ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত সাবেক জাতীয় ফুটবলার আবদুল গাফ্ফারের

‘ভোটারদের কাছে টানতে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বাফুফে!’

প্রকাশিত: ২১:৩২, ২৭ আগস্ট ২০২০

‘ভোটারদের কাছে টানতে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বাফুফে!’

রুমেল খান ॥ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমানে উত্তপ্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গন। আগামী ৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাফুফের বহুল আলোচিত এই নির্বাচন। ভোটকে সামনে রেখে বাফুফের বর্তমান কমিটি নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা কাউন্সিলর তালিকা তৈরি থেকে শুরু করে নির্বাচনের যাবতীয় কাজ করে যাচ্ছে নিয়ম-নীতি মেনেই। ইতোমধ্যে ১৩৯ কাউন্সিলরের তালিকা চূড়ান্ত করেছে বাফুফে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই! নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন চতুর্থবারের মতো যাতে বাফুফে সভাপতি পদে জয় লাভ করতে না পারেন তার জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন (বিডিডিএফএ) এবং বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব এ্যাসোসিয়েশন (বিএফসিএ)। সর্বশেষ ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএ’র কর্মকর্তারা বাফুফের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নির্বাচনের কাউন্সিলর বদলের অভিযোগ এনেছেন। বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএয়ের কর্তাদের দাবি বাফুফের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুর রহিমকে ঢাকা জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন থেকে কাউন্সিলর করা হয়েছে। যা গঠনতন্ত্র বিরোধী। এছাড়া দ্য মুসলিম ইনস্টিটিউট ও নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলরশিপ নিয়েও আপত্তি আমলে নেয়নি বাফুফে। কাউন্সিলর তালিকার আপত্তি আমলে নেয়ার দাবি জানিয়ে বিডিডিএফএ এবং বিএফসিএ কর্তারা বলেছেন, অন্যথায় আইনী ব্যবস্থা নেয়া ও তথ্য প্রমাণসহ অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে ফিফার এথিকস কমিটি এবং এএফসিতে যাবেন তারা! গত ১১ আগস্ট বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত ও সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় শুধু ঢাকা জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন, দ্য মুসলিম ইনস্টিটিউট ও নবাবপুর ক্রীড়া চক্রের ব্যাপারেই নয়, মোট ১১ কাউন্সিলরশিপ নিয়ে আলোচনা, অভিযোগ উত্থাপন ও সিদ্ধান্ত হয়। এই তালিকায় আরও আছে মহাখালী একাদশ, কদমতলা সংসদ, পূর্বাচল পরিষদ, ইস্ট এ্যান্ড ক্লাব, টাঙ্গাইল ফুটবল একাডেমি, বাসাবো তরুণ সংঘ, বাড্ডা জাগরণী সংসদ এবং ওয়ারী ক্লাব। এসব বিষয় নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠ কথা বলেছে জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবলার এবং ফুটবল সংগঠক আব্দুল গাফ্ফারের সঙ্গে। তার অভিযোগের তীর বাফুফের দিকেই, ‘এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি। তফসিল ঘোষণার আগে একটা খসড়া জমা দিতে হয় নির্বাচন কমিশনার বরাবর। সেটা যাচাই বাছাই করা হবে, এটা নিয়ে যদি কারোর আপত্তি থাকে, তাহলে সেটা করার জন্য সময়ও দেয়া হয়। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে বাফুফে যে ১৩৯ কাউন্সিলরের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলল, সেটা কি তারা সঠিকভাবে নিয়ম মেনে করেছে? আমার তা মনে হয় না। উদাহরণস্বরূপ বা যায় কোচ কামাল বাবুর নামটি। তিনি কাউন্সিলর হিসেবে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু বাফুফে তাকে কাউন্সিলর হিসেবে তাকে বৈধতা দেয়নি। দিয়েছে তার ক্লাবের সভাপতিকে। বাফুফের এই প্রক্রিয়া তো অন্যায়! কামালের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ-আপত্তি থাকলে সেটা তো করা যেত। তা না করে অন্য পন্থা অবলম্বন করা হলো কেন?’ গাফ্ফার আরও বলেন, ‘বাফুফে যেসব অন্যায়-অনিয়ম করছে, সেগুলো যদি ফিফার-এএফসির কাছে অভিযোগ আকারে পেশ করা হয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমনটা হতেই পারে। এটা পরিষ্কারÑ ভোটার টানার এই অপচেষ্টার মাধ্যমে বাফুফে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।’ সবশেষে গাফ্ফার বলেন, ‘এমনিতেই দেশের ফুটবলের অবস্থা শোচনীয়, তার ওপর বাফুফের এই ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা যদি চলতেই থাকে, তাহলে নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই স্বচ্ছ হবে না, প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এসব অনিয়ম দেশের ফুটবলের জন্য অশনি সংকেত। এগুলো কোনমতেই কাম্য নয়।’
×