখার দিনে তার দিকে যে আঙ্গুলটি এগিয়ে দেয়া হয়েছিল সেটি তার পিতার, তবে একই সঙ্গে তা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। যিনি ছিলেন এই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। প্রথমে সেই বাড়িয়ে দেয়া হাত ধরে, পরে জাতির পিতার দেখিয়ে দেয়া পথ ধরে তিনি হাঁটছেন। আজও হাঁটছেন বীরদর্পে। সক্রিয় রাজনীতির সামনের সারিতে না এলেও মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলায় অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। হাঁটতে হাঁটতে পার করে দিয়েছেন ৬৪টি বছর। তিনি আর কেউ নন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে সবার প্রিয় ‘ছোট আপা’ শেখ রেহানা। ক্যালেন্ডারের পাতায় তিনি আজ পা রাখছেন ৬৫ বছরে। শুভ জন্মদিন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ রেহানার। বঙ্গবন্ধু-কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার আজ ৬৫তম জন্মদিন। ১৯৫৫ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। সে সময় শেখ হাসিনার স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণু বিজ্ঞানী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানির কার্লসরুইয়ে বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ রেহানাও। সেখান থেকে ভারতে চলে যান একরাতে বাবা-মা, ভাইসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া দু’বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পরে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা পরিবার নিয়ে লন্ডনে চলে যান। আর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও কখনও সক্রিয় রাজনীতির সামনের সারিতে আসেননি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা। নীরবে নিভৃতে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সংগ্রাম করে যাচ্ছেন জীবনের প্রতিটি সংগ্রামে। বড়বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সবসময় অনুপ্রেরণা প্রদানের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। সক্রিয় রাজনীতিতে সামনের সারিতে না এলেও আওয়ামী লীগের যেকোন দুঃসময়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন শেখ রেহানা। ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেফতার করা হয়, এরপর দলে কিছুটা বিভক্তির সৃষ্টি হয়। সে সময়ে পর্দার আড়াল থেকেই দলের ঐক্য বজায় রাখতে লন্ডন থেকেই ব্যাপক ভূমিকা রাখেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। ওই সময়ে দলের নেতাকর্মীদের শুধু সাহসই যোগাননি, দলকে আগলে রাখতেও ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হলেও অত্যন্ত সাদামাটা জীবন-যাপনে অভ্যস্ত শেখ রেহানা। লন্ডনে সাধাসিধে ছোট একটি আড়ম্বরহীন ফ্ল্যাটে ছিল তার বসবাস। চলাফেরা করতেন বাসে কিংবা টিউবে-রেলে। ধানম-িতে তার নামে বরাদ্দ বাড়িটিও দিয়েছেন দেশের কাজে। বঙ্গবন্ধুর বাড়িটিও স্মৃতি জাদুঘর করে দেশের জনগণের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া জাতির পিতার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, সবার কাছে ‘ছোট আপা’ বলেই অধিক পরিচিত। স্বামী অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিকী ও শেখ রেহানা দম্পতির তিন ছেলেমেয়ে। তাদের বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত। ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক লন্ডনে কন্ট্রোল রিস্কস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে গ্লোবাল রিস্ক এ্যানালাইসিস সম্পাদক। মানবিক হৃদয়ের অধিকারী শেখ রেহানা। এই মানবিকতাই তাকে মানুষের ভালবাসায় অভিসিক্ত করেছে। জনহিতৈষী কাজে বড়বোন শেখ হাসিনার পাশে সব সময়ই ভূমিকা রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর এই ছোট মেয়ে। শুভানুধ্যায়ীরা মনে করেন, মা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পর্দার অন্তরালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন সাহস ও অনুপ্রেরণা। বড়বোন শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব নেতৃত্বের অংশীদার, শান্তির আলোকবর্তিকা হাতে আজ বিশ্বময়। সামনের সারিতে না থাকলেও পর্দার আড়াল থেকেই মা বঙ্গমাতার মতোই বড়বোন শেখ হাসিনাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন ছোটবোন শেখ রেহানা।
×