ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাক্ষাতকারে অমর্ত্য সেন

সরকারের বিরুদ্ধে বললেই হয়রানির শিকার হতে হয়

প্রকাশিত: ২৩:১২, ২০ আগস্ট ২০২০

সরকারের বিরুদ্ধে বললেই হয়রানির শিকার হতে হয়

নরেন্দ্র মোদি সরকারের নীতি ভারতকে ক্রমাগত পেছনের দিকে নিয়ে চলায় সেখানে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এ সব কথা বলেন। রয়টার্স। অমর্ত্য সেন বলেন, ‘মোদি সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন চলছে। সরকারের সমালোচনা করলে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়া জেলে যাওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেড়ে যায়। মৌলিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে প্রতিবেশী দেশের তুলনায় দিন দিন পিছিয়ে পড়েছে ভারত। ভারতে এখন গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, একদমই না। স্বাধীনতার পর শুরুতে আমাদের এখানে গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি দিন দিন অনেক খারাপ হচ্ছে। এখন যদি আপনি সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কথা বলেন তবে আপনাকে হায়রানির শিকার হতে হবে, হয়তো বা জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে’। সাক্ষাতকারে অমর্ত্য সেন তার লেখা বই ‘দ্য আইডিয়া অব জাস্টিস’ এ নীতি ও ন্যায় ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসন ব্যবস্থায় এই নীতি ও ন্যায়ের কতটা প্রয়োগ হচ্ছে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত একদমই হচ্ছে না। আপনি যদি ভারতের সংখ্যালঘুদের দিকে তাকান তবে দেখবেন গত কয়েক বছরে তারা খুবই কঠিন সময় পার করছেন। দেশ এখন সংখ্যাগরিষ্ঠদের সরকার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু তাতে তো কোন পার্থক্য হওয়ার কথা না। দেশে অন্য ধর্মের মানুষদের তুলনায় হিন্দু বেশি। এটা যদি সংখ্যালঘুদের দমনে ব্যবহার করা হয়, তাদের মত প্রকাশ করতে না দেয়া হয়, সব জায়গায় তাদের বঞ্চিত করা হয়, সেটা ঠিক হবে না। কিন্তু সেটাই হচ্ছে, যেমনটা সম্প্রতি বাবরি মসজিদের ক্ষেত্রে হয়েছে বা কাশ্মীরসহ অন্যান্য বিষয়ে হয়েছে। কাশ্মীর আগে একটি রাজ্য ছিল। হঠাৎ করেই সেটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে’। ভারতের প্রতিটি লোকের সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হিন্দুরা যেমন ভারতের নাগরিক ঠিক, একইভাবে মুসলমানরাও ভারতের নাগরিক। মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহরু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অন্যরা বারবার এ বিষয়টিতে জোর দিয়েছেন’।
×