ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন শুরু আজ

প্রকাশিত: ২১:৩১, ৮ আগস্ট ২০২০

দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন শুরু আজ

মিথুন আশরাফ ॥ ঈদ-উল আজহার আগে প্রথম ধাপের ব্যক্তিগত অনুশীলন করেছেন মুশফিকুর রহিমরা। দেশের পাঁচ স্টেডিয়ামে ১৪ ক্রিকেটার অনুশীলন করেছেন। এবার সেই সংখ্যা বাড়ছে। ১৩ ক্রিকেটার আরও বাড়ছে। মোট ২৭ ক্রিকেটার অনুশীলন করবেন। মুশফিকদের সঙ্গে এবার দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলনে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুমিনুল হক, সৌম্য সরকাররাও যোগ দিচ্ছেন। আজ শনিবার সেই দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলনের সূচী দিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রথমধাপের সূচী অনুযায়ী ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের পর রাজশাহীর বিভাগীয় স্টেডিয়ামেও ক্রিকেটারদের অনুশীলন হয়েছে। মিরপুরে ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, এনামুল হক বিজয়, পেসার শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান রানা, চট্টগ্রামে স্পিনার নাঈম হাসান, খুলনায় স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান এবং মেহেদী হাসান, সিলেটের স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার খালেদ আহমেদ, রাজশাহীতে ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম ধাপে অনুশীলন করেছেন। এবার প্রথমধাপের ক্রিকেটাররা তো থাকছেনই, এরসঙ্গে মিরপুর স্টেডিয়ামে টি২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম, সাব্বির রহমান রুম্মন, পেসার মোহাম্মদ আল-আমিন হোসেন, স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও তাইজুল ইসলাম অনুশীলন করবেন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এবার ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী রাব্বি ও ইরফান শুকুর যোগ দিচ্ছেন। সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পেসার আবু জায়েদ রাহী ও এবাদত হোসেন অনুশীলন করবেন। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে নতুন কেউ যোগ হননি। রাজশাহীর বিভাগীয় স্টেডিয়ামে স্পিনার সানজামুল ইসলাম দ্বিতীয় ধাপে অনুশীলন করবেন। মুশফিকের অনুশীলন দিয়ে আজ সকাল নয়টা থেকে অনুশীলন শুরু হবে। চলবে বেলা সাড়ে চারটা পর্যন্ত। প্রথম ধাপের তো ব্যাটসম্যানরা ইনডোরে ব্যাটিং এবং মূল মাঠে রানিং করতে পারবেন। একাডেমি মাঠের জিমনেশিয়ামে জিম করবেন। বোলাররা একাডেমি মাঠে রানিং ও বোলিং করবেন। সঙ্গে জিম তো থাকছেই। অবশ্য এখনই বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মুস্তাফিজুর রহমান অনুশীলনে যোগ দিচ্ছেন না। মুস্তাফিজ এখনও সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় ফেরেননি। ঢাকায় ফিরতেই অনুশীলনে যোগ দেবেন মুস্তাফিজ। তামিমের আরও কিছুদিন দেরি হবে। তিনি পেটের ব্যথার চিকিৎসা করাতে গত ২৫ জুলাই লন্ডন গিয়েছিলেন। সেখানে কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে দেশে ফিরেছেন ঈদের দিন, ১ আগস্ট সকালে। বিদেশ থেকে ফেরায় তামিমকে ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এরমধ্যে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ আসলে পরে তিনি অনুশীলনে ফিরতে পারেন। যদি এরমধ্যে আর লন্ডনে না যাওয়া লাগে। ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু হলেও এখন দলগত অনুশীলনের জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবে বিসিবি। অক্টোবরের শেষদিকে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে নবেম্বরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে পারে বাংলাদেশ। তখন জাতীয় দলের হয়ে সাকিব আল হাসানকেও দেখা যেতে পারে। ২৯ অক্টোবর সাকিবের এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কেটে গেলেই দলের হয়ে খেলতে নামতে পারবেন সাকিব। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা যদি নবেম্বরে শুরু হয় তাহলে সাকিব দলে থাকতে পারেন। এর আগে হলে আর পারবেন না। তবে এখনই তিনি দেশে অনুশীলনে নামছেন না। সাকিবের ইংল্যান্ডে ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করার কথা রয়েছে। এই মাসেই তা শুরু করার কথা আছে। বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী অনুশীলন নিয়ে বলেছেন, ‘দ্বিতীয় দফার অনুশীলন শুরু হচ্ছে। গত মাসে যেভাবে সেশনগুলো হয়েছে ঠিক ওভাবেই অনুশীলন হবে। তবে এবার অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়বে। সেটআপটি প্রথমপর্বের মতোই হবে। তবে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সাপোর্ট স্টাফ বাড়াতে হবে এবং ব্যবস্থাগুলো আরও কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।’ ঈদের ছুটি শেষে ক্রিকেটাররা আজ দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলন শুরু করবেন। তবে এরআগেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ঠিকই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন। বুধবার সাড়ে চার মাস পর রিয়াদ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফিরেছেন। ফিরেই রোমাঞ্চিত তিনি। গত ১৬ মার্চ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচে গাজী ক্রিকেটার্সের হয়ে খেলেন তিনি। করোনার কারণে এক রাউন্ড হয়েই আর লীগের খেলা হয়নি। এরপর থেকেই ঘরবন্দী হয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। গত ১৯ জুলাই থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত ক্রিকেটাররা ঘর থেকে বের হয়ে স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেন। এখন ক্রিকেটাররা বিসিবির দেয়া সূচী অনুযায়ী ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করলেও দ্রুতই দলীয় অনুশীলনের চেষ্টা করবে বিসিবি। তবে তা এই মাসে হচ্ছে না। তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নবেম্বরে সিরিজ খেলার সূচী নিশ্চিত হলে সেপ্টেম্বরে হয়তো দলীয় অনুশীলনের ব্যবস্থা হতে পারে। এর আগে হলে আগেই শুরু হবে। দলীয় অনুশীলন শুরু করার ক্ষেত্রে অনেক হিসেব করতে হচ্ছে বিসিবিকে। চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী যেমন বলেছেন, ‘যদি আমরা দলীয় অনুশীলন সেশন শুরু করতে চাই তাহলে আমাদের একেবারে আলাদা পরিকল্পনা ও সেট-আপ নিয়ে এগোতে হবে। আমাদের একটি বায়ো-বাবল তৈরি করতে হবে এবং অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্টসহ স্কোয়াডকে একটি হোটেলে আইসোলেশনে রাখতে হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সম্ভাব্য শ্রীলঙ্কা সফরকে মাথায় রেখে এখনই এমন কিছু চালু করে দেয়া মানে ক্রিকেটারদের প্রায় তিন মাস বাসা থেকে দূরে রাখতে হবে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিলে এটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’ এইসব বিবেচনায় সহসাই যে ক্রিকেটারদের দলীয় অনুশীলন শুরু হচ্ছে না। তাও বোঝা যাচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপের অনুশীলনে যে ক্রিকেটারদের সংখ্যা আরও বেড়েছে তা আশাবাদী হওয়ার মতো বিষয়ই হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
×