ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছোট পর্দার বড় তারকারা

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ২০ আগস্ট ২০২০

ছোট পর্দার বড় তারকারা

করোনা স্থবিরতা কাটিয়ে কিছুটা প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরেছে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম টেলিভিশন নাটকে। গত ২২-৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের টিভি নাটকের শূটিং বন্ধ রাখে সংগঠনগুলো। এরপর কয়েক দফায় সরকারী ছুটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে শূটিং বন্ধের সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ শর্ত সাপেক্ষে ১৭ মে থেকে চলছে টেলিভিশন নাটকের শূটিং। তখন অনুমতি মিললেও অনেক তারকা শিল্পীই ঝুঁকি নিয়ে শূটিংয়ে অংশ নেননি। তাই ঈদ-উল-ফিতরে হাতেগোনা কিছু নাটক প্রচার হয়েছে। তারমধ্যে কিছু পুরনো নাটকও ছিল। ঈদ-উল-আজহায় ঝুঁকি নিয়েই কাজে নামতে বাধ্য হয় শিল্পীরা। কারণ দীর্ঘদিন শূটিং বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন তারা। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শূটিংয়ে অংশ নেন। ঈদ-উল-আজহায় বেশ কিছু নাটক প্রচার হয়েছে এ সময়ের ছোট পর্দার ব্যস্ত তারকা শিল্পী মেহজাবীন চৌধুরী, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আফরান নিশো, ফারহান আহমেদ জোভান ও তানজিন তিশার। তবে বিগত ঈদের তুলনায় করোনাকালে ঈদে হাতেগোনা কিছু নাটকে কাজ করেন তারা। অনেক শিল্পীই চাঁদ রাত পর্যন্ত শূটিং করলেও চিরচেনা সেই ব্যস্ততা এবার ছিল অতীত। ২৭ জুলাই পর্যন্ত নাটকের শিডিউল দেয়া থাকলেও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে শূটিং বন্ধ করে দিতে হয় নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসানের। গেল কয়েক বছর ধরে ছোট পর্দায় রাজত্ব করছেন নন্দিত অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। সু-অভিনয় গুণে ছোট-বড় সবার প্রিয় হয়েছেন তিনি। করোনার মধ্যে তিনি ১২টি নাটকে অভিনয় করেছেন। বিগত বছরগুলোতে যেখানে চাঁদরাত পর্যন্ত শূটিংয়ের ব্যস্ততা থাকত সেখানে ঈদ-উল-আজহায় এক ডজন নাটক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। এ নাটকগুলোর মধ্যে প্রাণপ্রিয়, নির্বাসন, অবাক প্রেম, কেন, স্বার্থপর, মিঃ এ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ, একাই একশো নাটক কয়টি দর্শকমহলে সাড়া ফেলে। মেহজাবীন আনন্দকণ্ঠকে জানান, এবারের ঈদে প্রচার হওয়া অধিকাংশ নাটক থেকেই বেশ সাড়া পাচ্ছেন। ঈদের ছুটি কাটিয়ে এরইমধ্যে অনেকেই শূটিং শুরু“করলেও এখনই শূটিংয়ে ফিরছেন না তিনি। করোনাকালে বেশ ঝুঁকি নিয়েই কাজগুলো করেছেন। আরও কিছু দিন দেখে শূটিংয়ে অংশ নেবেন। এই অভিনেত্রীর ভাষায় বর্তমানে অনেক ভাল ভাল নাটক নির্মিত হচ্ছে। ঈদ নাটকের মানও ঠিক থাকছে। মেহজাবীন ছোট পর্দায় বেশ দাপুটের সঙ্গে কাজ করছেন। তার দর্শকরা বড় পর্দায় দেখার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তিনি এখনই প্রস্তুত নন। জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ঈদ-উল-আজহার বেশকিছু নাটকে অভিনয় করেছেন। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে মিজানুর রহমান আরিয়ানের প্রাণপ্রিয়, ছায়াছবি, জানবে না কোনদিন ও স্বার্থপর, রহমতুল্লাহ তুহিনের ওয়ান এ্যান্ড অনলি, সঞ্জয় সমাদ্দারের অপরূপা, পলিটিক্স ও আপনার ছেলে কি করে?, সোহেল আরমানের মিথ্যে প্রেম, রুবেল হাসানের মিঃ এ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ ও ডোন্ট টাচ মি.সহ বেশকিছু নাটক। করোনার কারণে ঈদে অনেক কম নাটকে কাজ করেন তিনি। রোমান্টিক নায়ক হিসেবে অপূর্বর ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে। দর্শকের আগ্রহের কারণেই তাকে রোমান্টিক নাটকে বেশি দেখা যায় বলে আনন্দকণ্ঠকে জানান। দর্শকপ্রিয় আরেক অভিনেতা আফরান নিশো এই ঈদে বিভিন্ন নাটকে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে প্রমাণ করেছেন কেন তিনি এই সময়ের নন্দিত অভিনেতা। ‘ইতি, মা ও ‘ভিকটিম’, দর্শকমহলে সাড়া জাগানো টেলিফিল্ম দুইটির সুবাদে প্রচুর সমাদৃত হয়েছেন তিনি। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ঈদে সবচেয়ে কম নাটকে কাজ করেছেন ছোট পর্দার প্রিয়মুখ ফারহান আহমেদ জোভান। করোনার কারণে মাত্র ২১টি নাটক করেছেন তিনি। কম কাজ করলেও ভাল হয়েছে নাটকগুলো। তাতেই তিনি সন্তুষ্ট। মানেও বেশ নজর ছিল তার। জোভান আনন্দকণ্ঠকে বলেন, করোনার কারণে বিগত বছরের তুলনায় এবার মাত্র একুশটি নাটকে কাজ করেছি। তবে কম কাজ করলেও নাটকগুলো মানসম্মত হয়েছে। বেশ সাড়া পাচ্ছি নাটকগুলো থেকে। বেশ কয়েক বছর ধরে শুনতে হচ্ছে ঈদ নাটকের আকর্ষণ হারাচ্ছে। জোভানের কাছে প্রশ্ন রাখলে বলেন, একেবারে অস্বীকার করা যাবে না তবে কিছুটা কমেছে। এরমধ্যেও ভাল কিছু নাটক নির্মাণ হচ্ছে। যোগ করে এ অভিনেতা আরও বলেন, ঈদে আমার দেখা আশফাক নিপুণের ভিকটিম ও ইতি, মা নাটক দুটি অনেক ভাল লেগেছে। ঈদের পর এখনও শূটিংয়ে ফিরেননি জোভান। চলতি মাস পুরোটাই বিশ্রাম করে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে কাজে ফিরবেন। তবে কাজের সংখ্য কম থাকবে, নজর থাকবে মানে। দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। ছোট পর্দার এ ব্যস্ত তারকা চার মাস ধরে নাটকের কোন শূটিং করছেন না। শূটিংয়ের অনুমতি মিলেছে অনেক আগেই তারপরও এখনই তিনি শূটিংয়ে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শূটিংয়ে ফিরবেন। তবে ঘরবন্দী থাকলেও সচেতনামূলক কাজে অংশ নিয়েছেন ঘরে থেকেই। টিভি নাটকের এ ব্যস্ত তারকা ছোট পর্দায় বর্তমানে কিছুটা অনিয়মিত। চলচ্চিত্রর কারণে কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। তবে বিশেষ দিবসের নাটকে দেখা যায় তাকে। কিন্তু এবার তা দেখা যায়নি। তিশা আনন্দকণ্ঠকে বলেন, ‘দীর্ঘ চার মাস ধরে শূটিং করছি না। কবে নাগাদ করতে পারব তাও জানি না। এখনও দেশে করোনার ঝুঁকি রয়েছে। তাই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শূটিংয়ে অংশ নিচ্ছি না। কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ শুনতে হচ্ছে এখনকার নির্মাতা ও অভিনয় শিল্পীরা প্রেমের গল্পে সীমাবদ্ধ। বিগত বছরেও তা লাখ করা গেছে। তবে এবারের ঈদ-উল-আজহার নাটকে কিছুটা ভিন্নতা এসেছে। প্রেমের চেয়ে গল্পনির্ভর নাটকের কদর বেড়েছে। বিগত বছর থেকে এবারের ঈদ নাটক ছিল গল্পনির্ভর। করোনাকাল কাটিয়ে আবারও মুখরিত হবে বিনোদনপাড়া এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
×