ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কওমিতে কিতাব বিভাগ চালুর আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১৮ আগস্ট ২০২০

কওমিতে কিতাব বিভাগ চালুর আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সব কওমি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু ও পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করেছে কওমি মাদ্রাসাগুলো। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন কওমি মাদ্রাসার ‘জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, বাংলাদেশের’ একটি প্রতিনিধি দল। এদিকে আবেদন গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, করোনায় বন্ধ থাকা কওমি মাদ্রাসা খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন। সোমবার সচিবালয়ে আবেদনপত্র হস্তান্তর ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ ছিল, মাদ্রাসা খোলার বিষয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে আমরা গত ২ জুলাই আবেদন করেছিলাম। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে আমাদের জানান, ১২ জুলাই থেকে হিফজ বিভাগ চালু হবে। ওই আবেদনের মধ্যে কিতাব বিভাগ চালু করারও অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। এটা যেহেতু তখন হয়নি। এজন্য আমরা আবার যোগাযোগ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবার একটা আবেদন পাঠালাম। এ সময় বোর্ডের সহ-সভাপতি মুশতাক আহমদ, মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন। সহ-সভাপতি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ বলেন, উনি (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) এটা প্রহণ করলেন। আমাদের উনি বলেন, আমি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে মেসেজ দেয়ার চেষ্টা করব। আমরা আবেদনে লিখেছি, কওমি মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চালু এবং আমাদের যে পরীক্ষাগুলো মাস্টার্স ও ডিগ্রী মানের পরীক্ষা, মাদ্রাসার ঘরোয়া পরীক্ষা-এই তিনটি পরীক্ষা আমরা আয়োজন করতে পারিনি। এই পরীক্ষাগুলো যাতে আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যে আয়োজন করতে পারি এ জন্য একটু সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার আবেদন করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে সহ-সভাপতি বলেন, আপনারা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছেন আলিয়া মাদ্রাসার পরীক্ষা, কামিল পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেটা মনে হয় আজকেই হচ্ছে। আমাদের কওমি মাদ্রাসাতে স্বাস্থ্যবিধি মানাটা যত সহজ অন্য কোথাও এত সহজ নয়। কারণ আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থীই আবাসিক। একবার যারা আসে তারা আর সহজে বের হয় না। ইয়াহইয়া মাহমুদ আরও বলেন, আরেকটা জিনিস হলো আমাদের ছেলেপেলেরা ওজুর সঙ্গে থাকে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে তো ওজু করেই, ক্লাসে বসতেও ওজু করে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে হাত ধোয়া, মুখ ধোয়া এসব বিষয়গুলো যতটা কওমি মাদ্রাসায় মেনটেন করা হয়, এটা আর কোন জায়গায় এ রকম হয় না। এজন্য আমরা আশ্বস্ত করেছি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়কে, আপনি আশ্বস্ত থাকতে পারেন, হেফজখানা খুলে দেয়ার জন্য আজ পর্যন্ত কোথাও থেকে ভাইরাস ছড়ানোর রিপোর্ট আপনারা পাননি। এই কিতাব বিভাগ চালু করার পরও ইনশাআল্লাহ এমন কোন রিপোর্ট আপনারা পাবেন বলে আশা করি না। আশা করি ভালই হবে। আরেকটা জিনিস আমরা বলব কোরানে কারিমের তেলাওয়াতের সঙ্গে সঙ্গে যখন হাদিসের পড়া চালু হবে আল্লাহ তা’য়ালা কোভিড-১৯ পুরোপুরি দূর করে দেবেন ইনশাআল্লাহ। কবে নাগাদ পরীক্ষা নিতে চাইছেন এবং কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু চাইছেন- জানতে চাইলে সহ-সভাপতি বলেন, আমরা চাচ্ছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে। আমরা আশা করছি আগস্টের শেষ নাগাদ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করতে পারব, এ রকম যাতে করতে পারি, এজন্য আমরা আবেদন করেছি। এদিকে আবেদন গ্রহণ করে করোনায় বন্ধ থাকা দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করে তার মতামতের ভিত্তিতে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব কওমি মাদ্রাসা বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালুর বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তাদের কর্মপরিকল্পনার কথা জানাতে এসেছিলেন। সরকারের পক্ষে আমি তাদের আশ্বস্ত করে বলেছি, অতি অল্প সময়ের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
×