ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা

আবুধাবি থেকে ফিরিয়ে দেয়ায় শাহজালালে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৮ আগস্ট ২০২০

আবুধাবি থেকে ফিরিয়ে দেয়ায় শাহজালালে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনায় দীর্ঘদিন দেশে থাকার পর অনেক জটিলতা পেরিয়ে আবুধাবি ফিরে গিয়ে দেখেন তাদের কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তাদেরকে পরের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়। সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরই শুরু করেন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ। অনেকেই মেঝেতে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে থাকেন। এমনই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে বিমানবন্দরে। বিকেলে এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত তাদের বেশ ক’জনকে বিমানবন্দরে বসে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, আবুধাবি থেকে ফেরা এসব রেমিটেন্সযোদ্বা চেঁচামেচি করে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছেন। তাদের একজন সালাহউদ্দিন জানান, বিশ্বজুড়ে করোনা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা আবুধাবি থেকে বৈধভাবে ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলেন। কিন্তু মাঝে কিছুদিন আটকা পড়ার পর শেষ পর্যন্ত করোনা টেস্ট করে চড়া দামের টিকেট কিনে রবিবার ঢাকা থেকে আবুধাবি যান। তারা সেখানে আবার নবউদ্যমে কাজ করে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রত্যয়ে নতুন স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। কিন্তু সেখানকার বিমানবন্দরে নামতেই মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা দেখা দেয়। তাদেরকে জানানো হয়, তাদের কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। সেজন্য আর কোন শ্রমিকের দরকার নেই। এই অজুহাতে তাদের বিমানের পরবর্তী ফ্লাইটেই উঠিয়ে দেয়া হয়। সোমবার সকালে বিমানের ফ্লাইটে ৬৮ জন বাংলাদেশে পা রাখার পর থেকেই তারা আবার আবুধাবিতে ফিরতে বিক্ষোভ করছেন। এজন্য তারা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একটি সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, প্রবাসীরা বেলা সাড়ে ১১টায় আবুধাবি থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন। এর পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় তারা মাটিতে বসে বিক্ষোভ করেন। আবুধাবি ফিরতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান। কেন এই বিক্ষোভ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রবাসীরা আবুধাবির যে এজেন্সি বা কোম্পানি বা স্পন্সরের মাধ্যমে দেশটিতে গেছেন, সম্প্রতি আবুধাবি সরকার সেসব এজেন্সির অনুমোদন বাতিল করে। তাই তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এছাড়া আমিরাত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এয়ারলাইন্সগুলোকে তাদের যাত্রীদের নিয়ে আসার আগে আবুধাবি ইমিগ্রেশন থেকে এ্যাডভান্স প্যাসেঞ্জার ইনফর্মেশন (এপিআই) নিতে হয়। কিন্তু বিমান ঢাকা থেকে আসার আগে কত যাত্রী নিয়ে আসছেন এবং যাত্রী কারা ছিলেন সে তথ্য আবুধাবি ইমিগ্রেশনকে না দেয়ায় অনেককে ফেরত দেয়া হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে পাঁচজনের স্পন্সর বিমানবন্দরে উপস্থিত হওয়ায় তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয় আবুধাবি। বাকিদের ফেরত পাঠানো হয়। আসলে, আমরা প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে কয়েকজন চলে গেছেন। অনেকে এখনও (বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত) আছেন। সরজমিনে দেখা যায়, বিক্ষোভের সময় অনেকেই প্রতারিত হয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। তারা কখন এবং কীভাবে আবার আমিরাতে ফিরবেন তার নিশ্চয়তা চেয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ এবং তাদের বিনামূল্যে নতুন টিকেট প্রদানের আবেদন করেছেন। কর্তৃপক্ষের নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরে বসে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের কয়েকজন। এদের কজন জনকণ্ঠকে বলেন, বিমান যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত তাহলেও হয়তবা এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হতো না। সরকার চাইলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে সেখানে ফেরাতে পারে।
×