ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী

পত্রিকার অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে

প্রকাশিত: ২২:৪১, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০

পত্রিকার অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মূলধারার সংবাদপত্রগুলোর অনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে এবং সংবাদপত্রের সরকারী বকেয়া বিল পরিশোধে আবারও তাগাদাপত্র দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখেছি যখনই দেশে কোন সঙ্কট দেখা দেয় তখন গুজব রটানোর চেষ্টা করা হয়। মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে মূলধারার গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বড় কথা হচ্ছে, করোনাকালে গণমাধ্যম-সংবাদপত্র এবং সরকার একযোগে কাজ করেছে। এর ফলে এ সময় গুজব রটানোর চেষ্টা করা হলেও সেটি হালে পানি পায়নি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ। বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত বৈঠক হয়। আমরা সবসময় সংবাদপত্রের বিশেষ করে মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। আজ সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোকে সহসা রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে। আমরাও মনে করি যেসব পত্র-পত্রিকা বের হয় বিশেষ করে প্রথম শ্রেণীর পত্র-পত্রিকার অনলাইন ভার্সন রেজিস্ট্রেশন দেয়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি তদন্তের কিছু নেই। কারণ এগুলো তদন্ত করেই পত্র-পত্রিকাগুলো বের হয়। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সনের রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করব। মূলত বৈঠকে এটিই আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকার বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে, একেকটি পত্রিকার অনেক বিল। কোন পত্রিকার ১০ কোটি, ১৫ কোটি, ২০ কোটি টাকার, একটি পত্রিকার ক্ষেত্রে এরকম। এরকম করে কয়েকশ’ কোটি টাকার বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দফতরে আটকে আছে। সে বিলগুলো যাতে বিভিন্ন দফতর ছাড় করে। আমরা আলোচনা করেছি তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দফতর-মন্ত্রণালয়ে একটি তাগাদাপত্র দেব। কারণ, ইতোপূর্বে কেবিনেট ডিভিশন থেকে সব মন্ত্রণালয় ও দফতরে পত্র-পত্রিকার বিল ছাড় করার জন্য তাগাদাপত্র দেয়া হয়ছিল। সেটির আলোকে আমরাও একটি তাগাদাপত্র দিয়েছিলাম। সেটা দেয়ার পরে কিছু বিল ছাড়ও হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যে পরিমাণ বিল বকেয়া আছে আর যে পরিমাণ ছাড় হয়েছে সেটি খুবই নগণ্য। সেজন্য আমরা আরও একটি তাগাদাপত্র দেব। সবার সঙ্গে আলোচনাক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বকেয়া বিলগুলো কতদিনের মধ্যে ছাড় হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলতে পারে। তবে আমি মনে করি এ বিলগুলো দ্রুত দিয়ে দেয়া প্রয়োজন। এগুলো দিতে হবে। যেহেতু দিতে হবে, এখন করোনাকালে পত্র-পত্রিকা নানা সঙ্কটে আছে। সুতরাং এখন দিলে সেটি কাজে বেশি লাগবে। সুতরাং দিয়ে দেয়া প্রয়োজন। বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর সময় মেইন স্ট্রিমের সব মিডিয়া অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনাকালে সব ধরনের মিডিয়ারই নানা সঙ্কট ছিল। তবে সংবাদপত্রের সঙ্কট অনেকের চেয়ে বেশি ছিল। সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও সংবাদপত্রগুলো প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি সারাদেশে বিলিও হয়েছে। বৈঠকে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, মূলত অনলাইন মিডিয়াটা নিয়ে সঙ্কটটুকু ছিল। সে সমস্যাটা কীভাবে সমাধান করবে, নতুন আইনের পর সেটা কত দ্রুত করা যায় সে বিষয় নিয়ে আমাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করার পর তথ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন, খুব দ্রুত এ সঙ্কট নিরসন হবে। মূলধারার পত্র-পত্রিকাগুলোর অনলাইন দ্রুত নিবন্ধন দিয়ে দেয়া হবে। কারণ আমরা প্রথমত একটা আইনের মধ্য দিয়ে অনুমোদন নিয়ে থাকি সংবাদপত্রের। তবে তদন্তের নামে আবার দীর্ঘ সময় যাতে অতিক্রম করতে না হয় সে কারণে আমাদের প্রস্তাবনা ছিল দ্রুততম সময়ে করার জন্য। মন্ত্রী সেটা আশ্বস্ত করেছেন। দ্রুততম সময়ে আমাদের অনলাইনের অনুমোদন দিয়ে দেবেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্র বা মিডিয়া সারা পৃথিবীতে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। বাংলাদেশের সংবাদপত্র থেকে শুরু করে প্রতিটি মিডিয়া একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছে। সেই জায়গাগুলো আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (তথ্যমন্ত্রী) পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন। সেই জায়গা থেকে তিনি বললেন, যেখানে যে সঙ্কট থাকে সেটা সমাধানে তিনি সচেষ্ট থাকবেন এবং আমাদের সহায়তা করবেন। আগামীতে মিডিয়ার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতার আঙ্গিকে বাংলাদেশকেও একই রকমভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকা বিলগুলো দ্রুত ছাড় করার ব্যবস্থা নেবেন।
×