ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমতলীতে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৮ আগস্ট ২০২০

আমতলীতে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা) ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলায় সরকার নির্ধারিত মুল্যে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে না। সরকার নির্ধারিত ৬’শ টাকার গ্যাসের সিলিন্ডার আমতলীতে বিক্রি হচ্ছে ৮’শ ৫০ টাকায়। অগ্নি নির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া লাইব্রেরী, চায়ের দোকান, কাপরের দোকান, মুদিমনোন, ক্রোকারিজ ও ইলেকট্রোনিক্স দোকানসহ গ্রামের যত্রতত্র স্থানে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস। এতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনের ঝুঁকিতে রয়েছে আমতলী। এতে যে কোন সময় আমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিউৎপাদের সম্ভবনা রয়েছে। দ্রুত যত্রতত্র স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা। শনিবার আমতলী উপজেলা শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখাগেছে, সরকার নির্ধারিত মুল্যে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে না। আমতলীর দোকানগুলোতে লাফস, জি-গ্যাস, ফ্রেস, টোটাল, নাভানা, জেএমআই, সেনা কল্যাণ, বেক্সিমকো, ওমেরা, ওরিয়ন ও বিএম কোম্পানীর গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। ওই গ্যাসের সিলিন্ডার খুচরা বিক্রেতারা ৮’শ থেকে ৮’শ ৫০ টাকায় বিক্রি করছে। বেশী দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ডিলারদের কাছ থেকে বেশী দামে ক্রয় করি আবার বেশী দামে বিক্রি করছি। সরকার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম কমালেও ডিলাররা দাম কমাচ্ছে না। তাতে আমাদের দোষ কোথায়? এদিকে ডিলাররা বলেন, কোম্পানীর কাছ থেকে বেশী দামে ক্রয় করি আবার বেশী দামে বিক্রি করছি। সরকার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম কমালেও কোম্পানীতো কমাচ্ছে না। খোজ নিয়ে জানাগেছে, আমতলীতে বসুন্ধরা কোম্পানীর গ্যাস সিলিন্ডারের ডিলার মোঃ মহিউদ্দিন, লাফ্স জি-গ্যাস, ফ্রেস ও নাভানা কোম্পানীর ডিলার আনিচুর রহমান বাচ্চু, সেনা কল্যাণ ও বেক্সিমকো কোম্পানীর ডিলার মোঃ রেজাউল কবির ও টোটাল ও জেএম আই কোম্পানীর ডিলার জব্বার সিকদার। এ চারজন ডিলার ছাড়াও অগ্নি নির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া উপজেলায় দু’শতাধিক বিভিন্ন দোকানে গ্যাস ডিলিন্ডার বিক্রি করছে। ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছা মাফিক গ্যাস বিক্রি করছে। সরকারী মুল্যের সাথে কোন সমন্বয় নেই। গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন গ্যাস সিলিন্ডারের মুল্য তালিকা নির্ধারত করে দেন। ওই তালিকায় দেয়া আছে ১২.৫ কেজির প্রতি গ্যাস সিলিন্ডার ৬’শ টাকা মুল্যে বিক্রি হবে। গ্যাস ক্রেতা মোঃ মাঈনুল ইসলাম রাজু বলেন, টোটাল কোম্পানীর গ্যাস ৮’শ টাকায় ক্রয় করেছি। তিনি আরো বলেন, সরকার গ্যাস সিলিন্ডারের দাম কমালেও আমতলীর গ্যাস বিক্রেতারা দাম কমাচ্ছেন না। খুচরা বিক্রেতা মোঃ কবির গাজী বলেন, নাভানা, ফ্রেস, লাফস ও টোটাল গ্যাসের সিলিন্ডার ৮’শ এবং বেক্সিমকো গ্যাসের সিলিন্ডার ৮’শ ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। তিনি আরো বলেন, বেশী দামে ডিলারদের কাছ থেকে ক্রয় করি আবার বেশী দামে বিক্রি করছি। ডিলার আনিচুর রহমান বাচ্চু বলেন, লাফস, জিগ্যাস, ফ্রেস ও নাভানার সিলিন্ডার ৭’শ টাকায় বিক্রি করছি। গ্যাসের সিলিন্ডার বেশী দামে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, কোম্পানীর কাছ থেকে বেশী দামে ক্রয় করি আমরাও বেশী দামে বিক্রি করছি। তিনি আরো বলেন, অগ্নি নির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া যত্রতত্র স্থানে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে। ডিলার রেজাউল কবির বলেন, সেনা কল্যাণ ৭’শ এবং বেক্সিমকো ৭’শ ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। কোম্পানীর কাছ থেকে বেশী দামে ক্রয় করি বলেই বেশী দামে বিক্রি করতে হয়। আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ তামিম হাওলাদার বলেন, গ্যাসের ডিলারদের অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স দেয়া আছে। কিন্তু লাইব্রেরী, চায়ের দোকান, কাপড়ের দোকান, মুহিমনোহরদি ও ক্রোকারিজের দোকানে গ্যাস বিক্রির জন্য কোন অগ্নি নির্বাপক লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। এ সকল দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা বে-আইনি এবং ঝুকিপুর্ণ। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, যত্রতত্র স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা যাবে না। অবৈধভাবে যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×