ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৫ আগস্ট ২০২০

ঢাকার দিনরাত

করোনাকালে ঢাকা ছেড়েছে ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। এমন একটি হিসাব ফলাও করে কাগজে এসেছে। মন খারাপ হওয়ার মতোই খবর। ভাগ্যের অন্বেষণে গ্রাম থেকে শহরমুখী হয় মানুষ। আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা এটাই। কিন্তু মহামারী করোনা সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। এক সময় গ্রাম থেকে একটু ভাল করে বাঁচার আশায় যারা শহরে এসেছিল, তারা আবার হয়েছে গ্রামমুখী। বেসরকারী সংগঠন পিপিআরসি ও বিআইজিডির গবেষণার তথ্য, করোনাকালে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে অন্তত ১৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা খরচ, যোগাযোগের ব্যয় এবং অন্য নানামুখী ব্যয় মেটাতে না পেরেই এসব মানুষ ঢাকা ছেড়েছে। বুধবার খবরটি কাগজে পড়েছিলাম। কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখে মনেই হবে না যে ঢাকার মানুষ কমেছে। সেই গায়ে গা লাগা মানুষ। রাস্তায় গাড়ির সারি এবং যানজট। যে কোন মার্কেটে গেলে লাইন, ব্যাংকে লাইন। তার মানেই হলো ঢাকা এত বেশি জনভারাক্রান্ত যে ১৬ কেন, ১৬ দুগুণে বত্রিশ ভাগ মানুষ ঢাকার বাইরে চলে গেলেও এই জনচাপ কমবে বলে বিশ্বাসই হতে চায় না। লঘু চাপে প্রভাবিত সজল রাজধানী একবেলা বৃষ্টি হলে ঢাকা কতখানি বেসামাল বিপন্ন হয়ে ওঠে তার অভিজ্ঞতা আমাদের কম নয়। তাই সাগরে লঘুচাপের কারণে পর পর তিন দিন নানা তালের নানা ছন্দের লঘু-গুরু বৃষ্টিপাত- তাতে রাজধানী অভিধা পাওয়া ঢাকা নামক এই মহাপল্লীটির কী যে নাকাল করুণ দশা, অনেককাল পর আবার আমাদের প্রত্যক্ষ করতে হলো। শুধু কি প্রত্যক্ষ! আমাদের হাড়ে-মাংসে মনেপ্রাণে পুরোদস্তুর বুঝিয়ে দিয়ে গেল। কাগজে কাগজে নাগরিক বিড়ম্বনার ছবি। জলাবদ্ধতা কত প্রকার এবং কী কী- এ নিয়ে এখন এ প্লাস মার্কস পাওয়ার মতো রচনা লিখতে পারবে ক্লাসের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীও। ঢাকাবাসীর নিত্যদিনের দু-চার ঘণ্টা কেড়ে নেয় যে ছিনতাইকারী তার নাম যানজট। হ্যাঁ, এই করোনাকালেও চলছে যানজট। জলজট সম্বন্ধেও মহানগরীর বাসিন্দাদের স্বচ্ছ ধারণা আছে, ভোগান্তির খতিয়ান বড্ড ভারি, তার ভেতর যানজট জলজট সংযোগ হয়ে ‘যানজট’ লাগার বেহাল পরিস্থিতি সম্বন্ধেও উত্তম জ্ঞানার্জিত হলো গত সপ্তাহে। তবে এসবের মাঝেও স্থান-কাল-পাত্র বিচারে বর্ষাও যে বিপন্নতার সমান্তরালে উৎপন্নতার উপলক্ষ হতে পারে; ভোগান্তির পাশাপাশি উপভোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে সেই সত্য উচ্চারণ না করলে ঘোর পক্ষপাতিত্ব হবে। তাই নিবেদন করি সামান্য তার বয়ান। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মোটরগাড়ির আরামপ্রদ সিটে হেলান দিয়ে রাজধানীর অন্যতম প্রধান সড়কের দু’পাশে হাঁটু ডোবানো জলধারায় ঢেউ ওঠা দেখলে স্মৃতিকাতর হওয়া অস্বাভাবিক নয়। অন্যদিকে নগরীর অসুস্থ সড়কসমূহের চোরা খানাখন্দে উন্মুক্ত ম্যানহোলে রিক্সার চাকা আটকে গিয়ে দুর্গন্ধময় নোংরা পানিতে হাবুডুবু খায় সন্তানের সঙ্গে তার জননী। আলোকচিত্রীর ক্যামেরা ক্লিক করতে দেরি করে না। এক হাতে জুতাজোড়া এবং অন্য হাতে উঁচানো ছাতির বাট ধরে সন্তর্পণে ফুটপাথ ঘেঁষে যে-পথচারী হাঁটছিলেন তার সঙ্গে নির্মম রসিকতায় মাতে হঠাৎ পথের একপাশের খানিকটা ফাঁকা পেয়ে জোর গতিতে গাড়ি হাঁকিয়ে দেয়া ফুরফুরে চালক। বেচারা পথচারীর জামাকাপড় জলকাদায় মাখামাখি। অফিস তো আর কামাই দেয়া চলে না দিনের পর দিন। ভিড়েঠাসা বাসে টুপটুপ জলঝরা ছাতি নিয়ে যে অফিসযাত্রী ভিড় ঠেলে উঠতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান ভাবছিলেন, তিনিই আবার ভাগ্যকে দুষলেন জানালার কার্নিশে ভিজে ছাতি ফেলে আসায়। বাস থেকে নেমে অফিস পর্যন্ত কাকভেজা হয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় কী! ছাতির কথা যখন উঠল তখন বলা যায় ঢাকার বাজারে এখন বেশ কদর ও চাহিদা চীনে তৈরি ছাতির। চীনারা জানে তৃতীয় বিশ্বে কিভাবে ব্যবসা করতে হয়। এই মহাভাদরে আবার রাজধানীর সড়কে কারও হাঁক শোনা যায়- ছাতি সারাবেন, ছাতি? নগরবাসীর কাছে রাস্তাঘাট সারানোর বিষয়টিই এই বর্ষায় বড় দাবি হয়ে উঠেছে। তবে বিলক্ষণ তা বর্ষাকালেই নয়, শুকনো সময়ে। অথচ কী এক অজ্ঞাত তাগিদে বর্ষাকালেই রাস্তাঘাটে চলে ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি! মেট্রোরেলের কাজে কারণে ঢাকার অনেক এলাকায় রয়েছে গর্ত। আমাদের উত্তরার হাউজ বিল্ডিং মোড়টি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। পথচারী পারাপারে পদচারী সেতু (ফুট ওভারব্রিজ) তুলে ফেলা হয়েছে মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ার অল্পকালের মধ্যেই। এভাবে বছরের পর বছর গড়িয়ে চলেছে। প্রতি মিনিটে যে মোড় দিয়ে ৫০-১০০ জন মানুষ এপার-ওপার হয়ে থাকেন, যেখান দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকার বাইরে গমনের জন্য সুপ্রচুর বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ব্যস্ত হয়ে ওঠে, সেই মোড়টি এই তিন দিনের বৃষ্টিতে কাদায় মাখামাখি। খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি। রাস্তার এ মাথা থেকে ওই মাথা পর্যন্ত যদি গর্তভরা পানি আর কাদামাখানো পিচ্ছিল পথ মানুষকে বিপদে ফেলার জন্য উন্মুখ থাকে তাহলে তার বিড়ম্বনা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কে বুঝবে? রাতারাতি গর্তগুলো মেরামত করা যাবে না, কিন্তু রাস্তা থেকে কাদা সরানোর উদ্যোগ তো নেয়া যায়? এই কাজ করার দিকে কি কারোরই লক্ষ্য থাকবে না! আমরা কার কাছে নালিশ জানাব? মেয়র, প্রশাসন? বলা দরকার, ঢাকার বৃষ্টি বরাবরই বিড়ম্বনাময়। উপভোগ্য একটা বিষয় কালে কালে হয়ে উঠেছে বিড়ম্বনাময়। এর জন্য আমাদের অপরিণামদর্শিতাকেই দুষতে হবে। অমরা পরিকল্পিতভাবে নগর গড়ে তুলিনি। বরং যথেচ্ছাচার করেছি শহরকে ছড়িয়ে দিয়ে, খালি জমি, জলাভূমি ও নিম্নাঞ্চলকে দস্যুর মতো গ্রাস করে আকাশছোঁয়া সব ফ্ল্যাটবাড়ি বানিয়ে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাও সুষ্ঠু ও উন্নত নয় বলেই অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে ঢাকা। ফলে মানুষের জীবনযাত্রা ভোগান্তিময় হয়ে উঠছে। বিশেষ পাত্তা পাচ্ছে না ভাইরাস! করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যে কমেনি, সেটি একদম মনেই হচ্ছে না। মানুষের ভেতর এই যে গা সওয়া ভাব, সেটি শঙ্কাজনক। কোন রোগের সংক্রমণের সময় শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। সচেতনতার ওপর জোর দেন তারা। করোনাভাইরাসের মতো ঘাতক ব্যাধির ক্ষেত্রে বার বার একই কথা বলা হয়েছে যে, আতঙ্কিত হবেন না, সতর্ক ও সচেতন থাকুন। সুরক্ষিত থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মানুষ আংশিক কিংবা সম্পূর্ণভাবেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলেছে। এটি ভয়ঙ্কর। করোনাভীতির কারণে প্রথম দিকে মানুষ দুশ্চিন্তায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছিল। তখন ঘরে থাকাটাই ছিল নিজেকে রক্ষা করার একমাত্র উপায়। কিন্তু এখন জীবিকার প্রয়োজনে মানুষকে ঘরের বাইরে বেরুতে হয়েছে। তার মানে এই নয় যে আমরা মুক্ত হয়ে গেলাম করোনা থেকে। বহু মানুষ এখন আর মাস্ক পরছেন না। কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্বও বজায় রাখছেন না পরস্পর হতে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। পাঠক তথা দেশবাসীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার। মাস্ক পরা এবং একে অপরের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। তাছাড়া ঘন ঘন অন্তত কুড়ি সেকেন্ড ধরে দুই হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। এর অন্যথা হবে বিপজ্জনক। নিজের ও নিজের পরিবারের কল্যাণ চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের কোন বিকল্প নেই। মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে করোনা পরীক্ষা করাতে পারে সেজন্য বুধবার ফি কমানোর ঘোষণা এসেছে। এখন হাসপাতালে গিয়ে মাত্র ১০০ টাকায় করোনা পরীক্ষা করানো যাবে। আর বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলমান মহামারীকালে করোনা মোকাবেলার প্রথম শর্তই হচ্ছে নমুনা পরীক্ষা করানো। বেশি বেশি পরীক্ষা করলে রোগ শনাক্তের ক্ষেত্রে অগ্রগতি আসে। আর তাহলেই রোগ প্রতিরোধ ও মোকাবেলা জোরদার করা সম্ভব। পরীক্ষা, শনাক্ত, আক্রান্তের উৎস বের করা এবং আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা- এই চার মূল কৌশলের মধ্যে পরীক্ষার হার এখনও দুঃখজনকভাবে সীমিত। উবারের অভিজ্ঞতা শুক্রবার প্রবল বর্ষার ভেতর সন্ধ্যায় সপরিবারে ধানম-িতে যেতে হয়েছিল কন্যার বাসায় একটি পারিবারিক আয়োজনে। সাধারণত উবারে উঠলে আমি চালকের সঙ্গে দুচারটে কথা বলি। আর্থ-সামাজিক অবস্থা বুঝতে চাই। কিন্তু উবার চালক তার গাড়িতে রাখা স্যানিটাইজারের শিশি খালি হয়ে যাওয়ার পরও নতুন কেনেননি দেখে বিরক্ত হলাম। ফলে তার সঙ্গে আর কথা বলতে ইচ্ছে হলো না। ফেরার সময় যে উবার চালক আমাদের উত্তরায় নিয়ে এলেন তিনি গাড়ি জমা দেন আমাদের বাসার কাছাকাছিই। তবু যাওয়ার সময় যে ভাড়া লেগেছিল, ফেরার বেলায় তা থেকে ২০০ টাকা বেশি লাগল? এর কারণ কী হতে পারে? সমদূরত্বে ভাড়ার এই বিপুল হেরফের কেন! ভাস্কর মৃণাল হক রবিবার শাহবাগে যাওয়ার সময়ে চোখ চলে গেল ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের মোড়ে ট্রাফিক আইল্যান্ডে রাজসিক নামের ভাস্কর্যের দিকে। ঢাকার ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ি ওই ভাস্কর্যে দৃষ্টিনন্দন ভাবেই প্রকাশিত। মাত্র একদিন আগে এই ভাস্কর্যটির শিল্পী মারা গেছেন, সেকথাই ভাবছিলাম ভাস্কর্যটি দেখার সময়। চারুকলায় যখন মৃণাল হক শিক্ষার্থী ছিলেন তখন থেকেই মুখচেনা। তবে আমাদের সময়ে সুপরিচিত ভাস্কর ছিলেন শামীম শিকদার। আর খুব গুণী ভাস্কযশিল্পীর নাম বললে অবধারিতভাবে নভেরার কথা বলতে হবে। মৃণাল হক অকালপ্রয়াতই হলেন। ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে তাঁর নির্মিত ভাস্কর্য। তার মানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ ছিল। অনেক সমালোচনাও হয়েছে তাঁর কাজ নিয়ে। শিল্পের গণগত মান তিনি অনেক সময়েই বজায় রাখতে পারেননি। হয়তো বেশি কাজ সাপ্লাই দিতে হয়েছে বলেই। অনুজপ্রতিম একজন চিকিৎসক- লেখকের লেখা শেয়ার করছি পাঠকের সঙ্গে। মিরাজ উল ইসলাম লিখেছেন- ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত শিল্পী মৃণাল হকের ভাস্কর্যটি যখন অপসারণ করা হয়, তখন এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়ে পত্রিকায় লেখালিখি করেছিলাম। কারণ, শিল্পের অপমান সহ্য হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে আমাদের কাছের মানুষ শিল্পী মৃণাল হকের প্রতি আমার ‘অভিমান’ ছিল। তা তাঁকে বলেছিও। তা হলো, আমাদের অবহেলিত ভাস্কর্য শিল্পে নান্দনিক অবদান রাখার অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও হাতে গোনা কয়েকটি কাজ ছাড়া তিনি কেন কেবলমাত্র ‘কমার্শিয়াল’ ঘরানাতেই মনোযোগী হলেন! উত্তরটা সহজে অনুমেয়। নিউইয়র্কে ও ঢাকা শহরে মৃণাল হক ছাড়া কোন কিছুই চোখে পড়বে না। কাজের মান ও সৌন্দর্য যেমনই হোক, খুব কম ভাস্করের ভাগ্যে এমন ‘সৌভাগ্য’ জোটে। কিন্তু যারা শিল্পকলার ছাত্র তারা অন্তত জানেন মৃণাল হক কতবড় শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে জন্মেছিলেন। একটা ছোট উদহারণ দেই। ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃণাল হক ঢাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র। তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করেছিল ‘পঞ্চম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী’। সেই প্রদর্শনীর ক্যাটালগে স্থান দেয়া হয়েছিল কেবলমাত্র বাছাই করা কিছু নির্বাচিত শিল্পীর কাজ। সেখানে শিল্পী কামরুল হাসান, মোহাম্মদ কিবরিয়া, রশীদ চৌধুরী, নিতুন কুণ্ডু, কালীদাস কর্মকার, হামিদুজ্জামান প্রমুখ দেশবরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছিল তরুণ প্রতিভাবান শিল্পী মৃণাল হকের ‘প্রেমের বারতা’ শিরোনামে মেটাল প্যানেলে করা মিক্স মিডিয়ার কাজটি। বহু আগে সেই ক্যাটালগসূত্রে আমি চিনেছিলাম মৃণাল হকের নাম। সেই সঙ্গে তার গড়া মতিঝিলের ‘বক’ দেখে আশ্বস্ত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম তাঁর মতো ভাস্করেরা পুরো দেশজুড়ে নন্দিত ব্যতিক্রমী সৌন্দর্যের অসংখ্য ভাস্কর্য তৈরি করে সাধারণ মানুষের ভেতরের কূপম-ূকতা হটিয়ে দেবেন। কারণ এই কাজ একমাত্র ভাস্কররাই করতে পারেন। অন্য কোন শিল্প মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। মৃণাল হক ও তাঁর প্রতিভা দুটোই আজ হারিয়ে গেল শিল্পীর অকস্মাৎ মৃত্যুতে। ’ সর্বশেষ গতকাল সোমবার প্রকাশক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ সভা করেছে সামনের বছরের একুশের বইমেলা বিষয়ে। আজ সভার আলোচনা সম্পর্কে জানতে পারব। ঢাকায় মাসব্যাপী যে দুটি বর্ণিল ইভেন্ট হয় ফি-বছর তার ভেতর অমর একুশে গ্রন্থমেলার তাৎপর্য ভিন্ন রকম। আমরা চাই বইমেলা অনুষ্ঠিত হোক। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁশিয়ার করে দিয়েছে করোনা প্রায় দুবছর থাকবে। তাদের কথাবার্তা নিয়ে হাস্যরস তো কম হলো না। তারপরও যদি ধরে নিই এক বছর থাকবে করোনাভাইরাস তাহলেও তো ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেটি পড়ে যায। সামনের শীতে করোনার শক্তিমান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। বইমেলা বা যে কোন মেলাতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় কি সম্ভব? সামনের দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। ২৩ আগস্ট ২০২০ [email protected]
×