ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জ্বর- রিপোর্ট করেননি জীবন, টেস্টের মধ্যে কোন কারিগরি ত্রুটি থাকতে পারে বলে ধারণা আইইডিসিআরের, এবার দুটি আলাদা ও ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করানো হবে

কাল আবার করোনা পরীক্ষা ফুটবলারদের

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ৯ আগস্ট ২০২০

কাল আবার করোনা পরীক্ষা ফুটবলারদের

রুমেল খান ॥ ফুটবলারদের করোনা টেস্টের ফল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ)। এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতায় মহাবিরক্ত বাফুফে। যদিও রিপোর্ট পাবার আগে ফুটবলার ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্ব নিয়ে আছে প্রশ্ন। শনিবার আরও ছয় ফুটবলারের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। কাল আবারও সব ফুটবলারের (৩১ জন) কোভিড নাইনটিন টেস্ট করানো হবে। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। তবে বিশ্বাস কিংবা তর্ক কোনটাই সমাধান দেয় না জাতীয় ফুটবলারদের করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে। প্রথমদিনের তথ্যÑ ব্যক্তিগত উদ্যোগে টেস্ট করে করোনা ধরা পড়ে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের। এরপরের দুদিনে বাকি ২৩ ফুটবলারের ১৭ জনই হন করোনা পজিটিভ। যে সংখ্যাটা তিনদিন আগে ছিল বিশ্বনাথসহ মাত্র চার, দুদিন আগে ১০, আর শুক্রবার যোগ হয় আরও ৭ ফুটবলার ও এক সহকারী কোচ। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে ক্যাম্পের অবশিষ্ট সাতজনও যে কখন করোনায় ‘পজিটিভ’ হবেন তারই যেন ক্ষণগণনা চলছে। ঘটনা ঘটেছে তিন রকম। ফুটবলাররা নিজ উদ্যোগে করোনা টেস্ট করিয়েছেন। তাতে নেগেটিভ ফল পেয়ে যোগ দিয়েছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। বিএসএমএমইউ বলছে সেই পরীক্ষা যথার্থ ছিল না। আবার বাফুফের উদ্যোগে বিএসএমএমইউ-এর মাধ্যমে করোনা টেস্ট করান ২৩ ফুটবলার। দফায় দফায় সেই পরীক্ষায় আক্রান্ত আর উদ্বেগ বেড়েছে বাফুফের। কারণ বেশিরভাগই আক্রান্ত এই মরণঘাতী ভাইরাসে। এই টেস্টকেই সবচেয়ে ভাল পরীক্ষা বা সর্বোচ্চ মানদ- বলে দাবি করেছে বিএসএমএমইউ। এই পরিস্থিতিতে শনিবার টেস্ট করাতে আসা ছয় ফুটবলারকে আর বিএসএমএমইতে টেস্ট করাতে নিয়ে যাবার সাহস পায়নি বাফুফে। তাদের রাখা হয়েছে বাফুফে ভবনের চারতলায় (যেখানে মহিলা ফুটবলাররা থাকতেন, এখন তারা নিজেদের গ্রামের বাড়িতে)। এদিকে জ্বর থাকায় ক্যাম্পে রিপোর্ট করেননি ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন। ফুটবলাররা দাবি করছেন তারা মানসিকভাবে কিছুটা চাপে থাকলেও শারীরিকভাবে একদম সুস্থ আছেন। করোনার বিন্দু-বিসর্গও তাদের মধ্যে নেই। তিনদিনের মধ্যে ১০ ফুটবলারের করোনা টেস্টের ফল পজিটিভ থেকে হয়েছে ‘নেগেটিভ’। ২৩ ফুটবলারের মধ্যে ১০ জনের ফলাফল বদলের ঘটনা অবাক করেছে আইইডিসিআরকে। টেস্টের মধ্যে কোন কারিগরি ত্রুটি থাকতে পারে বলে ধারণা আইইডিসিআরের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান তাসমিনা শিরিনের। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘প্রথমদিন বিএসএমএমইউ কৃর্তপক্ষ আমাদের জানান তিন ফুটবলার করোনায় আক্রান্ত। পরবর্তীতে আবারও তারা বাফুফেকে ফোন করে জানায় তাদের কিছু কমিউনিকেশন মিসটেকের কারণে মোট ১১ জনের মধ্যে ১০ জনেরই পজিটিভ রেজাল্ট এসেছে। ওই ১০ ফুটবলারকে আমরা তখনি আইসোলেশনে পাঠাই।’ এদিকে বিএসএমএমইউ-এর সহযোগী অধ্যাপক আলী ইমরান স্বীকার করেছেন রিপোর্টের কোন হেরফের হয়নি। তবে টেস্টের কোন টেকনিক্যাল সমস্যা থাকতে পারে। আমাদের সবসময় চেষ্টা থাকে পজিটিভ ফলাফলগুলো তাড়াতাড়ি দেয়ার। প্রথমে যে কয়েকজনের পরীক্ষা করেছিলাম প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে পরের কয়েকজনের রিপোর্টগুলো অন্য জায়গায় চলে যায়। যে কারণে তাদের নেগেটিভ ধরে নিয়েই সারা রিসোর্টে পাঠানো হয়। পরে রাতে যখন ওই ৭ জনের ফলাফল পজিটিভ হাতে পাই।’ গত দু’দিন ধরে ফুটবলাররা ওখানে (গাজীপুরে) অনুশীলন করেছে। তাহলে কি জাতীয় দলের পুরো ক্যাম্পই করোনা আক্রান্ত হয়ে গেছে সারা রিসোর্টে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘সতর্কতার বিষয়ে আমরা কখনও ছাড় দেইনি। নেগেটিভ হবার মানেই উন্মুক্তভাবে চলা যাবে সেটা বলিনি। দূরত্ব রক্ষার ব্যাপারটা প্রথম থেকেই ছিল। ক্যাম্প সংক্রমিত হয়েছে একবারে বলা যাচ্ছে না।’
×