ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুরের জাজিরায় তীব্র নদী ভাঙ্গন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ১০ আগস্ট ২০২০

শরীয়তপুরের জাজিরায় তীব্র নদী ভাঙ্গন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর ॥ বন্যার পানি কমার সাথে সাথে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবার পৈলান মাদবরকান্দি গ্রামে তীব্র নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত ৩দিনে এই গ্রামের অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে ওই গ্রামের ইদ্রিস মাদবর, সালাম মাদবর, ধলু মাদবর, হাতেম মাদবর, জলিল বেপারী, মাহাবুব মাদবর, দবির হাওলাদার, মজিবর হাওলাদার, রহিমা বেগম, রতন মাদবর, আজিমদ্দিন চোকদার, ফারুক মুন্সী, হারুন বেপারী, খলিল শেখসহ অর্ধশত পরিবার এখন রাস্তায় অথবা অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। ভাঙ্গন আতংকে বহু পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের শরীয়তপুর অংশে নাওডোবা কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাধের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে প্রায় ৭০ মিটার জায়গার বিভিন্ন অংশে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এই বেড়ি বাধের ভিতরে ও আশেপাশে বসবাসকারী লোকজন। ভাঙ্গন স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম আহসান হাবীব। জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রথম কাজ হিসেবে ২০১৩ সালের ২ মার্চ ৯৬কোটি টাকা ব্যয়ে নাওডোবা কনষ্ট্রাকশন ইয়ার্ডের প্রতিরক্ষামূলক বাধ নির্মাণ করা হয়। মাত্র ৭ বছরের মাথায় এসে বাধের জিরো পয়েন্ট এলাকার বাধের ভাঙন আতংক ছড়িয়ে পড়েছে পদ্মা পাড়ে। বাধের পূর্ব পাশের জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে ৭০ মিটার জায়গার বিভিণœ অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং কোন কোন স্থানে পদ্মার ভাঙ্গনে বাধের নীচের অংশ থেকে ব্লক সরে গিয়েছে। তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে বাধের জিরো পয়েন্টের আশেপাশের এলাকায়। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বাধের আশপাশে থাকা অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি। বাধের জিরো পয়েন্ট এলাকার পূর্ব দিকে ৫০ মিটার এবং মাঝিকান্দি এলাকার আরও ২০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতংকে বসতবাড়ি আর স্থাপনা নিয়ে নিরাপদ দুরত্বে সরে যাচ্ছে নদী পাড়ের মানুষ। বাধটি ধ্বসে গেলে পদ্মা সেতুসহ আশপাশে থাকা সব প্রকল্প ঝুঁকিতে পড়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা। বেড়ি বাধ নির্মাণে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগও স্থানীয়দের। ভাঙ্গন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন তারা। মজবুদ ও টেকসই বাধ নির্মাণ না করা হলে বেড়িবাধ বিলীন হওয়ার পাশপাশি নদী ভাঙ্গনের হমকিতে থাকবে পদ্মা সেতুও- এমনটি অভিমত স্থানীয়দের। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, বেড়ি বাধটি পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা জমির বাইরে বিধায় এ বিষয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কোন দায়ি-দায়িত্ব নেই। তারা পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণকৃত এলাকায় শতভাগ নিরাপদে আছেন বলেও জানান তিনি। শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু বলেন, বাধটি সংস্কারের পাশপাশি পদ্মা সেতু প্রকল্পের তীর সংরক্ষণ বাধ থেকে নড়িয়ার সুরেশ^র পর্যন্ত বাধ নির্মাণ শেষে রিভার ড্রাইভ তৈরি কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ফাটল ধরা এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
×