ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য মধ্যাহ্ন ভোজ

শীঘ্রই বর্জ্য থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে ॥ তাজুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ১৩ আগস্ট ২০২০

শীঘ্রই বর্জ্য থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে ॥ তাজুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার দেশে খুব শীঘ্রই বর্জ্য থেকে বিদ্যুত উৎপাদনে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি ) মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি। একই সঙ্গে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মন্ত্রী ও ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। বুধবার রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং এ কাজে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্ত্রী এ কথা বলেন। দেশে এই প্রথমবারের মতো পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুষ্ঠু ও সুন্দর কাজের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ডিএনসিসি মেয়রের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই, সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ। অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ হওয়া বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্য এবং অন্য শহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল ও গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী ও মেয়র পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সকল সিটি কর্পোরেশন এবং ছোট বড় শহরে এমনকি গ্রামগঞ্জ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলার পর এসব ময়লা আবর্জনা সংগ্রহ করে প্লান্টের মাধ্যমে পুড়িয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। উন্নত বিশ্বে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, দেশের সব ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করার জন্য প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে পশু-পাখির মৃতদেহসহ ময়লা আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মৃত পশু-পাখির দেহের অংশ ছড়িয়ে ও ছিটিয়ে থাকায় একদিকে যেমন এগুলো পচে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হয় অন্যদিকে মাটি, পানি ও বায়ুদূষণসহ সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য সচেতন নাগরিক হয়ে যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে পরিচ্ছন্ন নগরী তথা দেশ গড়তে হবে। তাজুল ইসলাম বলেন, পরিচ্ছন্নকর্মীরাও মানুষ, তাদের প্রতি আমাদের আন্তরিকতা, সম্মান এবং দায়িত্ব রয়েছে। তাদেরও উন্নত জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখা এবং স্বপ্নপূরণের অধিকার আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সবাই উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ পাবেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। সকল মানুষ দেশের নাগরিক। সকল মানুষ যাতে তাদের মৌলিক অধিকার পায় এই বিষয়টাকে বঙ্গবন্ধু আন্তরিকভাবে অনুধাবন করেছেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, জনতা, মেহনতি মানুষ সবাই মিলেমিশে ভাল থাকবে, সুখে থাকবে শান্তিতে থাকবে এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। পবিত্র ঈদ-উল-আজহায় কোরবানি পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ এবং খাবারের আয়োজন করায় উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, এটি খুবই ভাল এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ। যারা শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখে তাদের প্রতি সকলের দায়িত্ব রয়েছে। পরে, মোঃ তাজুল ইসলাম পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিজে খাবার পরিবেশন করেন এবং তাদের সঙ্গে খাবার গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, এটি একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান। এ ধরনের অনুষ্ঠান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ইতিপূর্বে হয়নি। আমরা মনে করি আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশক নিধন কর্মী এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও জীবনবাজি রেখে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই শহরকে পরিষ্কার করছেন। আজ আমরা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশক নিধন কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি খেটে খাওয়া মানুষদের সঙ্গে সব সময় থাকতে চাই। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আজকে এই আয়োজন করেছি।
×