বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো অভিযোগ করে বলেছেন, তার দেশের সীমান্তে সৈন্য দল গঠনের চেষ্টা করছে ন্যাটো। তবে ন্যাটোর পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। লুকাশেঙ্কো দাবি করেন, ন্যাটো পোল্যান্ড ও লিথুনিয়ায় সৈন্য বাহিনী মোতায়েন করেছে। গার্ডিয়ান ও আলজাজিরা।
এদিকে সীমান্তে ন্যাটোর সৈন্য মোতায়েনের ঘটনায় লুকাশেঙ্কো তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে ওই অঞ্চলে সৈন্য বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বিভাগ জানিয়েছে, শনিবার ৬৫ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পোল্যান্ড সীমান্ত গ্রোদনোতে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, গত ৯ আগস্টের নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে ষষ্ঠবারের মতো তিনি বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে সম্প্রতি দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। তিনি তার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভকে পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। এরপর তিনি দেশটির সীমান্ত এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। এর আগে তিনি জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার টেলিফোনে কথা হয়েছে, পুতিন তাকে সীমান্ত রক্ষায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সম্প্রতি সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে লুকাশেঙ্কো জানান, তিনি তার সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৯ আগস্টের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেলারুশে বিক্ষোভ চলছেই। লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগ দাবি করে শনিবারও রাজধানী মিনস্কে জড়ো হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। প্রায় ২৬ বছর ধরে বেলারুশ শাসন করছেন লুকাশেঙ্কো। তার দাবি ন্যাটো ব্লক বেলারুশকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। তারা মিনস্কে একজন নতুন প্রেসিডেন্টকে বসাতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘পোল্যান্ড এবং লিথুনিয়াও তাদের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করছে।’ তিনি এর সঙ্গে যোগ করেছেন, তার দেশের সেনাবাহিনীকে পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। লুকাশেঙ্কোর অভিযোগ, তার দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে ন্যাটো। তিনি বলেন, ‘দেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নিরাপত্তা প্রধানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ তবে তার এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ন্যাটো। তারা বলছে, বেলারুশ বা অন্য কোন দেশের জন্য ন্যাটো হুমকি নয়। ওই অঞ্চলে তাদের সৈন্য গঠন করা হচ্ছে না। ন্যাটোর দাবি, তারা কঠোর প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপে বিশ্বাসী। এদিকে লিথুনিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাওসেদা এএফপিকে বলেন, বাইরের কাল্পনিক হুমকি সম্পর্কে ভিত্তিহীন বিবৃতি দিয়ে যে কোন মূল্যে বেলারুশের আন্তর্জাতিক সমস্যা থেকে সবার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অপরদিকে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, সীমান্তে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে বেলারুশ যে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক এবং তাদের এমন কথায় পোল্যান্ড বিস্মিত। পোল্যান্ড কখনই এ ধরনের মনোভাব পোষণ করে না।
