ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জোয়ারে ভেঙ্গে গেছে রাস্তা

মোরেলগঞ্জে হোগলাবুনিয়ায় ৬ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে

প্রকাশিত: ২১:১০, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

মোরেলগঞ্জে হোগলাবুনিয়ায় ৬ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোরেলগঞ্জে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নে অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে ৪ কিলোমিটার রাস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়া ২০ কিমি কাঁচা-পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে ৬ গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়নের বদনিভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা গ্রাম পানগুছি নদীর তীরবর্তী। যোগাযোগ ব্যবস্থা চলাচলের জন্য রয়েছে সলিং করা বড় ২টি রাস্তা। কাঁচারাস্তা রয়েছে ছোট-বড় ৮টি। গত ৫ দিনের অতিবৃষ্টি এবং অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে সানকিভাঙ্গা, সিএন্ডবি হয়ে চৌকিদারহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সলিং রাস্তাটি কমপক্ষে ৭ টি স্থান ভেঙ্গে গেছে। সেকেন্দার শেখের বাড়ি থেকে দারুল কোরান সিনিয়র মাদ্রাসা পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি ধসে নদীতে বিলীন হয়েছে। অনুরূপ বদনিভাঙ্গা, ইটভাটা হয়ে পথেরহাট বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের সলিং রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে বিভিন্ন স্থান থেকে। ৪ গ্রামের ১০ হাজার মানুষের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গোটা ইউনিয়ন। এ জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো থেকে প্রতিনিয়ত চৌকিদারহাট, পথেরহাট, ছোট বাদুরাসহ পার্শ্ববতী ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া, কলারোন, চ-িপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ। বর্তমানে এ রাস্তায় আসতে না পারলেও নদীপথে ট্রলারযোগে আসতে হচ্ছে উপজেলা শহরে। গ্রামগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে দাখিল মাদ্রাসা ২টি, আলিম মাদ্রাসা ১, হাফিজিয়া মাদ্রাসা ২, এবতেদায়ি মাদ্রাসা ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪। এ ছাড়া জামে মসজিদ রয়েছে ১৪টি। বদনিভাঙ্গা গ্রামের ভুক্তভোগী বাসিন্দা কৃষক জলিল ফরাজি, ভ্যান শ্রমিক শফিকুল ইসলাম, মৎস্যজীবী মোকলেসুর রহমান, আব্দুস সোমেদ শেখ ও ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দস শেখ বলেন, আমরা গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, কোথাও চলাচলের রাস্তা নেই, কোমরপানি ভেঙ্গে যেতে হচ্ছে হাট-বাজারে। নিজ উদ্যোগে মাটি কেটে রাস্তায় দিলেও জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে পড়ছে। রাস্তাগুলো পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি জানান তারা। ইউপি সদস্য মতিয়ার হাওলাদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ও সরকারী বরাদ্দ থেকে একাধিকবার রাস্তাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে বারবার ভেঙ্গে যাচ্ছে রাস্তাগুলো। এলাকাবাসীর ভোগান্তি লাঘবের জন্য জরুরীভাবে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আকরামুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি জোয়ারের পানিতে কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙ্গে ধসে পড়েছে নদীগর্ভে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। গত বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ একটি প্রতিনিধি দল নদীর তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বেড়িবাঁধের বিষয় কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পানগুছি নদী তীরবর্তী সোলমবাড়িয়া স্লুইজ গেট থেকে সীমান্তবর্তী মরা বলেশ্বর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার টেকসই স্থায়ী বেড়িবাঁধের জোর দাবি করেন তিনি।
×