ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভিয়েতনামে আরও ১৫ বাংলাদেশীকে আটক

প্রকাশিত: ০০:১৮, ১৩ আগস্ট ২০২০

ভিয়েতনামে আরও ১৫ বাংলাদেশীকে আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভিয়েতনামে আটকাপড়া বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে যে মুহূর্তে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে- ঠিক তখন সেদেশে ১৫ জনকে আটক করেছে ভিয়েতনামের পুলিশ। বুধবার সকালে হোচিমিন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকের পর তাদেরকে একটি ক্যাম্পে নিয়ে যায় পুলিশ। ওই ক্যাম্প থেকেই কয়েকজন ঢাকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এ তথ্য। তাদের দেয়া তথ্যমতে- ওই ১৫ বাংলাদেশী ভিয়েতনামের ভুং তাও থেকে হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে রওনা করেন। ভুং তাও এলাকা থেকে হ্যানয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের দূরত্ব প্রায় এক হাজার ৬৭৭ কিলোমিটার। সেখানে যেতে ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। পথে রাতে হলে তারা হোচিমিন এলাকায় অবস্থান করেন। বুধবার সকালে ফের হ্যানয়ে যাওয়ার উদ্দেশে তারা বাসে ওঠার সময় পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায়। আটক বাংলাদেশীদের মধ্যে কয়েকজন গত কয়েকদিন ধরে দেশে ফিরে আসার জন্য ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তারা ভিয়েতনামে পৌঁছার পরই দালালরা তাদের পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। যে কাজের কথা বলে তাদের নেয়া হয় এবং যে পরিমাণ বেতন দেয়ার কথা ছিল, তার কোনটাই সঠিক ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে তারা দেশে ফিরে আসতে চান। আটক ১৫ বাংলাদেশীর মধ্যে ১৪ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, সায়েফ, শফিক, চাঁদ আলী, মোমিন, কাদির, ইসমাইল, আলী, নজরুল, মামুন, শহীদ, আনোয়ার, রাজু, অমিক ও সজিব। তারা জানিয়েছেন- বাসে ওঠার সময় পুলিশ তাদেরকে আটক করে। সকাল থেকে পুলিশের হেফাজতে থাকলেও কোন কিছু খেতে দেয়নি। পুলিশ তাদের কাছে পাসপোর্ট চেয়েছে। কিন্তু তা দিতে পরেরি কেউ। কারণ দালালরা আগেই পাসপোর্ট নিয়ে গেছে। উল্লেখ্য, মানব পাচারকারীদের প্রতারণার শিকার হয়ে ভিয়েতনামে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন কয়েক শ’ বাংলাদেশী। তাদেরকে ভাল বেতনে কাজ দেয়ার কথা বলে তাদের টুরিস্ট ভিসায় ভিয়েতনামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদেশে পৌঁছানোর পর তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট কেড়ে নেয় দালাল চক্র। এর আাগেও একাধিক বাংলাদেশী ভিয়েতনামে আটক হয়েছেন। গত ৩ জুলাই রাতে ভিয়েতনামে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে হাজির হন ২৭ কর্মী এবং দূতাবাসের কাছে তাদের চলমান সমস্যা ও পরিস্থিতি নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ৩ জুলাই ভিয়েতনাম থেকে ১১ বাংলাদেশী শূন্য হাতে দেশে ফেরত আসেন। জানা গেছে- আটক ১৫ বাংলাদেশীর মধ্যে কয়েকজন পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি এজেন্সির মাধ্যমে চাকরি নিয়ে ভিয়েতনামে গেছেন। সেদেশে যাওয়ার আগে তাদের বলা হয়েছিল যে- ভিয়েতনামে তাদেরকে মাসে ৫০০ ইউএস ডলার বেতন দেয়া হবে, থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কোম্পানি করবে। কিন্তু ভিয়েতনামে আসার পরই তারা বুঝতে পারেন যে, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিমানবন্দরে নামার পরই তাদের পাসপোর্ট নিয়ে নেয় সেদেশে থাকা প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এজেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় অল্প সময়ের জন্য কাজ করালেও কর্মীদেরকে কোন বেতন দেয়া হয় না। দালালরা বেতন নিয়ে যায়। বেতন চাইতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কেউ কেউ। তবে এই ১৫ জন আটকের তথ্য জানে না বাংলাদেশ দূতাবাস।
×