ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ৩০ আগস্ট ২০২০

ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের

রহিম শেখ ॥ করোনা মহামারীতে দেশে টানা দুই মাসেরও বেশি সময় কল-কারখানা বন্ধ ছিল। মার্চের শুরু থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। এতে কম বেশি সব খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তৈরি পোশাক, চামড়া, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাইকারি ব্যবসা ও রেস্টুরেন্টের। ওষুধ ও আর্থিক খাতের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভাল ছিল। করোনার মধ্যেও মুনাফা ধরে রাখতে পেরেছে বিদেশী বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। বড় অঙ্কের লোকসান গুনেছে দেশের বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। এ খাতে চলতি বছর দুটি ঈদ আর একটি নববর্ষ গেছে বাণিজ্যহীন। যে উৎসবকে ঘিরে এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের বেচাকেনা বেশি হয়ে থাকে সেটি এবার হয়নি। ফলে অনেক উদ্যোক্তাই তাদের পুঁজি হারিয়েছেন। এখন আবার তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু পাচ্ছেন না ব্যাংক ঋণ। ঘুরছেন ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে। সরকারের ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে পাঁচ মাসে ঋণ পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী তহবিলের বাকি অর্থের ঋণ বিতরণের কথা অক্টোবরের মধ্যে। ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন ফর স্মল এ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস ইন এশিয়ার (আইসিওএসএ) তথ্য অনুযায়ী, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এসএমই খাতের অবদান এক-পঞ্চমাংশ। বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় অংশজুড়ে রয়েছে এসএমই’র অবদান। এসএমই খাতের ক্ষতি নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণার রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে ৬৬ দিনের লকডাউনের সময়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ক্ষতি হয়েছে ৯২ হাজার কোটি টাকা। শুধু উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়মূল্য আটকে থাকায় ৪১ শতাংশের বেশি এসএমই প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হয়েছে। আর কোন মতে টিকে ছিলেন ৪৮ শতাংশ উদ্যোক্তা। চলতি বছরে এসএমই খাতে ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত আয় কমতে পারে বলে আগাম আভাস দেয়া হয়েছে সংস্থাটির রিপোর্টে। সম্প্রতি ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গবর্ন্যান্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত এপ্রিল থেকে মহামারীর প্রতিঘাত শুরু হলে গত জুন পর্যন্ত অনলাইন নারী উদ্যোক্তাদের ২৪ শতাংশ ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে যেসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যবসা করতেন তারা এখন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছেন। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ কিংবা প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এক জরিপেও এর সত্যতা পাওয়া যায়। ওই জরিপে বলা হয়েছে, ৫৯ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতকরণে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। তারা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ঋণ সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল। উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় পর্যাপ্ত ঋণ সহায়তা পাচ্ছেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। একটি ছোট বুটিক হাউসের স্বত্বাধিকারী সানজিদা রহমান। গত কয়েক বছর আগে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি অল্প দিনেই অনলাইনেও জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু গত মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েন সানজিদা রহমান। বর্তমানে কোভিডের প্রভাব কমে আসায় তিনি আবার নতুন করে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছেন। দীর্ঘ চার মাস ঘুরেও প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ব্যাংক ঋণ পাননি। ঘুরেছেন বিভিন্ন ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে। আরেকজন নেত্রকোনা সদরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অনু চন্দ্র দে। মহামারী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত এ ব্যবসায়ী সরকারের প্রণোদনা তহবিলের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিতে তিন মাস ধরে ঘুরছেন। সানজিদা রহমান কিংবা অনু চন্দ্র দে’র মতো দেশে এমন উদ্যোক্তার সংখ্যা লক্ষাধিক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, কোভিডের প্রভাব অর্থনীতির সব খাতেই পড়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর প্রভাবও পড়েছে সমানভাবে। জনমনে আতঙ্ক কেটে যাওয়ায় মানুষ আবারও কর্মমুখী হয়েছে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও খুলেছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের নানামুখী উদ্যোগও অনেকটা কাজে এসেছে। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারাও আবার নতুন করে জেগে উঠছেন। এর মধ্যে যারা পুঁজি হারিয়েছেন তারাও নতুন করে ব্যবসা চালুর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ ব্যবসার ধরনও পরিবর্তন করছেন বলে তিনি মনে করেন। এসএমই খাতের আরেক উদ্যোক্তা কেপিসি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাজেদুর রহমান বলেন, ‘প্রণোদনার অর্থ আমি পেয়েছি। ব্যবসাটা আবার নতুন করে সাজাচ্ছি। আশা করা যায় খুব দ্রুতই সবকিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু অনেকেই এ সুবিধা পাননি। বিশেষ করে ব্যাংকের সঙ্গে যাদের লেনদেন নেই। কিংবা মর্টগেজ দেয়ার মতো সক্ষমতা নেই এমন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এ প্রণোদনার সুবিধা পাননি। ফলে তাদের মধ্যে এখনও কিছুটা হতাশা রয়েছে।’ তাদেরই একজন আরিফুর রহমান। রাজধানীর মিরপুরে ছোট্ট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে শপিং ব্যাগ তৈরি করেন তিনি। জনকণ্ঠকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত ছয়টি ব্যাংকে গিয়েছেন ব্যাংক ঋণের জন্য। কিন্তু একটি ব্যাংকও ঋণ দিতে রাজি হয়নি। ব্যাংক মর্টগেজ চায়। কিন্তু আমার তো মর্টগেজ দেয়ার মতো সক্ষমতা নেই।’ জানা যায়, কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা নির্দেশনা দিয়ে গত ১৩ এপ্রিল সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমে পুরো ঋণ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে বিতরণ করতে বলা হলেও পরবর্তীতে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তার জন্য প্রণোদনা তহবিলের অর্ধেক তথা ১০ হাজার কোটি টাকার একটি পুনর্অর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়। কিন্তু এসএমই খাতের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ শুধু মেয়াদী ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন। সাধারণভাবে তাদের চলতি মূলধন ঋণের প্রয়োজন পড়ে না। আবার প্রণোদনা তহবিলের মেয়াদ হবে তিন বছর। অথচ সরকার ৯ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ হারে সুদ ভর্তুকি দেবে এক বছরের জন্য। ফলে পরবর্তী ২ বছরে গ্রাহক পর্যায়ে সুদ বৃদ্ধির ফলে ঋণ আদায়ে ব্যাংকের সঙ্গে ঝামেলা হতে পারে। এসব কারণে ঋণ বিতরণ বাড়ছে না বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। এ বিষয়ে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের হেড অব এসএমই সঞ্জীব কুমার দে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা আছে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় নেয়া ঋণ সুদসহ এক বছরের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে অধিকাংশ গ্রাহকই এক বছর পরে ঋণের টাকা ফেরত দিতে পারবেন না, ব্যর্থ হতে পারেন। প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এক বছরের জন্য চলতি ঋণের কথা বলা হয়েছে, যদি মেয়াদী ঋণের কথা বলা হতো তাহলে ব্যাংক এবং গ্রাহক উয়ভয়ই কিছু সুবিধা পেত।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রণোদনা তহবিলের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে এ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা বিতরণের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেশি হওয়ায় এমনিতেই এসএমই খাতে ঋণ বিতরণে বেশিরভাগ ব্যাংক অনীহা দেখায়। এর মধ্যে ৯ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ করে দেয়ায় অনেক ব্যাংক সমস্যায় পড়েছে। এ ছাড়া ভর্তুকির সুদ পেতে ব্যাংকগুলোকে নানা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে কোন ভুল ধরা পড়লে তখন সুদহারের একটি অংশ ফেরত দিতে হয়। এসব কারণে ব্যাংকগুলো সাধারণত এ ধরনের ঋণ বিতরণে অনাগ্রহ দেখায়। জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দেশের অন্যান্য খাতের মতো কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকার প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করলেও উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ঋণ সহায়তা পাচ্ছেন না।’ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে গ্রাম থেকে টাকা শহরে না এনে বরং গ্রামে আরও টাকার প্রবাহ বাড়ানো দরকার। এর ফলে গ্রামের উন্নয়ন হবে, মানুষ শহর থেকে আবার গ্রামমুখী হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে এসএমই খাতে মোট ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৯ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। একজন উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত এসএমই ঋণ নিতে পারেন। জামানতহীন ঋণে গ্যারান্টি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ॥ করোনার প্রভাব মোকাবেলায় কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আওতায় ওইসব শিল্পে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জামানতবিহীন ঋণ বিতরণ করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে। ফলে গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ আদায় না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিপরীতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেবে। দেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের একটি গ্যারান্টি স্কিম প্রণীত হলো। এ বিষয়ে গত ২৭ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ স্কিমের আওতায় ঋণ বিতরণে আগ্রহী তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর আগে গত এপ্রিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে যে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা বাস্তবায়ন করতে এ গ্যারান্টি দেয়া হবে। বিষয়টি তদারকি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমইএ এ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগে ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম ইউনিট’ নামে একটি উপ-বিভাগ গঠন করা হয়েছে। এই ইউনিট থেকে ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি দেয়া হবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ স্কিমের আওতায় এসব খাতে চলতি মূলধন ঋণের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যারান্টি দেয়া হবে। এর মধ্যে উৎপাদন ও সেবা খাতের ঋণের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ এবং ট্রেডিং খাতে ঋণের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত গ্যারান্টি দেয়া যাবে। ঋণ দিতে হবে জামানতবিহীন। অগ্রাধিকার দিতে হবে গ্রামীণ কুটির, ক্ষুদ্র ও মাইক্রো শিল্পকে। নতুন কোন গ্রাহক ঋণ নিতে চাইলে তাদেরও এর আওতায় ঋণ দেয়া যাবে। গ্রাহকের ঋণের পরিমাণ যাই হোক সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে এ গ্যারান্টি দেয়া হবে। এর বেশি বা কম ঋণ থাকলে তার ওপর এই গ্যারান্টি প্রযোজ্য হবে না। অক্টোবরের মধ্যে ছোট উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণের নির্দেশ ॥ মহামারী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের বিশেষ ঋণ সুবিধা দেয়ার ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু ঋণ বিতরণে খরচ বেশি, আয় কম, জামানতের অভাবসহ বিভিন্ন অজুহাতে ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এমন অবস্থায় দ্রুত ঋণ বিতরণের জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে সিএমএসএমই প্যাকেজের ঋণ বিতরণ সম্পন্ন করতে চলতি বছরের ৩১ আগস্টের পরিবর্তে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। সম্প্রতি করোনায় ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়নে ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
×