ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এলো রুশ ভ্যাকসিন

প্রকাশিত: ২২:৫১, ১২ আগস্ট ২০২০

এলো রুশ ভ্যাকসিন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যেই সুখবর দিলো রাশিয়া। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে টিকা আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এদিকে ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুয়ায়ী বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭ লাখ ৪১ হাজার ৮২৩ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন দুই কোটি ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৭১০ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন এক কোটি ৩২ লাখ ৮৩ হাজার ৬৬৫ জন। খবর সিএনএন, বিবিসি, আরটি, রয়টার্স, আলজাজিরা ও এনডিটিভির। বিশ্বে নোভেল করোনাভাইরাসের প্রথম ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিয়েছে জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, ইতোমধ্যে তার মেয়ে ক্যাটরিনা তিখোনোভা এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়। পুতিন বলেছেন, মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত পেয়েছে। কোভিড-১৯ এর এই ভ্যাকসিনের গণহারে উৎপাদন শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তার নিজের মেয়ে ইতোমধ্যে রুশ বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনার এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। পুতিন বলেন, ভ্যাকসিন নেয়ার পর তার মেয়ের শরীরের তাপমাত্রা হালকা বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু দ্রুতই তা কমে যায়। ‘আজকের সকালে বিশ্বে নোভেল করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা নিবন্ধন করা হলো। আমার এক মেয়ে ভ্যাকসিনটি নিয়েছে। এদিক থেকে তিনি ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ভ্যাকসিন নেয়ার পর তার শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ হয়েছিল, পরদিন ৩৭। এতটুকুই।’ এদিকে রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ট্যাটিয়ানা গোলিকোভা বলেন, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে প্রথম এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। তবে সাধারণ জনগণের জন্য ভ্যাকসিনটি সহজলভ্য হবে আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে। বিশ্বে প্রথম হিসেবে রাশিয়ার অনুমোদিত করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। তবে মানবদেহে পরীক্ষার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় অনেকেই রাশিয়ার বৈজ্ঞানিক সক্ষমতারও প্রশংসা করেছেন। ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা জানতে শেষ ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনও চলমান। তার আগেই রাশিয়ার জনগণের মাঝে ভ্যাকসিনটি গণহারে প্রয়োগের অনুমতি পেল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত সরকারী এক বৈঠকে পুতিন বলেন, মস্কোর গ্যামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরিকৃত ভ্যাকসিনটি নিরাপদ। আমি জানি, এটা বেশ কার্যকরভাবেই কাজ করে এবং শক্তিশালী ইমিউনিটি গড়ে তোলে। আমি আবারও বলছি- প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা উতড়ে গেছে এই ভ্যাকসিন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। বিশ্বজুড়ে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষরা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় সুরক্ষার বিষয়ে কোন ধরনের আপোস করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভুটানে লকডাউন ঘোষণা ॥ প্রথমবারের মতো লকডাউন ঘোষণা করেছে ভুটান। মঙ্গলবার দেশটিতে নতুন করে এক বাসিন্দার দেহে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পরই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি ওই নারী অন্যদেশ থেকে ভুটানে ফিরেছেন। তিনি দেশে ফেরার পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই তার দেহে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়। গত কয়েকদিনে ওই নারী রাজধানী থিম্পুতে অনেক মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে জানা গেছে। ২৭ বছর বয়সী ওই নারী কুয়েত সফর শেষে দেশে ফেরার পরই কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। নতুন করে ওই নারী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় হিমালয়ের দেশ ভুটানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১১৩ জন। দেশটিতে এখনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভুটানেই সংক্রমণ সবচেয়ে কম। ভুটানে গত মে মাসে প্রথমবার একজনের দেহে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। ৭৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি ১০ দিন ভারতে থাকার পর ভুটান সফরে যান। এরপরেই তার দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ভুটানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১১০। এর মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছে। করোনার টেস্ট সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, করোনাভাইরাসের টেস্টিংয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ধারে-কাছে নেই কোন দেশ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের দেহে করোনার পরীক্ষা করেছি। আর কোন দেশ আমাদের ধারে-কাছেও নেই। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ লাখ ৫১ হাজার ৪৪৬। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৯২ জন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৩৪ জন। দেশটিতে বর্তমানে করোনার এ্যাক্টিভ কেস ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ৩২০। অপরদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ১৭ হাজার ৫৮৯ জন। ভারতে আক্রান্ত ২২ লাখ ছাড়াল ॥ কয়েকদিনের তুলনায় ভারতে করোনায় নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যা কমেছে। গত চারদিনে প্রতিদিন সংক্রমণ হচ্ছিল ৬০ হাজারেরও বেশি। সেই সংখ্যাটা মঙ্গলবার কমে হয়েছে ৫৩ হাজার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫৩ হাজার ৬০১ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সংক্রমণ কমলেও, একদিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের উপরেই রইল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২২ লাখ ৬৮ হাজার ৬৭৫ জন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৮৭১ জনের। এ নিয়ে মোট ৪৫ হাজার ২৫৭ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন ১৮ হাজার ৫০ জন।
×