ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইনের ফাঁক-ফোকরে অধিকাংশই এখন জামিনে মুক্ত

প্রকাশিত: ২৩:১৩, ১৬ আগস্ট ২০২০

আইনের ফাঁক-ফোকরে অধিকাংশই এখন জামিনে মুক্ত

গাফফার খান চৌধুরী ॥ জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী হামলা করে শত শত নেতাকর্মীকে হত্যার পরিকল্পনা ও অর্থায়নকারীদের অধিকাংশই জামিনে। মদদ আর অর্থায়নকারীরা জামিনে বেরিয়ে আরও বড় ধরনের নাশকতা চালানোর ছক করছে কিনা সে বিষয়ে নতুন করে অনুসন্ধান চলছে। সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের অভাবে অর্থায়ন আর জঙ্গী তৈরিকারকদের অধিকাংশই দেশে-বিদেশে যাতায়াত করছে। তাদের হদিস মিলছে না। জামায়াত-শিবিরের এমন ২৩ জনের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। পুলিশের তথ্য মোতাবেক ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী হামলা করে শত শত নেতাকর্মীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গী সাইফুল ইসলাম। সে মোতাবেক এই জঙ্গী ৩২ নম্বরের কাছেই হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে উঠেছিল। কিন্তু পুলিশ আর গোয়েন্দাদের অভিযানে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায় সাইফুলের। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির এক পর্যায়ে সাইফুল শক্তিশালী গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণে হোটেলের বিশ ফুট দেয়াল অন্তত ৫০ ফুট দূরে গিয়ে ধসে পড়ে। পুলিশ জানায়, সাইফুলের পিতার নাম আবুল খায়ের মোল্লা। বাড়ি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামে। তিনি নোয়াকাঠি মাঠের হাট মসজিদের ইমাম। ওই ইউনিয়নের জামায়াতে ইসলামীর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন সাইফুলের পিতা। সাইফুল খুলনা বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিল। সে ছাত্র শিবিরের রাজনীতিতে জড়িত ছিল। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সাইফুল সবার বড় ছিল। পরবর্তীতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গুলশান থেকে সাইফুলকে আত্মঘাতী জঙ্গী হিসেবে গড়ে তোলা এবং আত্মঘাতী হামলা চালানোর যাবতীয় ব্যয় বহনের দায়ে দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। দুই নারীর মধ্যে একজন ঢাকার একটি অভিজাত শপিং মলের মালিকের এক মেয়ে। তার সরাসরি অর্থায়নে সাইফুল আত্মঘাতী হয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সুনির্দিষ্ট মনিটরিং ও আইনের ফাঁক ফোকরে গ্রেফতারদের অধিকাংশই এখন জামিনে মুক্ত। তাদের অনেকেই দেশে রয়েছে। অনেকেই বিদেশে চলে গেছে। আবার অনেকে দেশ-বিদেশে যাতায়াত করছে। বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুল রশীদ জানান, এতদিন পর্যন্ত জঙ্গীবাদী হামলার ধরন সন্ত্রাসবাদী হলেও সেখানে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা ছিল না। আত্মঘাতী বোমা হামলার ধারণা আধুনিক বিশ্বে প্রথম আনে শ্রীলঙ্কার এলটিটিই (দি লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম)-এর ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ। তিনি ১৯৭৬ সালে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন দেশটির সংখ্যাগুরু সিংহলীদের জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য। সিংহলীরা হলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। অপরদিকে তামিলরা হলেন হিন্দু ধর্মের অনুসারী।
×