ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওসি প্রদীপসহ চার আসামিকে রিমান্ডে চায় র‌্যাব

প্রকাশিত: ২২:৫৯, ১১ আগস্ট ২০২০

ওসি প্রদীপসহ চার আসামিকে রিমান্ডে চায় র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিনহা হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে ওসি প্রদীপসহ ৪ আসামিকে রিমান্ডে নিতে চায় র‌্যাব। আদালত সিনহা হত্যা সংক্রান্ত সব কয়টা মামলার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে র‌্যাবকে। টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বোনের দায়ের করা হত্যা মামলায় এ চার আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট এই আদেশের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এ ৪ আসামিকে কারাগারের জেলগেটে দুই দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছে তদন্তকারী র‌্যাব কর্মকর্তা। এ বিষয়ে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানিয়েছেন, যে ৪ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে নতুন করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার দাশ জানান, রিমান্ডের আবেদনটি জমা দেয়া হয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট আবেদনটির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, এ মামলার ৩ আসামিকে ৭ দিন ও ৪ আসামিকে ২ দিন করে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া আদালতের দেয়া প্রথম রায়ে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিমান্ড সংক্রান্ত কাজ শেষ করার যে নির্দেশনা দিয়েছিল সে সময়সীমা উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে আর কোন সময়সীমা রইলনা। র‌্যাব তদন্তকারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশনা প্রদান করে। এক প্রশ্নের জবাবে আশিক বিল্লাহ বলেন, শিফাত ও শ্রিপা দেবনাথ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। মামলার শুনানিতে র‌্যাবের পক্ষে প্রত্যেক আসামির ১০দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি ৪ জনকে ২ দিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। বাকি ২ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ৪ জনকে কারাফটকে দুদিন করে জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন করে র‌্যাব। তবে ওসি প্রদীপ, ইন্সপেক্টর লিয়াকত এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে এখনও র‌্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়নি। তাদের র‌্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কথা রয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের দায়ের করা রামু থানার মামলায় সিনহার সহযোগী স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা রানী দেবনাথ রবিবার জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আর টেকনাফ থানায় দায়ের করা দুটি মামলায় মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত জামিনে কারামুক্ত হন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ সিফাতের জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে সিফাতের মামলা দুটি বিবাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তদন্তের ভার র‌্যাবকে দিয়েছে।
×