ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাগজে কলমে স্বাস্থ্যবিধি!

প্রকাশিত: ২১:০৮, ১৩ আগস্ট ২০২০

কাগজে কলমে স্বাস্থ্যবিধি!

সর্বগ্রাসী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিনিয়তই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দৃশ্যমান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে গবেষক, বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞানীরা বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করার যে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছেন, সে মাত্রায় তা মান্য করার চিত্র প্রায়ই উপেক্ষিত। উপস্থিত বিপর্যয়কে সামলাতে সঙ্গত কারণেই তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার আনুষঙ্গিক বিধিকেও আমলে নিতে হয়েছে। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল- এমন চিরায়ত বাণী আমরা শিশু শিক্ষা থেকেই গ্রহণ করার পরামর্শ পেয়েছি। বর্তমানে করোনা সঙ্কটকালেও উত্তরণের প্রধান উপায় নির্দেশিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করার মধ্য দিয়েই। আক্রান্ত কিংবা নিরাময় হওয়ার চাইতেও যদি রোগটিকে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করতে না দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলোকে মানতে পারি, তা হলে সংক্রমণের সিংহভাগ আশঙ্কা কমে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রতিরোধমূলক কিছু স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কারোনাভাইরাস ভিন্ন মাত্রার সংক্রামক ব্যাধি। সুতরাং এর প্রতিরোধেও এসেছে অন্য রকম নিষেধাজ্ঞা। সামাজিক দূরত্ব থেকে ব্যক্তি বিচ্ছন্নতাকেও বিশেষ আমলে নেয়া হয়েছে। এতে মূল নির্ণায়কের ভূমিকায় কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে মাস্ককেই বিবেচনায় আনা হয়। ফলে সবার জন্য মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। তার পরেও জীবাণুনাশক হাত ধোয়ার জন্য স্যানিটাইজার দিয়ে হাতকে দূষণমুক্ত রাখার বিধিও সবাইকে মেনে চলার পরামর্শ এসেছে। যেহেতু করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সারা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে সেহেতু সে ব্যাধিটি যাতে নাগালের বাইরে থাকে তেমন সুরক্ষাকেও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মানার নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটাই দৃশ্যমান, এমন সঙ্কটকালেও মানুষ কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মকানুনকে তোয়াক্কাই করছে না। আইনী নির্দেশনা দিয়ে জেল-জরিমানার ভয় দেখিয়ে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা ক্ষীণ। যেখানে ব্যক্তির তার নিজের প্রয়োজনে স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে আমলে নেয়া সঙ্গত, সেখানে রাষ্ট্রীয় চাপানো বিধি কেন মানা হবে তা বলা মুশকিল। কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধকে জনগণের মাঝে গ্রহণযোগ্য করতে হরেক রকম নিয়ম-নির্দেশনা দিলেও সিংহভাগ মানুষ তা চূড়ান্তভাবে উপেক্ষা ও অবহেলা করেই যাচ্ছে। মাস্ক পরতে মানুষের অনীহা মেনে নেয়া কঠিন। সামাজিক দূরত্বকেও অনেকে চরম অবহেলা করছে, যা করোনা সংক্রমণকে আশঙ্কিত পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। আইনানুগ বিধিনিষেধ ও কঠোর নজরদারি আরও বাড়ানোর ওপর বিশিষ্টজনেরা অভিমত দিচ্ছেন। যখন সারাদেশে সাধারণ ছুটি কিংবা অবরুদ্ধতার জালে আটকানো ছিল সে পর্যন্ত কিছু কঠোর নিয়ম প্রদর্শন করা হলেও পরবর্তীতে তা শিথিল হতে সময় লাগেনি। এপ্রিল-মে মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিক কিছু শাস্তির ব্যবস্থা করলেও পারে তা আর দৃশ্যমান হয়নি। তেমন কঠিন নিয়মানুগ পর্ব আবারও চালু করে মোবাইল কোর্টে উপস্থিত বিচার সময়ের দাবি। তবে আইনী বিচার ছাড়াও ব্যক্তি মানুষের সচেতন দায়বদ্ধতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানারসংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরী।
×