ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিতার বদলে পুত্র চালান

রামুতে মিথ্যা মামলা সাজাতে গিয়ে বেসামাল পুলিশ

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ১২ আগস্ট ২০২০

রামুতে মিথ্যা মামলা সাজাতে গিয়ে বেসামাল পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ ব্যাংক সার্টিফিকেট মামলায় ঠিকাদার হাবিবুর রহমানকে না পেয়ে তার কলেজপড়–য়া পুত্রকে ধরে নিয়ে গেছে রামু থানার এসআই জয়নাল। ছেড়ে দেয়ার শর্তে এক লাখ টাকার স্থলে ৫০হাজার টাকা প্রদানে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯৫পিস ইয়াবা দিয়ে চালান করেছে ওই শিক্ষার্থীকে। স্থানীয়রা জানায়, পুলিশ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা ঘটনার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ বদ্ধপরিকর। এ অবস্থায় কিছু অসৎ কর্মকর্তার এসব অনৈতিক কারনে দুর্নাম হচ্ছে পুলিশের। কুতুবদিয়া থানা থেকে বদলী হয়ে সদ্য রামু থানায় যোগদান করেন এসআই জয়নাল। টাকার লোভে বুধবার ভোররাতে রামু চাকমারকুল ওমর আলী সওদাগর পাড়ার বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য আরেফা বেগমের বাড়িতে যান। সাদা পোষাকে অভিযান না চালানোর জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্বেও দারোগা জয়নালের নেতৃত্বে আসা একদল পুলিশের কারও পরনে সরকারী পোষাক ছিলনা বলে জানা গেছে। মুখে মাস্ক ও সাদা পোষাক পরিহিত একদল লোক বাড়ির গ্রিল ভাঙছে দেখে প্রথমে ডাকাত সন্দেহ হলেও পেছনে স্থানীয় চৌকিদার শামসুকে দেখে বুঝা গেছে তারা পুলিশের সদস্য। অভিযোগে জানা যায়, কক্সবাজার সরকারী কলেজে ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশিকুর রহমান রনিকে ধরে নিয়ে যাবার পর তার মা মহিলা মেম্বারের কাছে এক লাখ টাকায় ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে প্রস্তাব রাখেন এসআই জয়নাল। একথায় বিশ্বাস করে সাবেক মহিলা মেম্বার আরেফা বেগম ৫০হাজার টাকা তুলে দেন জয়নালের হাতে। শর্তমতে পুরো টাকা না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজ ছাত্র রনিকে ৯৫ পিস ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে আরেফা উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবরে দরখাস্ত করেছেন। গৃহকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে জয়নাল ও তার সহযোগিরা ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করছে দেখে বাড়ীর সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কলেজ ছাত্র রনির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজাতে গিয়ে বেসামাল হয়ে পড়েন এসআই জয়নাল। আমার ছেলেকে মাদকদ্রব্য ছাড়াই বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার সময় আশপাশের শত শত লোকজন দেখেছে। মামলার এজাহারে তার লুঙ্গির কোছা থেকে ইয়াবা উদ্ধারের কথা বলা হলেও কিন্তু কোর্টে চালান দেয়ার সময় তদন্তকারি কর্মকর্তা লিখেছেন, আসামির প্যান্টের ডান পকেটে মিলেছে ৯৫পিস ইয়াবা। ওই শিক্ষার্থীকে ঘর থেকে আটক করা হলেও কথিত ইয়াবা উদ্ধারের স্থান দেখানো হয়েছে কলঘর এলাকায়। এর আগে এসআই জয়নাল কুতুবদিয়া থানায় দায়িত্বপালন কালীন টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে বহু নিরীহ লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা টুকে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজ ছাত্র রনির কাছে ৯৫পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে জানিয়ে এসআই জয়নাল টাকা নেয়ার ঘটনা সত্য নয় বলে দাবী করেছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ এলাকাবাসী জড়িত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মিথ্যা মামলার শিকার কলেজ ছাত্রের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ তাদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করে বাড়ির সব মালামাল ভাংচুর করে জানিয়ে আরেফা বলেন, আধাঘন্টা ধরে ভাংচুরের কারণে তার ১০লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন হয়েছে।
×