ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ২৬ আগস্ট ২০২০

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একদিকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার পাশাপাশি ভাসানচরে পুনর্বাসনের প্রস্তুতিও চলছে। এ সঙ্কটে আমাদের পরিবেশ, প্রতিবেশ, পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ কমে গেলে ১১ লাখ অতিরিক্ত মানুষের বোঝা বাংলাদেশে কিভাবে বইবে। মঙ্গলবার কুমিল্লা জোন বিআরটিএ এবং বিআরটিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি আরও জানান, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গণপরিবহনে শর্তসাপেক্ষে আগের ভাড়া কার্যকরের চিন্তা সরকার করছে। সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন মন্ত্রী। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সরকার কূটনীতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। রোহিঙ্গা সঙ্কটে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে দেশরতœ শেখ হাসিনা যে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বলেন, একদিকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার পাশাপাশি ভাসানচরে পুনর্বাসনের প্রস্তুতিও চলছে। এ সঙ্কটে আমাদের পরিবেশ, প্রতিবেশ, পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ কমে গেলে ১১ লাখ অতিরিক্ত মানুষের বোঝা বাংলাদেশে কীভাবে বইবে? এ বিষয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেতুমন্ত্রী বলেন, গণপরিবহনের বিষয়ে সম্প্রতি পরিবহন মালিক-শ্রমিকসহ স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বিআরটিএ সভা করেছে। সে সভার সুপারিশ সরকারের বিবেচনার জন্য পেশ করা হয়েছে। জনস্বার্থে এবং বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহনের পুরোনো ভাড়ায় ফিরে যাওয়ার বিষয়টি সরকার চিন্তাভাবনা করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পরিবহনে মাস্ক পরিধান শতভাগ বাধ্যতামূলকসহ দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া যাবে না। যাত্রীদের সিটে বসে ভ্রমণ করতে হবে। মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার পর আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং কেবিনেট সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। শীঘ্রই এ বিষয়ে সরকারী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিদিনের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা একটি ট্রেন্ড ধরে চলছে। বাড়ছেও না, আবার কমছেও না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুলনা করলে বাংলাদেশ তুলনামূলক অবস্থান ভাল হলেও আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। এরই মাঝে রাজধানী ঢাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় বাইরে বের হলে মনে হয় দেশে করোনাই নেই। তিনি বলেন, অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরিধান করছে না। এ ধরনের অবহেলা ভয়ঙ্কর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অনেক দেশে ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হয়েছে। তাই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করে বাইরে বেরুতে হবে। খুব শীঘ্রই করোনা চলে যাবে এমন না ভেবে ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে হবে। ভিডিও কনফারেন্সে অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শাহারিয়ার হোসেন, কুমিল্লা সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলীসহ কুমিল্লা জোনের বিভিন্ন সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বিআরটিএ ও বিআরটিসি’র কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন। সবুজায়নে আওয়ামী লীগের বৃক্ষরোপণ-শামীম ॥ পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেছেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সবুজায়ন করতে আওয়ামী লীগ বৃক্ষরোপণ করে। আর বিএনপি-জামায়াত বৃক্ষ ধ্বংস করে। তারা শুধু বৃক্ষই ধ্বংস করে না, মূলত দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্র, মানুষ হত্যা ও গুম এগুলো হলো বিএনপির ‘গুণ’। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে মঙ্গলবার ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ শেষে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে কিংবা বিরোধী দলে সব সময় বৃক্ষরোপণ করে। ১৯৮৪ সাল থেকে বর্ষাকালে কৃষক লীগের মাধ্যমে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। আর কিছুদিন আগেও রাজধানীতে হেফাজতের তা-বের সময় বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত মিলে রাজধানীতে প্রকাশ্যে বৃক্ষ ধ্বংস করল। এটা দেশবাসী ভুলে যায়নি। তিনি বলেন, এবার মুজিবশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন এক কোটি বৃক্ষরোপণ করবেন। আমাদের দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী সে কাজ করে যাচ্ছেন। এক কোটি গাছ তো আমরা লাগাবই এবং এই কর্মসূচী আমাদের অব্যাহত থাকবে। তিনটি করে গাছ লাগালে তিন কোটি গাছ লাগানো যাবে। তিনি গাছ লাগানোর পাশাপাশি তা সংরক্ষণের আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী-২০২০ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সারা দেশে এক কোটি বৃক্ষের চারা রোপণ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সংসদ ভবন চত্বরে গত ২৬ জুলাই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পর্যায়ক্রমে সকল সংসদ-সদস্যবৃন্দ সংসদ ভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করবেন। শনিবার এনামুল হক শামীম এ কর্মসূচীতে অংশ নেন। নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে-কাদের ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা থেকে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। জনদুর্ভোগ সহ্য করা হবে না, কোন অজুহাত নয়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে না থেকে সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে কাজ করুন। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সবাইকে শতভাগ মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং যানবাহনে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া যাবে না। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ অধিদফরের কুমিল্লা জোনের উন্নয়ন প্রকল্প সমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন।
×