ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল হতে পারে

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১২ আগস্ট ২০২০

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল হতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবারের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল হতে পারে। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছরের দুই সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করার একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই প্রাথমিক ও এবতেদায়ী সমাপনী এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা এবার বন্ধ থাকবে। তবে ইতোমধ্যেই বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তা ঠিক নয় জানিয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, পরীক্ষা বাতিলের এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন বলেছেন, জেএসসি পরীক্ষা বাতিলের কোন সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এখনও রয়েছে। তবে পরীক্ষা হবে কি না সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেছেন, মুখ্য সচিবের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের একটি সভা হয়েছে, সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, ওই সভার প্রেক্ষিতে আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। আমরা সারসংক্ষেপ তৈরি করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সারসংক্ষেপ তৈরি করছে। আগামী সপ্তাহে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে এবার আর এই পরীক্ষা হবে না। তবে পরীক্ষা ছাড়া কিভাবে শ্রেণী পরিবর্তন হবে কিংবা কিভাবে মূল্যায়ন হবে সেই প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেছেন, অনেকগুলো বিকল্প সামনে রেখে তারা কাজ করছেন। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করবে কখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে তার ওপর। বিশেষজ্ঞরা বিকল্প অনেকগুলো অপশন দিয়েছেন, তার মধ্যে এটা হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেয়া হবে না। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই বলছেন, দুই সমাপনী পরীক্ষা না হলেও স্কুল খোলার পর পঞ্চম ও অষ্টমের বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা আছে। ওই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই এ দুই শ্রেণীতে বৃত্তি দেয়া হবে। এদিকে জানা গেছে, করোনার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হলে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা ছাড়াই পরের ক্লাসে উত্তীর্ণ করার একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সীমিত আকারে হলেও চলতি শিক্ষাবর্ষের মৌলিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে পরের শিক্ষাবর্ষে। এ বিষয়ে নিজেদের সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট-বেডু। ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নেয়া সম্ভব হচ্ছে না এইচএসসি পরীক্ষাও। অফিস আদালত খুলে দেয়া হলেও এখনও অনিশ্চিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়টি। এ অবস্থায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩৯ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সুপরিশগুলোর মধ্যে রয়েছে। যার মধ্যে আছে- সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে সীমিত আকারে হবে প্রতি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা। নবেম্বরে স্কুল খুললে নেয়া হবে প্রতি বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা। ডিসেম্বরেও স্কুল খোলা না হলে কোন পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী শ্রেণীতে চলে যাবেন শিক্ষার্থীরা। তবে আগের বছরের মৌলিক পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হবে পরের বছর। বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের উর্ধতন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা বলেছি যে পরবর্তী ক্লাসে শিফট করে দেয়া। যদি প্রমোশন দেয়া হয় কোন পরীক্ষা ছাড়া আগের ক্লাসের মৌলিক অধ্যায় পরবর্তী ক্লাসে পড়ানো হবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষের দিকে। এ অবস্থায় খুব দ্রুত নিতে হবে সিদ্ধান্ত। সুপারিশগুলোকে যাচাই-বাছাই করে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, কোন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে কি হবে তার একটা ড্রাফট আমাদের দিয়েছে। সেই মতামতগুলোকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
×