ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নব্য পাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ॥ আমু

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ১৬ আগস্ট ২০২০

নব্য পাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় ॥ আমু

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে নস্যাৎ করে নব্য পাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ভিড় এড়াতে দুপুরে ধানম-ির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ। আমির হোসেন আমু বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পেছনে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ছিল। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকা-। এ হত্যাকা-ের পর বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যে অপশক্তি হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করেনি, তারা জানত বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এ কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা স্বাধীন বাংলাদেশকে শেষ করে দেয়ার উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্য দিয়েই সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হত্যা করা এবং একটি নব্য পাকিস্তান সৃষ্টি করার জন্যই এই নির্মম হত্যাকা-। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এই দেশ স্বাধীন হতো না। ইতিহাসের সেই মহামানব বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু যখন বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সব কিছুতে স্বাভাবিক করেছিলেন। সেই সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্ব নেতা, যেখানে গেছেন সেখানেই বঙ্গবন্ধুকে সমাদ্রিত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দুইটা স্বপ্ন ছিল, একটা স্বাধীনতা আরেকটা সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলা। একটা তিনি করে গেছেন। আরেকটা তিনি করে যেতে পারেন নাই। সেই কাজটি সমাপ্ত করার পথে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার হাতে ১৯৮১ সালে আমরা আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজের সমাপ্ত পথে এগিয়ে চলেছেন। নেপথ্যের নায়কদের মুখোশ উন্মোচনে কমিশন করুন-তথ্যমন্ত্রী ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত এফডিসির হাত ধরে এদেশের চলচ্চিত্র শিল্প আবার শুধু তার স্বর্ণালি সময়ই ফিরে পাবে; তা নয়, বিশ্ববাজারেও সম্মানজনক স্থান করে নেবে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন- বিএফডিসি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তথ্যমন্ত্রী বিএফডিসি প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। কর্পোরেশন ও চলচ্চিত্র পরিবারের প্রতিনিধিরাও এসময় জাতির পিতাকে স্মরণ করে পুষ্পিত শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ঢাকায় এফডিসি প্রতিষ্ঠাকে বঙ্গবন্ধুর অনন্য দূরদর্শিতার পরিচায়ক হিসেবে বর্ণনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে তৎকালীন প্রাদেশিক সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে সংসদে উত্থাপিত বিলের মাধ্যমে যে চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন, তা বহু কালজয়ী সিনেমা ও গুণী শিল্পীর জন্ম দিয়েছে। এই সিনেমাগুলো আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতাপরবর্তী দেশ গড়তে ভূমিকা রেখেছে। আজ আমরা চলচ্চিত্র জগৎসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার এই স্থাপনার হাত ধরে দেশের চলচ্চিত্রকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দেব। এর পরপরই বিএফডিসি চত্বরে চলচ্চিত্র পরিবার আয়োজিত শোক দিবসের সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনার জন্য আজ দেশের সাধারণ নাগরিক ও সাংবাদিক সমাজ দাবি জানিয়েছে। আমি আগে থেকেই বলে আসছি যে, শুধু এই হত্যাকা-ের কুশীলবই নয়, যারা এর পটভূমি তৈরি করেছিল, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের জন্য এখনই একটি কমিশন গঠন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, এই হত্যাকা-ের পর যারা এটিকে সমর্থন করেছিল, দায় তাদেরও আছে। ‘বিএফডিসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশীদ, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদার ও বিএফডিসির পরিচালক আইয়ুব আলী। চলচ্চিত্র পরিবারের সভায় প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, চিত্রতারকা রোজিনা, দিলারা, রিয়াজ, মৌসুমী, ওমর সানি, শাকিব, অনন্ত জলিল, অপু বিশ্বাস, নিপুণ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরসহ জনপ্রিয় চলচ্চিত্র শিল্পী, কলাকুশলীবৃন্দ সভায় যোগ দেন। দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতেই বঙ্গবন্ধু হত্যা-শিক্ষামন্ত্রী ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে চেয়েছিল। ৩ নবেম্বর জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করেছিল। এমনকি ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু এভিনিউএ ১৩ গ্রেনেড হামলা করে ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। শনিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের উদ্যোগে ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাবু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল রব খানের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ, কেন্দ্রীয় নেতা শেখ জাহাঙ্গীর আলম, আকবর আলী চৌধুরী, এম.এ ওয়াদুদ মিয়া, কৃষিবিদ ড. নজরুল ইসলাম, কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, মোঃ আবুল হোসেন প্রমুখ।
×