ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজার নিয়ন্ত্রণ এখন পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের হাতে

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৩০ আগস্ট ২০২০

বাজার নিয়ন্ত্রণ এখন পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের হাতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাকালে রাজধানীসহ দেশব্যাপী নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের উর্ধমুখী দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। এটি সাধারণ মানুষের ওপর ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ বলছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব বলেছে, প্রশাসনের দায়সারা তদারকির কারণে ব্যবসায়ীরা বারবার বিনা কারণে খাদ্য-পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে জনগণের পকেট কাটছে। সরকারের পক্ষ থেকে বাজার তদারকি ও চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহের কথা বলা হলেও বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে। ক্যাব নেতারা বলেন, ইতোপূর্বে চাল, ডাল, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থির হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ওই সেক্টরের ব্যবসায়ী, ভোক্তা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে নিয়ে পরামর্শ সভা আয়োজন করে করণীয় নির্ধারণ করতেন। এখন সে ধারা চলমান নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের হাতে। প্রশাসন দায়সারা দু’একটি অভিযান পরিচালনা করেই ক্ষান্ত এবং সরকারকে অবহিত করছেন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। প্রকৃত অর্থে এই খ-কালীন অভিযান বাজারে কোন প্রভাব ফেলার পরিবর্তে বাজারকে আরও উস্কে দিচ্ছে। বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, চালের মূল্য বাড়লে খাদ্য বিভাগ খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস), ট্রাক সেল, টিসিবি ডিলার ও ট্রাক সেলের মাধ্যমে খাদ্য-ভোগ্যপণ্যের বিক্রি জোরদার করে থাকেন। কিন্তু বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই সে কর্মকা- অনেকটাই স্থবির। ফলে সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষ একদিকে কর্মহীন, আয়-রোজগার হারিয়ে দিশেহারা। আর ব্যবসায়ীরা খাদ্য-পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আবার গণপরিবহন, করোনারোধে জীবাণুনাশক সুরক্ষা সামগ্রী, চিকিৎসা সেবা, টেস্ট ও ওষুধ ক্রয়ে বাড়তি দামে জনগণের এমনিতে জীবন জীবিকা নির্বাহে নাভিশ্বাস। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য- ভোগ্যপণ্যের বাড়তি মূল্য এখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। জনভোগান্তি লাঘবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততা জনমনে ক্ষোভ সঞ্চার করছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্যাব নেতারা বলেন, বিগত এক মাস ধরে খুচরা বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল (সয়াবিন ও পাম অয়েল), পেঁয়াজ, আলু, আটা, ময়দা, চিনি, ডিম, আঁদা, জিরা, হলুদ, এলাচ, দারুচিনি, মুরগির মাংস (দেশী ও ব্রয়লার), খাসির মাংস ও শিশুখাদ্যের মধ্যে গুঁড়োদুধের দাম বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর পাশাপাশি সব ধরনের শাকসবজির দামও চড়া। বাড়তি দামে পণ্য কিনতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা। ব্যবসায়ীরা বারবার বলছেন সারাদেশে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ আছে। আর প্রশাসন বলছেন চালের মূল্য নিয়ে কারসাজি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যে কোন পণ্যের দাম নিয়ে অনিয়ম করলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনবে। বক্তব্যগুলোর পক্ষে বাজারে সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে না।
×