ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চা উৎপাদনে বিপর্যয়

প্রকাশিত: ২১:০২, ২৫ আগস্ট ২০২০

চা উৎপাদনে বিপর্যয়

চৌধুরী নীহারেন্দু হোম, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ॥ বিরূপ আবহাওয়ায় চলতি বছর দেশে চায়ের উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। গত ২০১৯ সালের চেয়ে চলতি ২০২০ সালে চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। গত বছর ২০১৯ সালে প্রায় ১০ কোটি কেজি চায়ের উৎপাদনের বিপরীতে চলতি ২০২০ সালে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭ কোটি ৭০ লাখকেজি। কিন্তু এ বছরের জুলাই পর্যন্ত অর্জিত চায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার কেজি। চা-সংশ্লিষ্টরা প্রতিকূল আবহাওয়ার পাশাপাশি অধিক উৎপাদনের আশায় টি প্লান্টারদের অধিক হারে পেস্টিসাইট ব্যবহার ও আবহাওয়া অনুযায়ী পেস্টিসাইট প্রয়োগে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ উৎপাদনে বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দেখছেন। বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই)-এর পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, খরা, অতিবৃষ্টি এবং মেঘলা পরিবেশের কারণে এবার দেশে চা উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, এবারের চা মৌসুমের নবেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত খরা এবং এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অতিবৃষ্টি চায়ের জন্য উপযোগী আবহাওয়া ছিল না। শুধু জুন মাসে ৩৪০.৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ড. মোহাম্মদ আলীর মতে, রাতে বৃষ্টি ও দিনে রোদ চায়ের জন্য অধিকতর উপযোগী, কিন্তু মে-জুনে দিনে-রাতে অবিরত বৃষ্টিপাতের কারণে চা গাছের কুড়ি তৈরি করতে বাধাগ্রস্ত হয়। এতে চলতি বছর চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বছরের বাকি সময়ের মধ্যে চায়ের উৎপাদন ঘুরেও দাঁড়াতে পারে, এমনটা মনে করেন এই চা বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট ভ্যালি সভাপতি ও জেমস ফিনলের ভাড়াউড়া চা ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী জানান, এ বছর প্রচ- খরার মুখে চায়ের উৎপাদন ব্যাহত হয়। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত মাত্র ২১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। জুলাই-আগস্ট মাসে আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে থাকায় উৎপাদন কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। তবে তা গত বছরের তুলনা প্রায় ৩০ শতাংশ কম।
×