ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশের প্রথম পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ৩০ আগস্ট ২০২০

দেশের প্রথম পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেশে প্রথমবারের মতো পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাদের দীর্ঘমেয়াদী ফলোআপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক চালু করেছে। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া শনিবার সকাল নয়টায় বহির্বিভাগ-১ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ক্লিনিক উদ্বোধন করেন। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুইটা পর্যন্ত ইন্টার্নাল মেডিসিন বহির্বিভাগে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ফলোআপ সেবা দেয়া হবে। এই ক্লিনিকটি প্রাইমারি কেয়ার সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। এখান থেকে যাদের অতি বিশেষায়িত সেবা যেমন-পালমোনলজি, কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, নিউরোলজি, সাইকিয়াট্রি, ফিজিক্যাল মেডিসিনসহ অন্য বিভাগের পরামর্শের প্রয়োজন হবে, তাদের সংশ্লিষ্ট বহির্বিভাগে রেফার করা হবে। উদ্বোধনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জাহিদ হোসেন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডাঃ এ বিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ সোহেল মাহমুদ আরাফাত, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডাঃ মোঃ জুলফিকার আহমেদ আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, আগস্ট শোকের মাস। এই শোককে কর্মস্পৃহা, একাগ্রতা, সেবার মানসিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কোভিড-১৯ অতিমারী মোকাবেলা করে যাচ্ছে। গত ৮ মার্চ দেশে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর থেকে ফিভার ক্লিনিক, টেলিমেডিসিন সেবা, আউটডোর সেবা, পিসিআর ল্যাব সার্ভিস, পৃথক কোভিড-১৯ হাসপাতাল স্থাপন অর্থাৎ করোনা সেন্টার চালু ও বহুবিধ গবেষণার মাধ্যমে বিএসএমএমইউ এই দুর্যোগকালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বাংলাদেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ আগস্ট থেকে বিএসএমএমইউ’তে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ ফলোআপ ক্লিনিক চালু করা হলো। উপাচার্য বলেন, কোভিড-১৯ মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রমণ করে এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। এ কারণে মাঝারি ও তীব্র কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদী ফলোআপের প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য, চীন, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই পোস্ট কোভিড-১৯ ফলোআপ সেবা চালু হয়েছে। ফলোআপের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণ ও প্রতিক্রিয়াগুলো চিহ্নিত করতে পারলে বিপুলসংখ্যক রোগীকে দীর্ঘমেয়াদী রোগের স্থায়িত্ব এবং মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের প্রায় পাঁচবছর ফলোআপ করার প্রয়োজন হবে। যার জন্য বৃহৎ স্থান সঙ্কুলানের প্রয়োজন। আপাতত মেডিসিন বহির্বিভাগে চালু হলেও পরবর্তীতে তা আরও বৃহৎ পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তঃ বা বহির্বিভাগে কোথাও স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হবে। এই ফলোআপের অংশ হিসেবে রোগীদের যে ল্যাবরেটরি ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে তা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভব। এই ক্লিনিকটি পরিচালনায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ইমপেরিয়াল কলেজ, লন্ডন কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে। তাছাড়া এই ক্লিনিকটি কোভিড-১৯ গ্লোবাল ফলোআপ কনসোর্টিয়ামের একটি অংশ। এই ফলোআপ ক্লিনিকটি সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।-বিজ্ঞপ্তি
×