ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার ভ্যাকসিন

প্রকাশিত: ২২:২২, ১৪ আগস্ট ২০২০

করোনার ভ্যাকসিন

করোনাভাইরাস তথা প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গণমাধ্যমে এই ঘোষণা দেন। সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনটির নিবন্ধনও দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বলেন, তার মেয়ে পরীক্ষামূলক এই ভ্যাকসিন নিয়ে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া সুফলও পেয়েছে। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহা আতঙ্ক ও মহামারী হিসেবে আবির্ভূত করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন আবিষ্কার এবং তার সফল প্রয়োগ দেশটির উচ্চমানের বৈজ্ঞানিক গবেষণারই প্রমাণ বহন করে। তবে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ধারণা, রাশিয়ার ভ্যাকসিনটি সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তদুপরি আগামী বছরের জানুয়ারির আগে এটি জনসমক্ষে আসা তথা বাজারজাতকরণের সম্ভাবনা নেই। উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগে এগিয়ে আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড, যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানা-রেনাটা, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ। ভয়াবহ ও হন্তারক সংক্রামক ব্যাধি করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোন নিদান নেই। আবিষ্কৃত হয়নি কোন ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক, যা কার্যকর করোনা প্রতিরোধে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন করোনা আক্রান্ত রোগীকে নিরাময় করে তুলতে। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার ঘোষণাটি আশার আলো বৈকি। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তথা যুদ্ধ করার জন্য বিশ্বের কোন দেশই প্রস্তুত ছিল না। এমনকি করোনার আঁতুড়ঘর বলে খ্যাত চীনের হুবেই প্রদেশের উহানও নয়। সুতরাং করোনা বা কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়তেও সময় লাগেনি। তবে বিশ্ববাসী এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ বা প্রতিরক্ষা কোনটাই গড়ে তুলতে পারেনি যথাসময়ে। কেননা, করোনা একটি কদম ফুল সদৃশ ভাইরাস বা জীবাণু যা ক্ষণে ক্ষণে চরিত্র পাল্টে আক্রমণ করে মানুষকে। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক দূর অগ্রসর হলেও প্রকৃতপক্ষে ভাইরাসের এই বিচিত্র চরিত্রের জন্য অদ্যাবধি কার্যকর কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। যেমন, ফ্লু, প্রচলিত অর্থে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে কার্যকর কোন প্রতিষেধক নেই। অনুরূপ অবস্থা প্রত্যক্ষ করা যায় মার্স, সার্স, ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, নিপাহ ভাইরাস, বার্ডফ্লু ইত্যাদির ক্ষেত্রেও। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। করোনার সংক্রমণে মৃত্যুহার দিন দিন বাড়ছেই। এই মুহূর্তের খবর হলো, বিশ্বের কয়েকটি দেশ অন্তত ২০টির বেশি প্রতিষেধক তৈরির কাজে অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে। দু-একটি ক্ষেত্রে মানবদেহে এর সফল প্রয়োগও হয়েছে বলে খবর আছে। তবে তা বাজারে আসতে এখনও অনেক দেরি। ততদিন পর্যন্ত বসবাস করতে হবে করোনাকে নিয়েই। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। এ অবস্থায় বাংলাদেশেও ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানো অত্যাবশ্যক। নিয়মিত হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাস্ক-গ্লাভস ব্যবহারসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষা নীতি সর্বদাই মেনে চলতে হবে ঘরে বাইরে সর্বত্র।
×