ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণপরিবহনে ভাড়া ডাকাতি

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১৪ আগস্ট ২০২০

গণপরিবহনে ভাড়া ডাকাতি

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয় স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে। প্রতিকার কিংবা প্রতিষেধক ওষুধের অভাবে ছোঁয়াচে এই রোগটিকে বিধিসম্মত উপায়ে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হরেক রকম পরামর্শ ও নির্দেশনা আসে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়াও সরকার কর্তৃক প্রাসঙ্গিক নির্দেশনাও আমলে নিতে জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়। লকডাউনের সময় বন্ধ করে দেয়া হয় গণপরিবহন। যাতে মানুষ অন্য কোথাও যেতে অসমর্থ হয়। ফলে অর্থনীতির এই খাতটিও পড়ে বিপাকে। সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিকের রুজি রোজগারের উপায় রুদ্ধ হয়ে গেলে গণপরিবহনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যে স্থবিরতা নেমে আসে, তাতে মাসুল গুনতে হয় সমূহ লোকসানের। রমজানের ঈদের ছুটি পর্যন্ত সব কিছু বন্ধ থাকলেও ৩১ মে থেকে সব কিছুর ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়। অফিস-আদালতসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনের কর্মপ্রবাহে চালিত হতে থাকে সীমিত পর্যায়ে। স্বাস্থ্যবিধি যেন করোনা সংক্রমণ কমার বদলে বাড়ার যে দৃশ্য উঠে আসে তাতে আরও কঠিনভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোরালো গুরুত্বারোপ করা হয়। অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ এলে স্বাস্থ্য সুরক্ষার সমস্ত নিয়ম মানতেও বাধ্য করা হয়। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বার বার হাত ধোয়া প্রতিদিনের নিয়মের অধীন হয়ে যায়। শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহনে যাত্রী নির্দেশনা আসে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা থেকে শুরু করে বিধিসম্মত সঠিক ব্যবস্থার ওপরও বিশেষ জোর দেয়া হয়। যাত্রী সংখ্যা কমাতে গিয়ে মালিকরা লোকসানের আশঙ্কায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের যে ব্যবস্থা চালু করে তাও মেনে নেয়া হয়। তবে বাস্তব চিত্রে উঠে আসে ডবল ভাড়া নিয়েও যাত্রী সংখ্যা কমানো হয়নি। বরং দাঁড়ানো অবস্থায় যাত্রী ওঠানোও দৃশ্যমান হতে থাকে। সামাজিক দূরত্বকে তোয়াক্কা না করার চিত্র যেমন উঠে আসছে, পাশাপাশি মাস্ক না পরার দূরবস্থাও সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। তার ওপর হাত দূষণমুক্ত করার কোন বিধিও মানা হচ্ছে না। আবার ভাড়াও দ্বিগুণভাবে আদায় করা হচ্ছে। ভাড়া ডাকাতির উৎসব চলছে বলেও প্রতীয়মান। বেসরকারী পরিবহন ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পরিবহন সব জায়গায় একই চিত্র দৃশ্যমান হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং বিআরটিএ এ ব্যাপারে নির্বিকার এবং উদাসীন। নিয়ম এবং নির্দেশনা সবই কাগজে-কলমে চাপা পড়ে আছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতি বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়ে আসছে। এখনও তার কোন কুলকিনারা হয়নি। মোবাইল কোর্ট বসার সিদ্ধান্ত হলেও তার কার্যক্রম অনুপস্থিত। পরিবহন সেক্টরের এমন অরাজকতায় যাত্রী সাধারণের নাভিশ্বাস হওয়ার উপক্রম। এছাড়া করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষ এবং সরকারী কর্তৃপক্ষ নজরদারি আরও বাড়িয়ে যাত্রী সাধারণের স্বাস্থ্যরক্ষা এবং ভোগান্তি কমানোর প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরী।
×