ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদার সাফাই গাইতে খুনের দায় নিচ্ছে বিএনপি নেতারা

প্রকাশিত: ০০:০২, ২৪ আগস্ট ২০২০

খালেদার সাফাই গাইতে খুনের দায় নিচ্ছে বিএনপি নেতারা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বিএনপির নেতারা খুনের দায় নিচ্ছে’। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমান স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসসর। পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতেই তথ্যমন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারের সদস্যদের এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শহীদ আইভি রহমানসহ সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে কাগজে দেখলাম, যখন জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে বেগম খালেদা জিয়াকেও ২১ আগস্টের হামলার বিচারের আওতায় আনা হোক, তখন মির্জা ফখরুল সাহেব তার নেত্রীকে রক্ষা করার জন্য বিরাট এক লম্বা বিবৃতি দিয়েছেন।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সেদিন মুক্তাঙ্গনে সভা করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেখানে গ্রেনেড হামলা চালানো সহজ হতো না, সেজন্যই অনুমতি দেয়া হয়নি। সেটি সহজেই অনুমেয়। পরবর্তীতে ২১ আগস্ট সকাল বেলা বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হলেও বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশের ক্ষেত্রে সব সময়ের মতো আশপাশের ভবনগুলোতে পাহারায় থাকা আমাদের দলের নেতাকর্মীদের সেদিন পুলিশ থাকতে দেয়নি। গ্রেনেড হামলার পর আহতদের সাহায্য করার জন্য যারা এগিয়ে এসেছে, তাদের ওপর লাঠিচার্জ করা হয়েছে, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাতে তৎকালীন সরকারের নির্দেশনায় সেখানে পানি ছিটিয়ে সমস্ত আলামত নষ্ট করা হয়েছে। এমনকি, অবিস্ফোরিত গ্রেনেডগুলো সংরক্ষণ করার কারণে এক সেনা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। কেন? আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান গ্রেনেড হামলায় আহত সাক্ষী হিসেবে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তার পুত্রের মাধ্যমে এই হামলা পরিচালনা করেছিল। আজকে তাই ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং ঠিক বিচারের জন্য জনগণের দাবি হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকেও হুকুমের আসামি করা প্রয়োজন। অন্যথায়, এ বিচার সম্পন্ন হবে বলে জনগণ মনে করে না। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকা-কে উপহাস করার জন্য, হত্যাকারীদের উৎসাহিত করার জন্য নিজের জন্মের তারিখটা বদলে হঠাৎ ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৯৫ সালে। দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বাড়ির দুয়ারে তাকে সমবেদনা জানানোর জন্য গিয়েছিলেন, তিনি বাড়ির দুয়ার খোলেন নাই। আমাদের দেশে শত্রু গেলেও বাড়ির দুয়ার খোলে। বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারেই তার পুত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়েছে, তা আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট।’ মন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব, আপনার নেত্রীর পক্ষে দয়া করে সাফাই গেয়ে নিজেদের গায়ে কাদা মাখবেন না, খুনের দায়ভার নেবেন না। আপনারা যে খুনের রাজনীতি করেন এবং খুনের রাজনীতির ওপরই আপনাদের দল প্রতিষ্ঠিত, সেই কালিমা-গ্লানি থেকে মুক্ত হতে হলে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া প্রয়োজন। দয়া করে এই ধরনের বিবৃতি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাবেন না।’ সভার বিশেষ অতিথি পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম তার বক্তব্যে বলেন, ‘শেখ হাসিনার ভাগ্যের সঙ্গে এদেশের সকল মানুষের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এ কারণেই সৃষ্টিকর্তা বার বার তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।’ আইভি রহমানকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তিনি বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও তাঁর সহধর্মিণী আইভি রহমান দেশের রাজনীতিতে মহানুভবতা ও ত্যাগী নেতৃত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত। আইভি রহমান পরিষদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আকরাম হোসাইনের সভাপতিত্বে ও পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আখতারুজ্জামান খোকার পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ), আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম প্রমুখ।
×