ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দিলীপ ভিনসেন্ট গমেজ

সচেতনতার বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ২১:০৭, ২৭ আগস্ট ২০২০

সচেতনতার বিকল্প নেই

বিশ্বে করোনাভাইরাস শুরু হবার পর বাংলাদেশে প্রথম ৮ মার্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। অতঃপর ২৬ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশ সরকার মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য সারাদেশে সাধারণ ছুটির মাধ্যমে এক প্রকার অলিখিত লকডাউন ঘোষণা করে এবং সে ঘোষণা সারাদেশের গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার প্রধান কারণ ছিল করোনা যাতে সারাদেশ সংক্রমিত না হয়। সাধারণ ছুটিতে বাংলার জনগণ খুব ভালভাবে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছিল। তখন দেখা যেত প্রায় সবার মুখে মাস্ক। যারা অতি প্রয়োজনে বাসা হতে বের হচ্ছে তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছে, রাস্তার পাশে থাকা সাবান দিয়ে হাত- ধোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার। সবাই বেশ সচেতন ছিল। সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছিল। কিন্তু মানুষের জীবন জীবিকার কথা চিন্তা করে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর অনেক শর্ত দিয়ে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। গণপরিবহন চলার প্রধান শর্ত ছিল পরিবহনে অর্ধেক যাথী পরিবহন করা। পরিবহনে ওঠার পূর্বে সকল যাত্রীর মাস্ক পরিধান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অতঃপর গণপরিবহন চলা শুরু হলো। প্রথম দিকে পরিবহনের কর্মীরা যেমন সচেতন ছিল ঠিক তদ্রƒপ যাত্রীরা বেশ সচেতন ছিল। প্রায় সব যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে পরিবহনে ওঠানো হতো। মাস্ক ছাড়া কেউ উঠত না। কেউ ভুলে মাস্ক না পরলে অন্য যাত্রীরা তাকে পরতে বাধ্য করত এবং সব সিটে ২ জন যাত্রীর পরিবর্তে ১জন করে যাত্রী বসানো হতো। এবং নির্দিষ্ট বাস স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠানামা বন্ধ ছিল। এতে করে সে সময় সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটা কমে যায়। সাধারণ যাত্রীরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে গণপরিবহনে চলাচল করে। কিন্তু হায় এখন! এখন গণপরিবহনে কোন স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বিশেষ করে গত কোরবানি ঈদের আগ হতে গণপরিবহন চলাচল দেখে মনে হয় আমাদের চারপাশে কোন করোনাভাইরাস নেই। সবাই যেন কেমন গা ছাড়া ভাব। কারও করোনায় সংক্রমিত হবার ভয় নেই। দুই সিট মিলিয়ে ১জন যাত্রী এখন খুব কম বসছে। উপরন্তু অতিরিক্ত যাত্রী দাঁড়ানো অবস্থায় নেওয়া হচ্ছে অথচ ভাড়া আগে সরকার নির্ধারিত প্রায় দ্বিগুণই নেওয়া হচ্ছে। এখন বাসে ওঠার সময় হেলপারের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই বললেই হয়। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। সে সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। দিনের পর দিন আমরা অসচেতন হচ্ছি। করোনাকে অবহেলা করার সময় এখনও হয়নি। করোনাকে পাত্তা না দেওয়া আমাদের জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। কারণ অধিকাংশ মানুষ এখন স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে অসচেতন ও উদাসীন। বর্তমান গণপরিবন চলাচলে ঢিলেঢালা ভাব আমাদের জন্য হুমকিস্বরূপ। সরকারের আন্তরিকতার অভাব নেই করোনা রোধে। কিন্তু আমরা এখন অনেক অসচেতন ও অবহেলার সঙ্গে দেখছি করোনাভাইরাস। অনেকেই করোনাকে পাত্তা দিচ্ছে না। এতে করে গণপরিবহনে অরাজগতার মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। তাই আসুন প্রাত্যহিক জীবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে কাজকর্ম করি। আশা করি সবার সচেতনতাই করোনা হতে আমাদের সুরক্ষা করতে পারে। মনিপুরীপাড়া, ঢাকা থেকে
×