ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২০১৯-২০ অর্থবছর

করোনায় সেবা রফতানি কমেছে সাড়ে ৫ শতাংশ

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১৮ আগস্ট ২০২০

করোনায় সেবা রফতানি কমেছে সাড়ে ৫ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশের সেবা রফতানিতে বড় ধরনের ধস নেমেছে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সেবা রফতানিতে সাড়ে ৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ কম। দেড় মাস আগে অর্থবছর শেষ হলেও আজ সোমবার (১৭ আগস্ট) গত অর্থবছরের সেবা খাতের রফতানির তথ্য প্রকাশ করেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬১৩ কোটি ১৮ লাখ ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। গত অর্থবছরে সেবা খাতের রফতানির লক্ষ্যমাত্র ধরা ছিল ৮৫০ কোটি ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আয় হয়েছিল ৬৪৯ কোটি ডলার। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহকৃত পরিসংখ্যান থেকে মোট তিনটি ভাগে সেবা খাতে রফতানি আয়ের সঙ্কলন করা হয়েছে। এ তিনটি ভাগ হলো- গুডস প্রকিউরড ইন পোর্টস বাই ক্যারিয়ারস, গুডস সোল্ড আন্ডার মার্চেন্টিং ও সার্ভিসেস। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গেল ২০১৯-২০ অর্থবছরের দেশের সেবা খাতে রফতানি আয় এসেছে ৬১৩ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ কম। গেল অর্থবছরে সেবা রফতানি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছিল ৮৫০ কোটি ডলার। ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেবা রফতানি করে দেশ আয় করেছিল ৬৪৯ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ওই অর্থবছরে সেবা রফতানির প্রবৃদ্ধি ভাল ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় গেল অর্থবছরে সেবা রফতানির আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে সরকার। কিন্তু মহামারী করোনায় পণ্য রফতানির সঙ্গে সেবা রফতানিতেও হোঁচট খেয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বলেন, করোনার কারণে সেবা খাতের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি ভাল হলে সেবা খাতের রফতানি বাড়বে। তিনি বলেন, এ খাত বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নসহ করণীয় সবকিছু করবে সরকার। আমরা আশাবাদী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঘুরে দাঁড়াবে সেবা খাত। প্রতিবেদনে দেখা যায়, রফতানির এ আয়ের মধ্যে সরাসরি সেবা খাত থেকে এসেছে ৬০৫ কোটি ডলার। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়। সেবার অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে ‘অন্যান্য ব্যবসায় সেবা’ থেকে ৮৮ লাখ ৬১ হাজার ডলার, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে ৪৭ কোটি ৪২ লাখ ডলার, বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সেবা থেকে ৫৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ৩২ কোটি ডলার এবং বীমা ছাড়া আর্থিক সেবা খাত থেকে ১৬ কোটি ডলার রফতানি আয় করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া সেবা পণ্যের মধ্যে রয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং সার্ভিসেস অন ফিজিক্যাল ইনপুটস, মেইনটেন্যান্স এ্যান্ড রিপেয়ার, ট্রান্সপোর্টেশন, কন্সট্রাকশন সার্ভিসেস, ইন্স্যুরেন্স সার্ভিসেস, ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, চার্জেস ফর দ্য ইউজ অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি, টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস, আদার বিজনেস সার্ভিসেস, পার্সোনাল-কালচার-রিক্রিয়েশনাল ও গবর্নমেন্ট গুডস এ্যান্ড সার্ভিসেস। এদিকে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করে তিন হাজার ৩৬৭ কোটি ৪১ লাখ ডলার। পণ্য রফতানির এই আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ শতাংশ কম। কোন অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোন অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রফতানি আয় হিসাব করা হয়। দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমানবন্দরে বিদেশী পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা- যেমন জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা-কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে।
×