ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘বিষফোঁড়া’ উপন্যাস নিষিদ্ধের প্রতিবাদ নির্মূল কমিটির

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৯ আগস্ট ২০২০

‘বিষফোঁড়া’ উপন্যাস নিষিদ্ধের প্রতিবাদ নির্মূল কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরুণ লেখক সাইফুল বাতেন টিটোর উপন্যাস ‘বিষফোঁড়া’ নিষিদ্ধ করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশের প্রতিবাদ জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। নির্মূল কমিটি একই সঙ্গে উপন্যাসটির নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার করে কওমি ও অন্যান্য আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে। শুক্রবার সংগঠনের সভাপতি লেখক ও শাহরিয়ার কবির এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, গত ২৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গবেষণা সেল-এর সদস্য, তরুণ লেখক সাইফুল বাতেন টিটোর কওমি মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতন বিষয়ক উপন্যাস ‘বিষফোঁড়া’ নিষিদ্ধকরণের আদেশের আমরা প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল সভ্য দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের প্রতি যে কোন ধরনের শারীরিক নির্যাতন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ আমাদের গণমাধ্যমে অহরহ আবাসিক কওমি মাদ্রাসায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনসহ নানাবিধ শারীরিক নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোন শিশু নির্যাতনকারীকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান করা হয়েছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। মানবাধিকারের পরিপন্থী যে কোন ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার তথ্য যখন গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোন শিল্পমাধ্যমে প্রকাশিত হয় সরকারের কর্তব্য হচ্ছে নির্যাতন বন্ধের জন্য দেশের আইন অনুযায়ী নির্যাতকদের শাস্তি প্রদান এবং নির্যাতিতদের রক্ষা করা। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক-যুদ্ধাপরাধী অধ্যুষিত খালেদা-নিজামীদের জোট সরকার সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর নজিরবিহীন নির্যাতনের প্রতিবাদ করার জন্য দেশের খ্যাতিমান লেখক সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করে যেভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করেছে তার ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত হয়েছে এবং মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি অধিকতর সন্ত্রাস ও নির্যাতনে প্ররোচিত হয়েছে। নির্মূল কমিটি বলেছে, ‘ধর্মব্যবসায়ী মৌলবাদীদের তুষ্ট করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেভাবে একজন উদীয়মান মুক্তমনা লেখকের উপন্যাস নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, যেভাবে নিকট অতীতে আমাদের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তক থেকে সাম্প্রদায়িক বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যের বরেণ্য লেখকদের রচনা বাদ দেয়া হয়েছে এতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলুণ্ঠিত হয়েছে এবং জঙ্গী মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। আমরা সাইফুল বাতেন টিটোর ‘বিষফোঁড়া’ উপন্যাসটির নিষিদ্ধকরণ প্রত্যাহারের পাশাপাশি কওমি ও অন্যান্য আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতনের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
×