ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা মোকাবিলায় আদর্শ নিউজিল্যান্ড-ডেনমার্ক-উগান্ডা

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ৮ আগস্ট ২০২০

করোনা মোকাবিলায় আদর্শ নিউজিল্যান্ড-ডেনমার্ক-উগান্ডা

অনলাইন ডেস্ক ॥ করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় আদর্শ সরকারি প্রক্রিয়ার কথা যদি বলা হয়, তাহলে সবার ওপরে আসছে তিনটি দেশ। করোনা মোকাবিলায় আদর্শ প্রক্রিয়ার অনন্য উদাহারণ তৈরি করেছে নিউজিল্যান্ডের কোভিড-১৯ পরীক্ষা নীতি, ডেনমার্কের স্কুল নীতি এবং উগান্ডার যোগাযোগ কৌশল। এই তিন দেশের করোনা মোকাবিলার সফল প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন একটি গবেষণা হয়েছে। বিশ্বে নতুন এই ভাইরাস দমনে তিন দেশের কৌশলকে আদর্শ বলছেন বিশেষজ্ঞরা; যা অন্যান্য দেশকে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে পারে। বিভিন্ন দেশ বৈশ্বিক করোনা মহামারি কীভাবে মোকাবিলা করেছে সেবিষয়ে এই গবেষণা করেছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সাবেক উপদেষ্টা মাইকেল বার্বার এবং মালেশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সাবেক উপদেষ্টা ইদ্রিস জালা। সবচেয়ে সফলদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে করোনা মোকাবিলায় অন্যরা যাতে প্রচেষ্টা চালাতে পারে সেলক্ষ্যে এই গবেষণা করেছেন তারা। উদাহরণগুলোর মধ্যে তারা বেছে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাপক পরিসরের পরীক্ষা পদ্ধতিকে। দেশটি একজন করোনা রোগী নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৭ হাজারের বেশি মানুষকে পরীক্ষা করেছে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার কন্টাক্ট ট্রেসিংকেও অনন্য বলছেন গবেষকরা। এই দেশটি মানুষের গতিবিধির ওপর নজরদারি করেছে সিকিউরিটি ক্যামেরা এবং ক্রেডিট কার্ডের অর্থ লেনদেনের তথ্যের মাধ্যমে। অত্যন্ত দুর্বল ইন্টারনেট ব্যবস্থার দেশ উগান্ডা করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে রেডিওতে কল-ইন শো’র মতো উদ্যোগ নিয়েছিল; যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। করোনা মহামারিতে সফলভাবে স্কুল পুনরায় খুলেছে ডেনমার্ক। তবে ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছিল সেই সময়ের তুলনায় করোনা মহামারিতে দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় ব্যবস্থা খুবই নাজুক দেখছেন বলে মন্তব্য করেছেন গবেষকরা। ওই সময় ব্রিটেনের গর্ডন ব্রাউনসহ বিশ্বনেতারা সঙ্কট একযোগে কাটিয়ে উঠতে পরস্পরকে সহায়তা করেছিলেন। হোমওয়ার্ক অ্যাসাইনমেন্ট এক সাক্ষাৎকারে বার্বার বলেছেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের সরকার একই সময়ে একই ধরনের হোমওয়ার্ক নির্ধারণ করে দিয়েছে। বৈশ্বিক শিক্ষার জন্য এটা এক ধরনের মহৎ সুযোগ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। যদিও আশ্চর্যজনকভাবে বর্তমানে সেসবের খুব কমই চলমান আছে— বলেন বার্বার। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন বিতরণ এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজকে কেন্দ্র করে বিশ্ব যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে প্রস্তুতি হিসেবে সেগুলো এখন থেকেই মোকাবিলা করা উচিত। এবং সব সমাধান সর্বত্র কাজ করে না। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার আক্রমণাত্মক করোনা কন্টাক্ট ট্রেসিং কর্মসূচির কথা বলেন বার্বার। তিনি বলেন, বিশ্বের বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশগুলোতে এই কর্মসূচি কাজ করবে না। বার্বার অস্ট্রেলিয়ার একটি সফল কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন। দেশটিতে করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য ব্যবহৃত হলেও তার অপব্যবহার হবে না বলে জনগণকে আশ্বস্ত করতে একটি গোপনীয়তা আইন পাস হয়েছে। এছাড়াও এ দুই গবেষক বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশে করোনাভাইরাস মহামারির কেমন এবং তা সামলে ওঠার ওপর ভিত্তি করে একটি র্যাংকিং তৈরির চেষ্টা করেছেন। করোনা থেকে পুনরুদ্ধার হওয়ার এই তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং থাইল্যান্ড। এছাড়া একেবারে তলানিতে আছে হন্ডুরাস এবং বাহামাস। সূত্র: ব্লুমবার্গ।
×