ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জোয়ারের পানিতে প্লাবিত উপকূলীয় জেলায় জীবনযাত্রা দুর্বিষহ

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৫ আগস্ট ২০২০

জোয়ারের পানিতে প্লাবিত উপকূলীয় জেলায় জীবনযাত্রা দুর্বিষহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে উপকূলীয় জেলার লাখ লাখ লোকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ এবং অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে এসব জেলার নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দী রয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ফসলি জমি ডুবে গেছে। মাছের ঘের ভেসে গেছে। ক্ষতি হয়েছে পাকা আউশ ও আমন ধানের। পানি কমতে থাকায় নদী ভাঙ্গন তীব্রতর হচ্ছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দুএকদিনের মধ্যে আবারও ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হবে। ইতোমধ্যে আরও এক দফায় সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে দেশের মধ্যাঞ্চল বাদের সব এলাকা থেকেই বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে সম্পূর্ণ রূপে বন্যা মুক্ত হতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেন জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান পানি নামতে শুরু করলেও মধ্যাঞ্চলসহ অন্যান্য এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরও এক সপ্তাহ স্থায়ী থাকতে পারে। টাঙ্গাইল জেলায় বন্যার পানি ২৯ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মধাঞ্চলে পদ্মা নদীর পানি আরও বাড়বে। ফলে রাজবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর জেলার বন্যা আরও ৫ দিন স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকার চারপাশের নদীর পানি বাড়ার আভাস দেয়া হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সারা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়তে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ ও তৎলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। এ কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আগামী তিন দিন বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। আমতলী, বরগুনা ॥ অমাবস্যার জোর প্রভাব ও অতি বৃষ্টিতে আমতলী ও তালতলীর উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চলসহ ৩০টি গ্রাম তলিয়ে যায়। পায়রা নদীর পানি নামতে শুরু করায় নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দ্রুত পায়রা নদীর ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জানা গেছে, গত সাত দিন ধরে অমাবস্যার জোর প্রভাব ও অতি বৃষ্টিতে পায়রা নদীতে স্বাভারিক জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় আমতলী ও তালতলীর চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এতে মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করে আসছিল। পাকা আউশ ধান ও আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পায়রা নদীর তলদেশের মাটি আগলা হয়ে যায়। এতে নদী সংলগ্ন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। কিন্তু পানি নামতে শুরু করায় পায়রা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তেতুঁলবাড়ীয়া এলাকার অন্তত এক কিলোমিটার, বালিয়াতলী এলাকায় তিন শ’ মিটার ও পশ্চিম ঘটখালী এলাকার দুই শ’ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি নামায় ওই সকল এলাকার নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। শরীয়তপুরে তীব্র নদী ভাঙ্গন ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা শরীয়তপুর থেকে জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শরীয়তপুরে আবারও শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে। জেলার জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
×