ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বুধবার পর্যন্ত ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস

অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলীয় ১২ জেলায় লাখো মানুষ পানিবন্দী

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৩ আগস্ট ২০২০

অস্বাভাবিক জোয়ারে উপকূলীয় ১২ জেলায় লাখো মানুষ পানিবন্দী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ, উপকূলে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড় এবং বন্যার কবলে স্থবির হয়ে পড়েছে দেশ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাগরে লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এরই প্রভাবে উপকূলীয় ১২ জেলায় অস্বাভাবিক জোয়ারে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি পৌঁছে গেছে শহরেও। এই কারণে পঞ্চম দফায় নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি প্রলম্বিত হয়ে পড়ছে। ভারি বৃষ্টিপাত আগামী বুধবার পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। প্রকৃতিতে এখন চলছে শরতকাল। ঋতু বৈচিত্র্যের ধরণ অনুযায়ী ভাদ্রের এই সময়ে মেঘ ও রোদের খেলা চলে প্রকৃতিতে। কখনও হাল্কা বৃষ্টি। পরক্ষণে আবারও ঝলমলে রোদ চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার কথা। কিন্তু প্রকৃতি দেখে বোঝার উপায় নেই এখন শরতকাল। আষাঢ়ের রূপ নিয়েছে যেন। শনিবার সকাল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে রিমঝিম বৃষ্টির নাচন শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে কখনও মুষলধারে ঝরছে। বিরামহীন এই বৃষ্টির ধরন দেখে মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন আষাঢ়ে ফিরে গেছে। অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেই বন্যা পরিস্থিতি প্রলম্বিত হয়ে পড়ছে। নদীর পানি পঞ্চম দফায় বেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু ও লঘুচাপের প্রভাবে আরও কয়েকদিন এমন বৃষ্টি হবে। তারা জানায়, ইতোমধ্যে লঘুচাপের প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু অতিমাত্রায় জলীয়বাষ্প বয়ে আনার কারণে আকাশে মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে বৃষ্টিপাতের মাত্রার আরও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে টানা বৃষ্টিপাতে বেহাল দশা শুরু হয়েছে। সারাদেশের জীবনযাত্রা বলতে গেলে অচল। শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীতে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতের কারণে সকাল থেকেই দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন রাজধানীবাসী। দীর্ঘসময় ধরে বৃষ্টির কারণে অলিগলিসহ রাজধানীর বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রচ- ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। জলাবদ্ধতার কারণে যানজট দেখা দেয় কোথাও কোথাও। বৃষ্টিতে ভিজে অনেককে অফিসে পৌঁছাতে হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎই গণপরিবহনের স্বল্পতা দেখা দেয়ায় এবং ড্রেনের ময়লা পানি মিশে একাকার হয়ে এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। আবহাওয়াবিদরা জানান, দফায় দফায় সাগরে মৌসুমি বায়ুর সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলেই প্রচুর পরিমাণ জলীয়কণা দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন করছে। একইসঙ্গে সারাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। দুই মিলে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বায়ু চাপের আধিক্যের কারণে উপকূলীয় জেলায় ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। একইসঙ্গে বায়ু তাড়িত জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক উচ্চতায় পৌঁছানোর কারণে উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখ লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। ভেসে গেছে হাজার হাজার পুকুর ও ঘেরের মাছ। ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে আছে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় লোকজন উঁচু বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। এরই মধ্যে আবহাওয়া অফিস জানায়, লঘুচাপের প্রভাব কমে গেলে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। ফলে আরও কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সরে গেছে। তবে এর প্রভাবে জলীয় বাষ্প দেশের অভ্যন্তরে আসছে। তা ছাড়া মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। আর এই কারণে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। সাগর এলাকায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও স্থলভাগে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। তা ছাড়া এখন অমাবস্যার সময়। এ সময় জোয়ার কিছুটা বেশি হয়। যেহেতু এখন বৃষ্টির মাত্রা বেশি, তাই দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট বেশি জোয়ার হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, এবার শরতের শুরু থেকেই সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শরতের প্রথম দিন থেকেই সারাদেশে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তবে এই সময়ে রাজধানী ঢাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম ছিল। শনিবার সকাল থেকেই হঠাৎ বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যায়। তারা জানায় আজ রবিবারের মধ্যে আরও একটি লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা প্রবল। এ কারণে বৃষ্টির প্রকোপ এখনি কমছে না। আগামী বুধবার নাগাদ টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। গত ২০ মে রাতে আঘাত হানে দেশে শতাব্দীর সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। ওইদিন এর তা-ব প্রায় সারাদেশের ওপর চলে। কিন্তু আমফান চলে গেলেও বৃষ্টির ধারা এখনও থামেনি। অতি বৃষ্টির কারণে এবার দেশে আগাম বন্যা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর মধ্য জুলাইয়ে দেশে বন্যা শুরু হলেও এই অতি বৃষ্টির কারণে জুনের ২৬ তারিখ থেকে বন্যার কবলে পড়েছে দেশ। বৃষ্টির কারণেই কিন্তু এবার বন্যার যেন শেষ নেই। একবার পানি কমছে তো আবার বাড়ছে। কমা বাড়ার খেলায় ইতোমধ্যে বন্যা প্রলম্বিত হয়ে পড়েছে প্রায় দুই মাস। এরই মধ্যে গত এক সপ্তাহ দেশের সব জেলা থেকে বন্যার পানি নেমে যায়। কিন্ত শরতের শুরুতে এবার আষাঢ়ের ধারা শুরু হওয়ার কারণে প্রধান নদ-নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। ফলে এবার বন্যা পরিস্থিতি আরও প্রলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারি বৃষ্টির কারণে আরও এক দফা বন্যা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে এবার। শরতের শুরুতে টানার বর্ষণের কারণে নদীর পানি আবার বাড়ছে। উপকূলীয় জেলাগুলোয় জোয়ারের পানি গ্রাম ছাপিয়ে শহর পর্যন্ত চলে এসেছে। চট্টগ্রাম, পটুয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলার বড় অংশ সরাসরি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এই জোয়ারের কারণে নদী থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে পারছে না। আবহাওয়া অফিস বলছে কয়েকমাস ধরেই দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই বলতে গেলে বৃষ্টির এ ধারা শুরু হয়েছে। কিন্তু মে মাসের শেষের দিকে আমফান চলে যাওয়ার পর থেকে তা একনাগাড়ে অব্যাহত আছে। তারা জানায়, গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসেই দেশের বৃষ্টিপাত গত ৩০ বছরের গড়ের তুলনায় বা স্বাভাবিকের তুলনায় ছিল বেশি। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টির এই ধারা কমবেশি অব্যাহত থাকতে পারে। অক্টোবরের মাঝামাঝি নাগাদ দেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়ার আগে এর প্রভাবে কমবেশি বৃষ্টিপাত থাকবে বলেও তারা জানায়। এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বারবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পঞ্চম দফায় আবারও নদীর পানি বেড়ে যাচ্ছে। গত শুক্রবার যেখানে ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর কমছিল সেখানে শনিবার এই নদীর পানি আবারও স্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। আজকের মধ্যে পানি বাড়তে পারে। একইসঙ্গে বাড়তে শুরু করেছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মেঘনা অববাহিকার নদীসমূহের পানি। এদিকে পদ্মা নদীর পানি বাড়ার কারণে দেশের মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ পশ্চিম এবং দক্ষিণ মধ্য উপকূলীয় অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি আবারও স্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে। শনিবার আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে জানানো হয়, মধ্যপ্রদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্পষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে ভারতের মধ্যপ্রদেশের পশ্চিম ভাগ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানোর খবর বরগুনা ॥ বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে বরগুনার শহরসহ বিষখালী নদীর মাঝেরচর, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বরগুনা শহর, পাথরঘাটা পদ্মা, বদরখালী, মাঝেরচর, গুলিশাখালী, পাতাকাটা, ফুলঝুড়ি বাজার পুলিশ ক্যাম্প, স্বাস্থ্য ক্লিনিক, লঞ্চঘাট ফেরিঘাট খেয়াঘাটসহ পানিতে প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। ভোলা ॥ এদিকে অব্যাহত ২ বেলা অতি জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বর্তমানে ভোলার পূর্ব ইলিশার ১২টি গ্রামের ৪ হাজার পরিবার পানি বন্দী মানুষ চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। এসব পরিবারে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় আরও অন্তত ২০ গ্রাম জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। বাউফল ॥ বাউফলে অবিরাম বর্ষণ আর অমাবস্যার জোয়ারের পনিতে অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন অর্ধ লাখ মানুষ। ভেসে গেছে সহস্রাধিক ঘের ও পুকুরের মাছ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর কুলবর্তী নাজিরপুর, কেশবপুর, ধুলিয়া, কাছিপাড়া ও বগা ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম গত ২ দিনের বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে যায়। বাউফলের উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, সহস্রাধিক পুকুর ও ঘের থেকে মাছ ভেসে গেছে। প্রাথমিকভাবে ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও নিম্নাঞ্চলের স্যানিটেশন, আমনের বীজতলা ও সবজি খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বগা ফেরিঘাট ও নিমদী লঞ্চঘাট পল্টুনের এ্যাপ্রোচ ও গ্যাংওয়ে ডুবে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে। লক্ষ্মীপুর ॥ সাগরে বিরূপ আবহাওয়ায় লক্ষ্মীপুর কমলনগর মতিরহাট ও সদরের বাত্তির খাল এলাকায় চার সহস্রাধিক বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। হাজার হাজার একর আউশ এবং আমন বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নে বাত্তির খাল এলাকার বাঁধটি ভেঙ্গে দুই সহস্রাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে উড়তি আউশ, আমন বীজতলাসহ প্রায় দুই হাজার একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউপি চেয়ারম্যান আবু মোঃ ইউছুফ ছৈয়াল। অপরদিকে সবচেয়ে বেশি কমলনগরের ক্ষতিগ্রস্ত জয়বাংলা খালের পাশে মতিরহাট বাজারের পূর্ব পাশ থেকে মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ রাস্তার ছয়টি স্পটে কয়েক শ’ ফুট পাকা রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে মেঘনার প্রচ- জোয়ারের পানিতে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কমলনগরের কালকিনি ইউনিয়নের পুরোটাই বর্তমানে পানিতে ভাসছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে মতিরহাট বাজার, মতিরহাট হাইস্কুল, জেলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, মাতব্বরহাট, নবীগঞ্জ, বলিরপুল, হাজী মার্কেট ও মিয়া মার্কেট। কালকিনি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক চৌধুরী জানান, বর্তমানে মতিরহাট বাজারের দোকান-পাট, আশপাশের এবং তার নিজের বাড়ি ভিটা বর্তমানে প্রায় আড়াই ফুট নিচে তলিয়ে গেছে। আসবাবপত্র ভিজে গিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এভাবে এলাকার প্রায় দুই হাজারের বেশি পরিবারের বাড়িঘর ডুবে গেছে। এতে অনেকে বাড়ির চুলার পাতিলও বসাতে পারেনি। এদিকে এলাকায় মেঘনার ভাঙ্গন তীব্রতর থেকে তীব্রতর হয়েছে। মেঘনার পাড়ের হাজার হাজার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। মতিরহাট বাজারের বাঁধটি বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে। অপরদিকে দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে মানুষের কস্টের সীমা বহুগুণ বেড়ে গেছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে সরকার ব্যবস্থা না নিলে এলাকায় চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে। এদিকে এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউদ্দিন বাপ্পীকে বার বার ফোন দিয়েও তার সাক্ষাত পাওয়া যায়নি।
×