ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছাদে বাগান করলে হোল্ডিং ট্যাক্স ১০ ভাগ রেয়াত

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ২৬ আগস্ট ২০২০

ছাদে বাগান করলে হোল্ডিং ট্যাক্স ১০ ভাগ রেয়াত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভবনের ছাদে বাগান তথা ছাদ কৃষি করলে হোল্ডিং ট্যাক্স ১০ ভাগ রেয়াত দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মোঃ মেয়র আতিকুল ইসলাম। সংস্থাটির আওতাধীন এলাকার ভবনগুলোতে ছাদ বাগান করলেই ও তা পরিদর্শন শেষে প্রমাণ পেলেই কেবল এ সুবিধা প্রদান করা হবে। এছাড়া একটি নীতিমালার আলোকে ছাদ বাগান করা ভবনগুলোতে সনদ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। অধিক সংখ্যক গাছ লাগাতে নাগরিকদের আগ্রহী করে তুলতেই এ ঘোষণা দেন মেয়র। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মিরপুরে সেকশন-১০ এর মুকুল ফৌজ মাঠে ডিএনসিসির ওয়ার্ডগুলোতে এক লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গাছের চারাগুলো চলতি মৌসুমে ডিএনসিসির সকল ওয়ার্ডে লাগানো হবে। সবুজে সাজুক ঢাকা স্লোগান সামনে রেখে দুই ধাপে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে প্রায় এক লাখ গাছ লাগানো হবে। প্রথম ধাপে প্রতিটি ওয়ার্ডে এক হাজারটি করে মোট ৫৪ হাজার এবং বাকি গাছগুলো দ্বিতীয় ধাপে লাগানো হবে। ডিএনসিসির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে ডিএনসিসির পরিবেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন রশীদ জনি, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুরাদ হোসেন, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম মোল্লা, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাসুম গণি তাপস, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামাল, নাগরিক ঢাকা নামক সংগঠনের সভাপতি এম নাঈম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া কৃষি বিষয়ক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ অনলাইনে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিক বলেন, যারা ছাদ বাগান করবে আমরা তাদের ১০ শতাংশ পর্যন্ত কর (হোল্ডিং ট্যাক্স) রেয়াত করব। একটি নীতিমালা করা হবে। তার আলোকে ছাদ বাগান করা মালিকদের সার্টিফিকেট দেয়া হবে। আর নগরীতে যেসব গাছ লাগানো হবে তার দায়িত্ব নগরবাসীদের নিতে হবে। যে ভবনের সামনে গাছ লাগানো হবে সেই গাছ যেন বেড়ে উঠতে পারে, কেউ যেন উপড়ে না ফেলে সেই দায়িত্ব ওই ভবন মালিককে নিতে হবে। ঢাকায় সবুজায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার পরিবেশ আমাদেরই বাঁচাতে হবে। ঢাকাকে সুন্দর করে সাজাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে হবে। আর এর জন্য গাছের বিকল্প নেই। ঢাকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪৯ হাজার লোক বসবাস করেন। এই লোকগুলোকে বাঁচার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ১০ ভাগ রেয়াত প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ছাদ বাগান করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সিভিল সোসাইটি, নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবাদী সংগঠন এর প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি করা হবে। সে কমিটির সুপারিশে এই রেয়াত দেয়া হবে। একইসঙ্গে আমরা যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় বৃষ্টির পানি ‘হার্ভেস্ট’ করা হবে তাদেরকেও গৃহকরের একটা অংশ রেয়াত দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছি। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ঢাকা শহরকে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। প্রত্যেক পাড়া-মহল্লা, ক্লাব, স্কুল-কলেজের আশপাশে যেসব গাছ লাগানো হবে, আমরা প্রত্যেকে ৫টি করে গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করলে বিপ্লব ঘটে যাবে। সবুজায়নের জন্য আমরা একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এই প্রকল্পে সবুজায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সামাজিক সংগঠনসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই কমিটি নির্ধারণ করবে কোথায় কী পরিমাণ ও কোন কোন গাছ আছে, আর কী পরিমাণ ও কোন কোন গাছ লাগাতে হবে। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে অনুষ্ঠেয় চিরুনি অভিযান সম্পর্কে মেয়র বলেন, চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে যেভাবে ডেঙ্গু প্রতিহত করেছি, একইভাবে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্য চিরুনি অভিযান শুরু হবে। যারা হোল্ডিং ট্যাক্স দেন না তাদের অবশ্যই ট্যাক্সের আওতায় আসতে হবে। তবে কারও ট্যাক্স বাড়ানো হবে না, কেবল ট্যাক্সের পরিধি বাড়ানো হবে। ১ অক্টোবর থেকে ডিএনসিসি এলাকার অবৈধ ঝুলন্ত তার অপসারণের জন্য অভিযান শুরু হবে। অনুষ্ঠান শেষে মেয়র মুকুল ফৌজ মাঠে কয়েকটি গাছের চারা রোপণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে কাউন্সিলরদের মাঝে নিজ নিজ ওয়ার্ডের জন্য চারা গাছ বিতরণ করা হয়।
×