ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিফাত ও শিপ্রার মামলা নেয়নি দুই থানা

কার জিঘাংসার শিকার সিনহা- নেপথ্য কথা জানতে চায় সবাই

প্রকাশিত: ২২:৪৩, ২০ আগস্ট ২০২০

কার জিঘাংসার শিকার সিনহা- নেপথ্য কথা জানতে চায় সবাই

চট্টগ্রাম অফিস, স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ তর্ক-বিতর্ক বা বাগ্বিতণ্ডার কোন ঘটনাই ছিল না। এরপরও পুলিশ কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হাত তুলে গাড়ি থেকে নেমে আসার নির্দেশ দেন। সিনহা ঠিকই হাত তুলে গাড়ি থেকে নামছিলেন। কিন্তু সিনহা তার শরীর গাড়ি থেকে পুরোপুরিভাবে বের করতে না করতেই লিয়াকত গুলি করলেন। মুহূর্তেই পর পর আরও তিনটি গুলি। চারটি গুলিই অব্যর্থ। মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন সিনহা। গুলিবিদ্ধ শরীর থেকে গল গল করে রক্ত বেরিয়ে আসছে। এ অবস্থায় লিয়াকত তার বুট জুতা পরিহিত পা দিয়ে সিনহার শরীর চেপে ধরলেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির আওতাধীন শামলাপুর চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটার পর ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের রিপোর্ট দিয়েছে। নিহত সিনহার বোনের দায়ের করা মামলায় বর্তমানে তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিয়োগকৃত তদন্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে সিনহাকে টার্গেট করার জন্য টেকনাফের তৎকালীন ওসি নির্দেশ দেন বাহারছড়ার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলীকে। আর লিয়াকত আলী সিনহার গাড়ি আটকানোর জন্য নির্দেশ দেন শামলাপুর চেকপোস্টের ইনচার্জ এপিবিএনের এসআই শাহজাহানকে। প্রদীপের পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু ব্যাটে বলে মিলে যায়। সিনহা চিরতরে হারিয়ে যায় এ পৃথিবী থেকে। এরপরের ঘটনাবলী জিজ্ঞাসাবাদ, মামলা, তদন্ত, প্রচার, অপপ্রচারসহ বহুমুখী বিষয় নিয়ে ঘুরপাকে আবদ্ধ। যে প্রশ্নের উত্তর এখনও সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়নি সেটি হচ্ছে ওসি প্রদীপ কেন লিয়াকতকে ফোন করে গুলি করার নির্দেশ দিলেন। প্রদীপ ব্যক্তিগত কোন ক্ষোভ থেকে এ ঘটনা ঘটালেন। নাকি প্রদীপকে দিয়ে এ ঘটনা কারও দ্বারা সংঘটিত। মূল কিলার এসআই লিয়াকত আলী প্রদীপের আদেশ পালন করেছেন। এপিবিএনের শাহজাহান পুলিশের এসআই লিয়াকত আলীর আদেশ পালন করেছে। কিন্তু ওসি প্রদীপ কার আদেশ পালন করলেন সে রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। তদন্ত শুরু করার পর ঘটনার অন্তর্নিহিত রহস্য নিয়ে তিনি মুখ খুলছেন না। তবে তদন্ত প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হচ্ছে বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানাচ্ছেন মাত্র। উচ্চ আদালতের আদেশের অপেক্ষায় সিফাত ও শিপ্রা ॥ মঙ্গল ও বুধবার কক্সবাজার ও রামুতে মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে সিফাত ও শিপ্রা বর্তমানে উচ্চ আদালতের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। বুধবার দুপুুুর ১২টার দিকে রামু থানায় মামলা করতে গিয়েও মাঝ পথ থেকে ফিরে আসেন শিপ্রা ও সিফাত। এর আগে মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায়ও মামলা করতে গিয়েছিলেন শিপ্রা। এ প্রসঙ্গে শিপ্রার আইনজীবী জানান, এই ঘটনায় হাইকোর্টে একজন আইজীবী ২ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। হাইকোর্ট রিটের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার আদেশ দেবে। এ কারণে শিপ্রা রামু থানায় মামলা করতে যায়নি। ওই আদেশের প্রেক্ষিতেই পরে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি। ওসির দাবি-ভিডিও ফাঁস হয়নি ॥ হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্ট থেকে পুলিশের উদ্ধারকৃত ল্যাপটপসহ বিভিন্ন পণ্য থানা হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছে রামু থানা পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথ তার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার রামু থানায় মামলা করতে আসার কথা ছিল। গণমাধ্যম কর্মীরা রামু থানায় অপেক্ষা করলেও তবে তিনি আসেননি। সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাতকারে শিপ্রা দেবনাথের পুলিশের বিরুদ্ধে ছবি-ভিডিও ফাঁস হওয়া বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন, সেটি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন রামু থানার ওসি আবুল খায়ের। এসপিসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাবে লেনেদেনে অস্বাভাবিক ॥ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ লিয়াকত আলী, ঢাকার চলচ্চিত্র জগতের খলনায়ক ইলিয়াস কোবরাসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাব ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করে তথ্য উদ্ঘাটন করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইউ) এর নির্দেশে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সুপার, সাবেক ওসি প্রদীপসহ আটজনের ব্যাংক হিসাবে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত লেনদেনের তথ্য পাওয়ায় বিএফআইউ তাদের এ্যাকাউন্ট স্থগিত করে তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জানাতে বলেছে। চিঠিতে যে ৮ জনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও তথ্য চাওয়া হয়েছে, তারা হলেন- কক্সবাজারের এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি মোঃ লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তার স্ত্রী চুমকি কারান, প্রতীম কুমার দাশ, প্রতুশ কুমার দাশ, দিলীপ ও ইলিয়াস কোবরা। প্রদীপ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি দুদকের ॥ এদিকে গ্রেফতারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ দম্পতির জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪ কোটি টাকার হিসাব নিয়ে কোন প্রমাণাদি নেই। এ অর্থ অবৈধভাবে অর্জিত। অনুসন্ধানে এসব বিষয়ে বেরিয়ে আসার পর অনুসন্ধান রিপোর্ট অনুমোদন দিয়েছে দুদকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। শিপ্রার ল্যাপটপ ডিভাইসসহ ২৯ সামগ্রী র‌্যাবকে হস্তান্তরের নির্দেশ ॥ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা ঘটনার পর পুলিশের জব্দকৃত কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ল্যাপটপ ও ডিভাইসসহ ২৯ সামগ্রী র‌্যাবকে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মেজর সিনহা হত্যা ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে র‌্যাব। বুধবার রাত সোয়া ৯টায় র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। কক্সবাজারে আইনশৃঙ্খলায় দায়িত্ব পালনরত র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেছেন, মেজর (অব) সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ সদস্যসহ সাত আসামি র‌্যাব হেফাজতে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে তদন্তের কার্যক্রম আরও এগিয়ে নেয়া হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের দেয়া তথ্য আপাতত প্রকাশ করা যাবে না। তিনি বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ, তাই অত্যন্ত সতর্কতা, পেশাদারিত্ব গুরুত্বসহকারে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। তদন্ত কার্যক্রম ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। এই হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী ও নন্দদুলাল রক্ষিতসহ গ্রেফতারকৃত আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য আলামতসহ সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক বিষয় নিয়ে এই মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, মেজর সিনহার বোন শরমিন শাহরিয়া ফেরদৌস নয়জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা করলেও সাতজন (পুলিশ) র‌্যাবের হেফাজতে রিমান্ডে আছে। অপর পলাতক দুই আসামির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করেছে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ মোতাবেক র‌্যাব যাচাই-বাছাই করে চলেছে। যাতে বস্তুনিষ্ঠভাবে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। তিনি বলেন, আদালত থেকে সাতদিনের রিমান্ডে র‌্যাব হেফাজতে নিয়ে আসা বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ ও মারিশবুনিয়ার তিন বাসিন্দার সাতদিনের রিমান্ড আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। তাদের আজ আদালতে হাজির করা হবে। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে রিমান্ডের জন্য পুনর্আবেদন করবেন। মেজর সিনহা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা একজন পুলিশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা (সহকারী পুলিশ সুপার) বলে উল্লেখ করে র‌্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক আরও বলেন, যেহেতু আদালত থেকে মামলাটি র‌্যাবের কাছে তদন্তের ভার ন্যস্ত করা হয়েছে, সেহেতু প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা মতে যাচাই এবং আসামিদের জবানবন্দী নেয়াসহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে র‌্যাব। যাতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গুণগতমান সম্পন্ন একটি প্রতিবেদন দেয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ টেকনাফে বাহারছড়ার শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের সহকর্মী শিপ্রা দেবনাথের ব্যবহৃত ২৯ সামগ্রী র‌্যাবের কাছে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এসব সামগ্রী সিনহা নিহত হওয়ার পর হিমছড়ির নিলিমা রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে জব্দ করেছিল রামু থানা পুলিশ। এসবে রয়েছে কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ল্যাপটপ ও ডিভাইসসহ ২৯ সামগ্রী। এর আগে র‌্যাবের পক্ষ থেকে শিপ্রার কম্পিউটার সামগ্রী র‌্যাবের জিম্মায় পেতে আদালতে আবেদন করেছিল র‌্যাব। বুধবার বিকেলে ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্তের স্বার্থে কম্পিউটার ও ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে সহায়ক হবে প্রতীয়মান হওয়ায় ইতিপূর্বে এসব সামগ্রী ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করেছিল। সিনহা ও তার সহযোগীদের এই সামগ্রীগুলো একটি জিডির মাধ্যমে রামু থানায় পুলিশের হেফাজতে জমা রয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। বুধবার আদালতের মাধ্যম উক্ত সরঞ্জামাদি হেফাজতে নেয়ার আদেশ পেল তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। শিপ্রার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিওসহ নানা কন্টেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন ব্যারিস্টার ভৌমিক। বুধবার ওই আবেদনের প্রথম দফা শুনানি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে দ্বিতীয় দফা শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে বুধবার দুপুরে রামু থানায় যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিকের ফোন পেয়ে পুনরায় ফিরে আসেন শিপ্রা ও তার আইনজীবী টিপু। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১২টায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মামলা গ্রহণ না করে তাদের অবস্থানকরা হিমছড়ি এলাকাটি রামুতে হওয়ায় শিপ্রাকে পরামর্শ দিয়ে বিদায় করেন।
×