ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্ন পূরণের অভিযাত্রায়

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ১৭ আগস্ট ২০২০

স্বপ্ন পূরণের অভিযাত্রায়

বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে আত্মোৎসর্গ এবং সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৫০ হাজারবার কোরান খতম এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার ছিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদফতরের দোয়া মাহফিল। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণ করতেই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। পরম করুণাময়ের কাছে পরম কৃতজ্ঞতা যে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হন। ফলে দেশের কল্যাণে ব্যাপকভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সেসব বাস্তবায়নের সুযোগ এসেছে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের অভিযাত্রায় দারুণ সব সাফল্য আসতে শুরু করেছে। জাতির দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এর মধ্যেই তিনি দেশের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন। আরেকটু সময় পেলে এই বাংলাদেশকে আরও আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী করতে পারতেন। কিন্তু তাঁকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তাঁর হত্যার বিচার করা যাবে না- এই লক্ষ্যে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে বাদ দেয়াই শুধু নয়, রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম থেকে তাঁর নাম বা তাঁর কথা প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়। এক কথায় মানুষের মন থেকে বঙ্গবন্ধুর কথা, তাঁর স্মৃতি, তাঁর অবদান মুছে ফেলার যাবতীয় অপচেষ্টা করা হয় সে সময়। কিন্তু ইতিহাস বিকৃত করা, বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা, তাঁর ভূমিকা খাটো করে দেখানো ইত্যাদি চেষ্টা যে সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে সেটা সময়ের পরীক্ষায় আজ প্রমাণিত। সত্য স্বীকার এবং বাস্তবতাকে মোকাবেলা করার পরিকল্পনা থাকে সুযোগ্য নেতৃত্বের। আন্তরিকতা অনেক বড় বিষয়। সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে ভুল যুক্তি দিয়ে দেশের সত্যিকার উন্নয়ন ঘটানো যায় না। দেশের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়কের কাছে দেশবাসী দৃঢ়তাই প্রত্যাশা করে, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। স্পষ্ট ও দৃঢ় কণ্ঠে সদিচ্ছা প্রকাশের জন্য প্রধানমন্ত্রী মানুষের প্রশংসা পাবেন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের অর্থনীতি ছিল প্রায় ভগ্নদশাপ্রাপ্ত। মানুষের আয় ছিল সীমিত, অথচ দ্রব্যমূল্য ছিল আকাশচুম্বী। সেই অবস্থা থেকে জাতীয় অর্থনীতি ও উন্নয়নকে টেনে তোলা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জন্য ছিল রীতিমতো একটি চ্যালেঞ্জ। বর্তমান সরকার অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবতা হলো, এ সময় প্রায় সমগ্র বিশ্ব দু’দুটো মন্দাবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। এর ফলে বিশ্বের অনেক দেশেই জাতীয় প্রবৃদ্ধি গেছে কমে। এমনকি অনেক দেশে লক্ষ্য করা গেছে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। এ সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মন্দাবস্থার উত্তাপ প্রায় লাগেনি বললেই চলে। বরং শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শনৈঃ শনৈঃ গতিতে এগিয়ে গেছে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করব ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে, এমনটাই দেশবাসীর স্বপ্ন।
×