ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৫০ কোটি টাকা

এসডিজি অর্জনে বিটিসিএলের মহাপরিকল্পনা

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০

এসডিজি অর্জনে বিটিসিএলের মহাপরিকল্পনা

ফিরোজ মান্না ॥ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। মহাপরিকল্পনায় বিটিসিএল আটটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৫০ কোটি টাকা। ২০২০ সাল থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) টেলি ডেনসিটি ও টেলি এক্সেস ফ্যাসিলিটি সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশে নির্ভরযোগ্য আধুনিক টেলিযোগাযোগ সার্ভিস গঠনে ২ হাজার ৫৭৩ দশমিক ৪০ কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন বিটিসিএলের এমডি ড. মোঃ রফিকুল মতিন। ড. মতিন জনকণ্ঠকে বলেন, বিটিসিএলকে টিকে থাকতে হলে হাতে নেয়া মহাপরিকল্পনার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষে বিটিসিএল টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। ইতোমধ্যে আমরা এসডিজি পুরণে খসড়া কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। প্রস্তাবিত প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন করতে ২০২০ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় ধরা হয়েছে। প্রকল্পগুলো- ‘ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ইন্টারনেট সেবা’ পৌঁছে দেয়া। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫ শ’ কোটি টাকা। পূর্বাচলকে গিগাবিট সিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সহায়ক টেলিযোগাযোগ ও আইটি অবকাঠামো স্থাপন। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। বাস্তবায়নকাল ২০৩০ সালের মধ্যে। বেজার আওতায় নির্মাণাধীন-নির্মিতব্য ইকোনমিক জোনগুলোতে টেলিযোগাযোগ ও উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদান। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২ শ’ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৩ সালে। বিটিসিএলসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে মতিঝিল, ঢাকাতে বিটিসিএলের নিজস্ব জমিতে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ শ’ কোটি টাকা। সব জেলা-উপজেলায় জিপন সেবা বিস্তার এবং ট্রিপল প্লে সার্ভিস চালু করা। ৬ শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। গাজীপুরে টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজকে টেলিযোগাযোগ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলা। ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে ২০৩০ সালের আগেই। আরও দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ। এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এক হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য মোট তিনটি প্রকল্প স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। আবাসনের জন্য নেয়া তিন প্রকল্পে ব্যয় হবে এক হাজার ৯ শ’ কোটি টাকা। বিটিসিএলের এমডি রফিকুল মতিন বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে বিটিসিএল আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। এক সময় বিটিসিএল লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিটিসিএলের উন্নয়ন না ঘটায় এটি দিন দিন লোকসানের দিকে চলে গেছে। এখান থেকে প্রতিষ্ঠানকে লাভের দিকে নিতে বিটিসিএল যে কর্মপরিকল্পনা দিয়েছে তা যুগের সঙ্গে মিল রেখেই দেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনাটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কর্মপরিকল্পনায় কিছুটা এদিকসেদিক হতে পারে। তবে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। কারণ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, বিটিসিএলের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে সরকার কর্মপরিকল্পনার অনুমোদন দেবে।
×