ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যায় ৫ হাজার ৯৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার ক্ষতি

প্রকাশিত: ২২:৫০, ২৬ আগস্ট ২০২০

বন্যায় ৫ হাজার ৯৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার ক্ষতি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান বলেছেন, বন্যায় দেশের ৩৩ জেলায় বিভিন্ন খাতে মোট ৫ হাজার ৯৭২ কোটি ৭৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে বন্যা পরবর্তী সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। বন্যায় ঘরবাড়ি, আশ্রয়কেন্দ্র, গবাদিপশু, শস্য ক্ষেত ও বীজতলা, মৎস্য খামার, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুত লাইন, মোবাইল ফোন লাইন, টেলিফোন টাওয়ার, সড়ক, ব্রিজ- কালভার্ট, বাঁধ, নদী, হাওড়, নৌকা-ট্রলার, জাল, বনাঞ্চল, নার্সারি, কৃষি, নলকূপ, জলাধার, হাসপাতাল-ক্লিনিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুর, সিলেট, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, নওগাঁ, শরীয়তপুর, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নাটোর, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, মৌলভীবাজার, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ ও পাবনা জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেশের সব জেলা থেকে যে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট যেটা পাঠানো হয়, সেটা আমরা পেয়েছি। সেটা পাওয়ার পর আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা ডেকেছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো, ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের যে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সেটা নির্ধারণ করা। সেই অনুযায়ী সব মন্ত্রণালয় তাদের কর্মপরিকল্পনা এখানে পেশ করেছেন। সেটা আমরা নোট করেছি। সেটা নিয়ে আগামীতে পুনর্বাসন পরিকল্পনা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালু করতে বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সেই পরিমাণ অর্থ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) খরচ করতে বলেছেন। আরও অর্থের প্রয়োজন হলে তিনি বরাদ্দ দেবেন। তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন ঘরবাড়ির ওপরে। কারণ পানি নেমে গেছে, এখন লোকজন বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এই সময়ে বাড়িতে গিয়ে যদি তাদের ঘরগুলো ঠিক না থাকে তাহলে তাদের কষ্ট হবে। সেজন্য তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রত্যেকটি মানুষের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দিতে বলেছেন। সেজন্য টিন ও গৃহ নির্মাণ মজুরি বাবদ নগদ অর্থ তিনি দিতে বলেছেন। সেই ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত ২৬ জুন থেকে চার দফা বন্যা হয়েছে জানিয়ে ড. এনামুর রহমান বলেন, বন্যাকবলিত জনগণের জন্য আমরা পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। আমাদের মাঠপর্যায়ের প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সেটা বিতরণ করেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের জন্য কর্ম সৃজনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত ও পুনর্র্নির্মাণের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণ বাবদ মজুরি দেয়া হবে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা রাস্তা মেরামত ও পুনর্র্নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
×