ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মোংলা বন্দরে টেনিস বলের পরিবর্তে ৪ কন্টেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ আফিম

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১৩ আগস্ট ২০২০

মোংলা বন্দরে টেনিস বলের পরিবর্তে ৪ কন্টেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ আফিম

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোংলা বন্দর জেটিতে ঘোষণা বর্হিভূত আমদানি নিষিদ্ধ চার কন্টেইনার পোস্তদানা(আফিম) বৃহস্পতিবার দুপুরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্দ করেছে। প্রতিটি কন্টেইনারে আনুমানিক ১৮ টন করে মোট ৭২ টন পোস্তদানা রয়েছে। নিষিদ্ধ এই পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার আয়শা ও তাজ ট্রেডার্স এবং স্থানীয় শিপিং এজেন্ট খুলনার মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে মোংলা কাস্টম হাউজের কমিশনার হোসেন আহম্মেদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, টেনিস বল আমদানির কথা থাকলেও আমদানিকারকরা আফিম আনছেন-এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে (আমদানি পণ্য নম্বর-২০২০/৫৩৫) নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে। মোংলা বন্দরের ২ নম্বর জেটিতে আমদানিকৃত ২০ ফিটের চারটি কন্টেইনারে করে এই আফিম আনা হয়। মোংলা বন্দরের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার সোহাগ জানান, আমদানি নিষিদ্ধ এই পণ্য নিয়ে গত ১০ আগস্ট সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি স্যানজোর্জিও’ মোংলা বন্দরের জেটিতে আসে। জাহাজটিতে থাকা ৩১৭টি কন্টেইনারের মধ্যে চারটি কন্টেইনারে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য পোস্তদানা (আফিম) ছিল। এমন গোপন সংবাদে জাহাজটি বন্দর জেটিতে আসার আগেই পণ্যবাহী কন্টেইনার আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর ১০ আগস্ট বন্দর জেটিতে আসার পরেই ২০ ফিটের (গজকট-৭৮১৮২৭১, গজকট-৮১১৭৭০০, গজকট-১১৭০৯৯৬ ও গজকট-৬৭৯৩৫১৭) কন্টেইনারগুলোকে সংরক্ষিত করে রাখা হয়। এদিন দুপুরে এসব কন্টেইনার খুলে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দরে আসা জাহাজ ‘এমভি স্যানজোর্জিও’ স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স ওশান ট্রেড লিমিটেডের খুলনার সহকারী ম্যানেজার মেহেদি হাসান বলেন, আমরা শুধু ওই জাহাজে থাকা কন্টেইনারগুলো আমদানি করেছি, তবে কন্টেইনারের মধ্যে কি পণ্য ছিল তা আমরা জানতাম না’। এটা ওই কন্টেইনারে পণ্য আমদানিকারকরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মের্সাস তাজ ট্রেডার্সের মালিক সাব্বির হোসেন দাবি করেন, দেশে আসা পণ্য তিনি আমদানি করেননি, তিনি টেনিস বল আমদানির জন্য টাকা পাঠিয়েছেন। সাব্বির হোসেন আরও বলেন, এটা ভুল করে মালয়েশিয়ার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিউসাইন করপোরেশন পাঠিয়ে থাকতে পারে। কারণ ওই প্রতিষ্ঠান টেনিস বল বিক্রির পাশাপাশি পোস্তদানাও বিক্রি করে। অপর পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আয়শা ট্রেডার্সের মালিক আকবর হোসেনের সাথে চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্সের নেতা কবির হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পণ্য আমদানিকারদের বক্তব্য হাস্যকর। এটা পুরোটাই পরিকল্পিত। তারা মোংলা বন্দরের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এসব পণ্য আমদানি করেছেন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এদিকে মোংলা কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার শামসুল আরেফিন খান জানান, প্রাথমিকভাবে তাদের কাছে মনে হয়েছে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য বন্দর জেটি থেকে বের করে দিতে নিরাপত্তা কর্মীরা জড়িত থাকতে পারে, যা তদন্দে বেরিয়ে আসবে। প্রেস রিলিজ এদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোংলা কাস্টমস কমিশনারের পক্ষে সহকারী মাধব বিকাশ দেব রায় স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তীতে জানানো হয়, পণ্যের চালানে টেনিস বলের উল্লেখ ছিল। কিন্তু কায়িক পরীক্ষায় পোস্তদানা সদৃশ্য বস্তু পাওয়া যায়, যার অনুমানিক বাজার মূল্য আট কোটি টাকা। এ আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য। চোরাচালানের ক্ষেত্রে সমসাময়িক সময়ে এটি সর্ববৃহৎ আটকের ঘটনা’।
×