ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাদকের সঙ্গে জড়িত ৪৮ জন আটক

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ১১ সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ২৫ আগস্ট ২০২০

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ১১ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকায় পুলিশের পৃথক অভিযানে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকারী চক্রের এগারো সদস্য ও মাদকের সঙ্গে জড়িত ৪৮ জন গ্রেফতার হয়েছে। রাস্তায় খানাখন্দের ফলে যানবাহনের ধীরগতির কারণে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়েছে। সেই সুযোগে ঢাকার অপেক্ষাকৃত খারাপ সড়কগুলোতে মাঝে মধ্যেই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ঢাকার সব এলাকায় ছিনতাই করত। তাদের কাছে ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদির মতো নকল জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে ৫৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে এসেছে গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীদের সম্পর্কে এমন তথ্য। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার প্রকৌশলী মোঃ ওয়ালিদ হোসেন এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, টানা অভিযানে প্রায়ই ছিনতাইকারী গ্রেফতার হচ্ছে। সম্প্রতি এগারো ছিনতাইকারী গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা একেক দিন ঢাকার একেক এলাকায় ছিনতাই করত। তারা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য পরিচয়ে ছিনতাই করত। ঢাকার এমন কোন জায়গা নেই যেখানে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করেনি। এক কথায় তারা ঢাকার সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াত। তাদের কাছে ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মতো বেশ কিছু মালামাল পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল আলম মুজাহিদ জানান, গত ১৭ আগস্ট সকালে কোতোয়ালি থানাধীন জনসন রোডে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে পথরোধ করে ছিনতাইকারীরা। তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর শুরু হয় তাদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান। গত ১৯ আগস্ট ভোরে রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে ছিনতাইয়ের ওই ঘটনার অভিযোগে মোঃ সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। সোহাগের দেয়া তথ্যমতে ছিনতাইকারী চক্রের ওই ১১ সদস্যের তথ্য পাওয়া যায়। এরপর গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার দত্তপাড়া এলাকা থেকে ইকবাল, জাকির ও সুমন, টঙ্গীর চেরাগ আলী থেকে সরোয়ার খাঁ, পল্টন ও নদ্দা এলাকা থেকে দুলাল, আনোয়ার, আমির, নাসির, ইমন ও রমজানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ, ইকবাল ও দুলাল আদালতে ১৬৪ ধারায় ছিনতাইয়ের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়। এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতরা ঢাকার যেসব এলাকার রাস্তা খানাখন্দ আছে, সেসব এলাকাকে টার্গেট করে। কারণ ওইসব এলাকায় যানবাহন বাধ্য হয়ে আস্তে চলে। সেই সুযোগটিকে তারা কাজে লাগায়। তারা একেক দিন একেক এলাকায় ছিনতাই করত। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টার্গেটকৃত ধীরগতির যানবাহনগুলোকে থামার নির্দেশ দিত। তাদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে রাস্তায় এক পাশে নিয়ে অস্ত্রের মুখে সব ছিনিয়ে নিত। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, সারোয়ার হোসেন ওরফে সরোয়ার খাঁ (৪০), মোঃ দুলাল (৪০), আনোয়ার গোলদার (৩৬), আমির (৩৮), মোঃ নাছির হাওলাদার (২৮), ইমন ওরফে কাজল কুমার দে (২৮), মোঃ ইকবাল (৩৪), মোঃ সোহাগ খান (২৩), মোঃ জাকির হোসেন (৩৮), মোঃ সুমন (৩০) ও মোঃ রমজান (২৭)। তাদের কাছে একজোড়া হ্যান্ডকাফ, ২টি ডিবির জ্যাকেটের মতো জ্যাকেট ও ছিনতাইকৃত টাকা পাওয়া গেছে।
×