ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরের ইলিশে চাঁদপুর মৎস্য আড়ত সয়লাব

প্রকাশিত: ২০:০২, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

সাগরের ইলিশে চাঁদপুর মৎস্য আড়ত সয়লাব

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর, ৬ সেপ্টেম্বর ॥ ‘ইলিশের বাড়ি’ খ্যাত চাঁদপুর জেলায় স্থানীয় পদ্মা মেঘনা নদীতে ইলিশ বলতে কিশোর ইলিশ ধরা পড়লেও বড় সাইজের রুপালি ইলিশের দেখা নেই। তবে গভীর বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সেই ইলিশে সয়লাব চাঁদপুরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়ত। রবিবার সকাল ৯টায় আড়তে গিয়ে দেখা যায় ঘাটজুড়ে ইলিশ আর ইলিশ। আড়তদার, শ্রমিক, বরফ ব্যবসায়ী সকলেই এখন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে যেসব ইলিশ আমদানি হচ্ছে সেব সব ইলিশ রাত ৯টার মধ্যে বিক্রি হয়ে আড়তগুলো খালি হয়ে যাচ্ছে। ট্রাক, ট্রেন ও বাসে করে রফতানি হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। শনিবার ও রবিবার এ দুই দিনে ১৮ থেকে ২০টি ইলিশ ভর্তি ফিশিং বোট আসায় ইলিশের এই ছড়াছড়ি বলে জানিয়েছেন মাছ ঘাটের ব্যবসায়ীরা। ফিশিং বোটের পাশাপাশি নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর থেকে ট্রাক ও পিকআপ বোঝাই হয়ে আনা হয় প্রচুর ইলিশ। সাগরে ইলিশের ব্যাপক আমদানিতে ইলিশের দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত জানান, এসব ইলিশ সাগরের কাছাকাছি নোয়াখালীর হাতিয়া, বরগুনা ও ভোলা জেলার। গত দুইদিন ইলিশ আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে এখন ৪শ’ থেকে ৫শ’ গ্রামের প্রতি কেজি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭ থেকে থেকে ৮শ’ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা কেজি দরে। একদম বড় সাইজের ইলিশ অর্থাৎ এক কেজি থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার থেকে ১৮শ’ টাকা কেজি। চাঁদপুর জেলে সমিতি নেতা তসলিম বেপারি বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম চলে যাচ্ছে। কিন্তু চাঁদপুরে পদ্মা- মেঘনায় রুপালি ইলিশের দেখা নেই। জেলার নিবন্ধিত ৫০ হাজারের অধিক জেলে পরিবার অনেকটা হতাশ। তবে কিছু জেলে উপায় না পেয়ে সাগরে গিয়ে ইলিশ আহরণ করছেন। সাগরে গিয়ে ইলিশ আহরণে অনেক সময় জেলেরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে পড়েন। সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকার একাধিক জেলে জানান, চলতি বছরে সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। গত ২৩ জুলাই এ সময়সীমা শেষ হয়েছে। করোনার কারণে ওই সময়টাতে জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সাগরে নামলেও জেলেদের জালে তেমন ইলিশ ধরা পড়ছিল না। তবে এক সপ্তাহ ধরে সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকী বলেন, জাটকা সংরক্ষণের সময় চাঁদপুরের অধিকাংশ জেলে বেপরোয়া হয়ে জাটকা নিধন করে। ইলিশ না পাওয়ার এটিও একটি কারণ। এছাড়াও পাথরঘাটা, বড়গুনা ও ভোলার শেষ প্রান্তে জেলেরা নদীতে ভরা মৌসুমে নদীর এপাড় থেকে ওপাড় বড় বড় দৈর্ঘ্যরে জাল পেতে রাখে। এতেও উজানে মাছ আসার একটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
×