ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রীরও দায় আছে

প্রকাশিত: ২১:০৬, ২৭ আগস্ট ২০২০

যাত্রীরও দায় আছে

স্থবির হয়ে পড়া জনজীবনের প্রয়োজনে গত ৩১ মে থেকে খুলে দেয়া হয় দেশের সকল গণপরিবহন। শর্ত দেয়া হয় বর্ধিত ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যানবাহনগুলো চালু করতে হবে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে যতগুলো সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়, সবগুলোতে সরকারী নির্দেশনা ছিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে হবে। ঠিক একইভাবে গণপরিবহনের ক্ষেত্রেও ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সীমিত আকার’ এই দুই বিষয়ের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব পালিত হলেও গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব চরমভাবে অবহেলিত হচ্ছে। কিছুদিন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যানবাহনগুলো চললেও এখন আবার আগের মতোই সব চলছে। এখন গণপরিবহনগুলোর যাত্রী নেয়ার দৃশ্য দেখলে মনে হয় দেশে আর কোন করোনা নেই। এখন আবার আগের মতো বাস থামলে ঠেলে ঠেলে চড়া, অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে গাড়িতে ওঠা সব দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে। ফলে আমরা আবারও করোনা ঝুঁকিতে পড়ে গেছি। করোনাতে যানবাহনগুলো বন্ধ থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে গিয়েছিল। এখন আবার শুরু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি। এই সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে যানবাহনে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা। এসব যানবাহনগুলো যে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানছে না এবং অতিরিক্ত যাত্রী যানবাহনে তুলছে, এই দোষ কার? আমরা কাকে এটার জন্য দায়ী করব? সরকারকে, এসব যানবাহন মালিকদেও, নাকি অন্য কাউকে? আমি মনে করি আমরা যাত্রীরাই এসবের জন্য অর্ধেক দায়ী। এ জন্য আমাদেরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাসে উঠে যদি দেখা যায় অর্ধেক আসনে যাত্রী বসে গেছে, তাহলে বাস স্টাফদের দেয়া অনৈতিক সুযোগ গ্রহণ না করে নেমে যেতে হবে। তাহলে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে সামাজিক দূরত্ব নষ্ট হবে না। যানবাহনে উঠে যদি দেখি সব আসন ভরে গেছে, তাহলে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসে দাঁড়িয়ে না থেকে নেমে যেতে হবে। এভাবে সবার আগে আমাদেরই গণপরিবহনে যাতায়াতের নিয়ম মানতে হবে। আমরা যাত্রীরা সবাই মিলে যদি ‘স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করা’, ‘সামাজিক দূরত্বকে অবহেলা করা’ এবং ‘আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া’ যানবাহনগুলোকে এড়িয়ে চলি, অবশ্যই গণপরিবহনগুলোর অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার মানসিকতা বদলে যাবে। সে জন্য নিয়ম মানতে হবে আমাদেরই। পাশাপাশি সরকারকে গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ানো এবং যানবাহনগুলোকে নজরদারির আওতায় আনতে হবে। তাহলে একদিকে যেমন গণপরিবহনের দ্বারা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি দূর হবে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনাও কমে যাবে। জয়পুরপাড়া, বগুড়া থেকে
×